ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় ২২৯ জন নিহত

ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে গত বছর ২০২২ সালে ১৩৩টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর এতে ২২৯ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন ১৮৬ জন। এর মধ্যে ৪৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৭৮ জন। ৫৪ জন অটোরিকশা যাত্রী এবং ৪৮ জন পথচারী এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কটি যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলায় বঙ্গবন্ধু সেতু গোলচত্বরে ১টি দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত ও ১৭ জন আহত, ভূঞাপুরে ৫টি দুর্ঘটনায় ৯জন নিহত ও ৮ জন আহত, কালিহাতীতে ২৭টি দুর্ঘটনায় ৪২ জন নিহত, ৭৯ জন আহত, রাবনা বাইপাসে ৪টি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৬ জন আহত, মির্জাপুরে ১৫টি দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হয়েছে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার পরেও দুর্ঘটনা ও হতাহত কমছে না। এর কারণ মহাসড়কে দ্রুতগতির ভারী যানবাহনের পাশাপাশি হালকা ও স্বল্পগতির অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, প্যাডেল রিকশা ইত্যাদি চলাচল করছে। এছাড়া মহাসড়কের যেকোনো স্থানে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছে। এদিকে মহাসড়কের পাশে অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র গড়ে উঠে বাজার ও দোকানপাট। এসব কারণে ও যানবাহনের বেপরোয়া গতিও দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে কাজ করছে।

সংস্থাটি আরো জানায়, এই পরিস্থিতিতে মহাসড়কটিতে দুর্ঘটনা রোধ করতে হলে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচলে সার্ভিস রোড নিশ্চিত করতে হবে। মহাসড়কে স্পিড ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। হাইওয়ে পুলিশের নজরদারি বাড়াতে হবে।

মহাসড়কে দুর্ঘটনা বিষয়ে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে থ্রি-হুইলার ও মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য আলাদা লেইন আছে। তারপরেও অনেক সময় থ্রি-হুইলার ও মোটরসাইকেল মূল সড়কে উঠে পড়ে। ফলে অনাকাঙ্খিত এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। তিনি আরো বলেন, দুর্ঘটনা রোধে টাঙ্গাইল জেলা ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত জনসচেতনামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। আশা করি খুব দ্রুতই ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে দুর্ঘটনার হার কমে আসবে।

জানা যায়, মহাসড়কের কালিহাতী, মির্জাপুর, শ্রীপুর, টঙ্গী এবং গাজীপুর সদর এই স্পটগুলো অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে। এসব স্পটে দুর্ঘটনারোধে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি ভিত্তিতে গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া রেল পুলিশের তথ্যমতে, টাঙ্গাইল জেলার বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থেকে মির্জাপুরের অংশ পর্যন্ত ৫৩ কিলোমিটার টাঙ্গাইল অংশে চলতি বছর ২২টি অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে কাটা পড়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।