ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘অদ্ভুত সব নাম’ নিয়ে ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই 

প্রকাশিত: ১৭:০০, ১৮ ডিসেম্বর ২০২২

‘অদ্ভুত সব নাম’ নিয়ে ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই 

ষাঁড়ের লড়াই 

গ্রামীণ নানা প্রতিযোগিতার মাঝে ‘ষাঁড়ের লড়াই’ একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা। যা প্রাচীন বাংলার চিরায়ত বিনোদনগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিলুপ্তপ্রায় লোকসংস্কৃতির এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছে মৌলভীবাজার জেলা।  

মহান বিজয় দিবস (১৬ ডিসেম্বর) উপলক্ষে সে জেলা শহরের শেখেরগাঁও মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াইয়ের এক দুর্ধর্ষ প্রতিযোগিতা। স্থানীয়ভাবে এ আয়োজনকে “ডেখা মাইর” বা “বিছাল মাইর” বলা হয়।

এমন ব্যতিক্রমী আয়োজনে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। ষাঁড়ের লড়াই দেখতে আসা উৎসুক কয়েক হাজার মানুষের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকেও নানা বয়সীর মানুষ জমা হয় শেখেরগাঁও মাঠে। সবচাইতে মজার বিষয় ছিল লড়াইয়ে নামানো ষাঁড়গুলোর নাম। অদ্ভুত সব নাম দেওয়া হয়েছিল তাদের।

আয়োজক সূত্র জানায়, এবারের প্রতিযোগিতায় সব মিলিয়ে ২০টি ষাঁড় অংশগ্রহণ করে। নানা বর্ণিল রঙের রাঙিয়ে নিজেদের ষাঁড়গুলো মাঠে নিয়ে আসেন এদের মালিকরা। লড়াইয়ের সঙ্গে ষাঁড়দের সাজসজ্জা আর অদ্ভুত নাম প্রতিযোগিতাকে একটি প্রাণবন্ত উৎসবে রূপ দেয়। মুগ্ধ দর্শকরা করতালিতে ষাঁড় ও মালিকদের অভিবাদন ও উৎসাহ যোগান।  

ষাঁড়ের বিচিত্র ও আকর্ষণীয় নামগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ‘কাটাতার’, ‘কালরূপা’, ‘স্টিল’, ‘ভয়ঙ্করমুদি’, ‘সরকি তালুকদার’, ‘দেশ পাগলা’, ‘পাগলাভাই’, ‘সোনার ময়না’, ‘সাদাসের বলাউয়া’, ‘লাল চাঁন’, ‘নিউকালী’ ইত্যাদি।

এদের মধ্যে লড়াইয়ে ১ম স্থান অর্জন করে ‘কাঁটাতার’। ২য় স্থান অর্জন করে ‘দেশপাগলা’ আর ৩য় স্থান অর্জন করে ‘ভয়ঙ্করমুদি’।  ১ম ও ৩য় স্থান অর্জন করা ষাঁড়ের মালিক একজনই, মো. মাসুদ। আর ২য় স্থান অর্জনকারী ষাঁড়ের মালিক মো. কমরু মিয়া। ১ম পুরস্কার দেওয়া হয়েছে একটি মোটরসাইকেল এবং ২য় আর ৩য় পুরস্কার দেয়া হয়েছে একটি করে এলইডি টিভি। ঐতিহ্যবাহী এই ষাঁড়ের লড়াই খেলাটির আয়োজক মৌলভীবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর মাসুদ আহমদ।

আয়োজন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মূলত গ্রামবাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই এর আয়োজন করে থাকি। প্রথমবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হবার পর থেকেই আমি প্রতিবছর বিজয় দিবসের দিনে ষাঁড়ের লড়াইয়ের আয়োজন করে আসছি। এ বছর আমার নিজের ৬টি ষাঁড় লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করেছে। এ থেকে একটি চ্যাম্পিয়ন, একটি ৩য় ও একটি জয়লাভ করেছে। এটি আগামীতে অব্যাহত থাকবে।

আয়োজক কমিটির সদস্য জমসেদ মিয়া বলেন, প্রতি বছর হাজার হাজার দর্শক ষাঁড়ের লড়াই দেখতে আসেন। এলাকায় এসময় উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। বিজয় দিবসের সঙ্গে এ আনন্দ দিতে পেরে এলাকাবাসী খুশি। মহান বিজয় দিবসের এমন আকর্ষণীয় এই খেলা উপভোগ করেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ।

 

 

এমএস

×