ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর

নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো ১৪ গ্রামবাসীর ভরসা

রফিকুল ইসলাম রনি, চাটমোহর,পাবনা 

প্রকাশিত: ১৪:২৩, ২৬ নভেম্বর ২০২২

নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো ১৪ গ্রামবাসীর ভরসা

বাঁশের সাঁকো

পাবনার চাটমোহর উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের কাটাখালি গ্রামটি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত। পাশেই চিকনাই নদী। নদীর ওপারে আরেকটি গ্রামের নাম ‘খৈরাশ’। 

বর্ষাকাল এলেই খৈরাশসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম চাটমোহর উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। কাটাখালি ও খৈরাশ গ্রামের পাশেই রয়েছে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নসহ নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল ও চান্দাই ইউনিয়নের আরো কয়েকটি গ্রাম। 

এসব গ্রামের বাসিন্দাদের বেশিরভাগ যোগাযোগ চাটমোহর শহর কেন্দ্রিক। ওই এলাকায় রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। কাটাখালি কাঠগড়া এলাকায় চিকনাই নদীর ওপর কোনো সেতু না থাকায় জনদুর্ভোগের শিকারে আছে খৈরাশ, চড়ইখুল, মোস্তালিপুর, পাঁচবাড়িয়া, বাঙ্গালা, দাতিয়া, কয়রাপাড়া, দুর্গাপুর, ইসলামপুর, চান্দাই, ধানবিলা, লড়াইখালী, কামালপুর, দয়রামপুর। ১৪ গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। 

সরজমিনে ও এলাকা বাসীর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কাটাখালি এলাকায় চিকনাই নদীর উপর প্রায় তিন বছর আগে গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে ৫৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। সাঁকোটি নির্মাণে গ্রামের কেউ দিয়েছেন বাঁশ, কেউ বা টাকা। পুরো গ্রামবাসী প্রায় একমাসের স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে নদীর ওপর তৈরি করেন অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো। 

খৈরাশ গ্রামের শামছুল আলম সরদার বলেন, বর্ষাকাল এলেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এলাকার সবাই ডিঙি নৌকায় নদী পারাপার হয়ে থাকে। কৃষি প্রধান এলাকায় যানবাহনের অভাবে মাঠ থেকে ফসল আনা-নেয়া বা কেউ অসুস্থ হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। এলাকার অসুস্থ রোগীদের পল্লী চিকিৎসকরাই একমাত্র ভরসা। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী জনপ্রতিনিধিদের কাছে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানালেও শুধু আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি। 

বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই ইউনিয় চেয়ারম্যান ও ডিকে উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোছা. শাহানাজ পারভীন বলেন, দীর্ঘদিন হচ্ছে শুনে আসছি, কাঠগড়া এলাকায় ব্রিজ নির্মাণ হবে। এখন পর্যন্ত ব্রিজের দেখা হলো না গ্রামবাসীর। একটি ব্রিজের জন্য এলাকার স্কুল ও কলেজের ছাত্র ছাত্রী নৌকা বা বাঁশের সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পাড় হতে হয়। ব্রিজটি নির্মাণ হলে স্কুলের ছাত্র ছাত্রী নিয়মিত যথাসময়ে স্কুলে আসা ও দুই উপজেলার এক সেতুবন্ধন সৃষ্টি হবে এবং এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হবে। 

উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শামিম হোসেন বলেন, কাঠগড়া এলাকায় একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবিতে বহুবার বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েছি। আমিও আশ্বাস ছাড়া কিছুই পাইনি। অনেক চেষ্টা করেও একটি সেতু জোটেনি এলাকাবাসীর কপালে। তবে এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সেতুটি তৈরি হলে ১৪টি গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে। 

চাটমোহর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. সুলতান মাহমুদ জানান, এলাকা পরিদর্শন করে সেখানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকল্প প্রস্তাবনা দিয়েছি। প্রকল্প অনুমোদন হলে খুব শিগগিরই সেখানে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে।  

এসআর

×