ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাঁকোয় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

সংবাদদাতা, ঘিওর, মানিকগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ৭ ডিসেম্বর ২০২২

সাঁকোয় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

মানিকগঞ্জের ঘিওর-শিবালয়ে খিড়াই নদীর ওপর বাঁশের সাঁকো

মানিকগঞ্জের ঘিওর ও শিবালয় উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা ঘিওরের ধুলণ্ডি গ্রাম। এই দুই উপজেলার কমপক্ষে ১৫/১৬টি গ্রামের হাজারো ে লোকজনের যাতায়াতের ভরসা ৩শ’ ফুট লম্বা আর ২০ ফুট উচ্চতার সরু বাঁশের সাঁকো। স্বাধীনতার ৫১টি বছর অতিবাহিত হবার পরেও ধুল-ি খিড়াই নদীর ওপরে সেতু নির্মাণ না করায় ২টি সরকারি কলেজ, ৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ এলাকার শ’ শ’ লোকজন এবং স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায়ীদের মালামাল আনা নেওয়ার ক্ষেত্রেও চরম অসুবিধা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের ধুলণ্ডি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে খিড়াই নদী। ধুল-ি বাজার থেকে স্যাঁত স্যাঁতে কাঁচা রাস্তা পাড়ি দিয়ে উঠতে হয় সরু বাঁশের সাঁকোতে। নদীর ওপর প্রায় ৩শ’ ফুট দীর্ঘ এই বাঁশের সাঁকোটি। অথচ আশপাশের ১৫/১৬টি গ্রামের হাজারো লোকজন প্রতিনিয়ত এই সাঁকো দিয়ে বছরের পর বছর পারাপার হচ্ছেন।

সাঁকো পাড়ি দিয়ে এলাকার লোকজনের সকল প্রকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে হয় ২ কিলোমিটার দূরে মহাদেবপুর বাজারে। দুই উপজেলার ধুল-ি, মহাদেবপুর, উত্তর সাহিলী, পূর্বসাহিলী, চৌবাড়িয়া, ঘিওর, শৌধঘাটা, আঙ্গুরপাড়া, কালাচাঁদপুর, বামনা, ভালকুটিয়া, বাষ্টিয়াসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষজনের নিত্যপ্রয়োজনে যাতায়াত করেন। মহাদেবপুর ডিগ্রি কলেজ, গার্লস স্কুল, গোপাল চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, কিন্ডারগার্টেন দিশারী, ধুল-ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে পারাপার হতে হয় সাঁকো দিয়ে।
উপজেলার ধুল-ি গ্রামের নিরোদ হালদার (৭৩) সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাগো ফটো তুইলা আর কি অইবো। জন্মের পর থেইকা দেইখা আইতাছি এই বাঁশের পুল। পার অইতে কত কষ্ট আমাগো। পুলের উপর উঠলে আত পাও (হাত পা) কাঁপে। কেউ হুনে (শুনে) না আমাগোর কথা।’ কালাচাঁদ গ্রামের রুপা আক্তার পড়াশোনা করেন মহাদেবপুর গার্লস হাইস্কুলে। স্কুল কিংবা প্রাইভেট পড়তে তার প্রতিনিয়ত এই বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করতে হয়।


বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল খান বলেন, এ পাড়ে ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন আর অপর পাশে শিবালয় উপজেলার মহাদেবপুর ইউনিয়ন। দুই ইউনিয়নের ১৫/১৬ টি গ্রামের মানুষ এই সাঁকো দিয়ে পারাপার হয়ে থাকে। হাটবাজার, জেলা সদর কিংবা ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই সাঁকোর ওপর নির্ভরশীল।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাকুর রহমান জানান, এপ্রোচ সড়ক নেই এবং ওই রাস্তার আইডি নম্বর নেই। তাই ব্রিজটি করা আপাতত সম্ভব হচ্ছে না। আমি সরেজমিন পরিদর্শন শেষে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।

×