
ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রভাবশালীর অত্যাচারে ছয় মাস থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে দুইটি পরিবার। শিশু-বৃদ্ধসহ ১৫ জন সদস্য স্বজনের আশ্রয়ে থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের হাজারিহাট বাজারে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীরা।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমার বাড়ি পাশের খাতামধুপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ডাঙাপাড়ায়। এলাকার প্রধান সড়কের সঙ্গেই আমার ও বড় ভাই মৃত আবেদ আলীর ঘর। আমাদের বাড়ির পিছনের বাড়ির লোকজনের চলাচলের পথ আমার জমি দিয়েই। এজন্য ৭ ফুট চওড়া ও ১৬০ ফুট দীর্ঘ রাস্তা করতে জায়গা ছেড়ে দিয়েছি।
অথচ আমাদেরসহ প্রতিবেশী প্রায় ৫ টি বাড়ির টিউবওয়েলের পানি নির্গমনের অসুবিধার কারণে দুই বছর আগে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যানের সহায়তায় সরকারী ড্রেনের পানি নাকি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এমন অভিযোগে একতরফা মাটি দিয়ে ড্রেন বন্ধ করে দেয় প্রতিপক্ষরা। বিষয়টি স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় সুরাহা হয়। এতে প্রতিবেশী দুলাল-হেলাল বাধা দেয়।
পরে এরই জের ধরে গত ২০২১ সালের আগস্টে তারা সংঘবদ্ধভাবে অতর্কিত হামলা করে অমানবিক নির্যাতন চালায়। এতে আমার মৃত ভাই আবেদ আলীর বিধবা স্ত্রী সাবেদা বেওয়া (৫৬) সহ পরিবারের ৪ জন নারী গুরুত্বরভাবে রক্তাক্ত জখম হয়।
এই ঘটনায় পুলিশকে অভিযোগ দেয়ায় কয়েকদিন পর আবারও চড়াও হয় এবং আমাদেরকে টেনে হিচড়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে দেয় এবং উল্টো ৭ ধারা মামলা দেয়।
এর কিছু দিন পরে নিজেদের বাড়িতে নিজেরাই আগুন লাগিয়ে আরেকটি মামলা করে। কিন্তু সত্যতা না পাওয়ায় পুলিশ অ্যাকশনে না যাওয়ায় তারা আবার নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা করে। এতে আমার ছেলে মিনহাজুল ইসলামকেও আসামি করে। অথচ মামলায় উল্লেখিত ঘটনার দিন সে এলাকায় ছিল না। বরং ঢাকায় মিউচুয়াল ব্যাংকে কর্মরত ছিল। সর্বশেষ ছয় মাস আগে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেছে। এভাবে একের পর এক মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
সাখাওয়াতের মেয়ে মনিজা বেগম বলেন, দুই ভাই চাকরির সুবাদে ঢাকায় আছে। একমাত্র পুরুষ অভিভাবক আমার বাবাকে মেরে ফেলতে সবসময় অস্ত্র নিয়ে ওৎপেতে থাকে প্রতিপক্ষরা। কয়েকবার হামলাও করেছে। তাই প্রাণভয়ে আমার বড় বোনের বাড়িতে অবস্থান করেই ইমামতি চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বাড়ির সকলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছি।
বৃদ্ধা সাবেদা বেওয়া বলেন, আমাদের বাড়ি ঘর দখল করে ভাগ করে ভোগ করতে দুলালের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ হয়েছে মৃত বদিউজ্জামানের ছেলে ইয়াকুব আলী, তার ছেলে সিরাজুল ইসলাম, আজিজারের ছেলে রওশন ইসলাম, মৃত কাচু মামুদের ছেলে মনচার আলী (চেকরু), তার ছেলে মোমিনুল।
প্রতিবারের হামলায় উল্লেখিতরা সহ দুলালের স্ত্রী নার্গিস বেগম, ইয়াকুবের স্ত্রী আয়েশা বেগম, সিরাজুলের স্ত্রী মমতা বেগম, চেকরুর স্ত্রী ইসরা বেগমও অংশগ্রহণ করে আমাদেরকে অবর্ণনীয় নির্যাতন করেছে। তাই সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষসহ আইন সহায়তাকারী মানবাধিকার সংস্থা ও সংবাদকর্মীদের সহযোগিতায় ন্যায় বিচার দাবি করা হয় সম্মেলনে।
এ ব্যাপারে দুলাল হোসেন বলেন, মূলতঃ কবরস্থানে যাওয়ার জন্য রাস্তা করতে জায়গা দিয়ে এখন জমির দাম দাবি করছে এবং এলাকাবাসী সম্মত না হওয়ায় রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।
এসআর