ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রিক্সাজটের যন্ত্রণায় যশোর পৌরসভা

সাজেদ রহমান, যশোর অফিস

প্রকাশিত: ০১:০২, ১ অক্টোবর ২০২২

রিক্সাজটের যন্ত্রণায় যশোর পৌরসভা

যশোরে রাস্তা দখল করে আছে ব্যাটারি চালিত রিক্সা

যশোর শহরে ব্যাটারি চালিত রিক্সা চলাচল করায় যানজট লাগার তথ্য অনেক পুরনো। পায়ে চালিত রিক্সা ধীরে ধীরে ব্যাটারি চালিত রিক্সায় রূপান্তরিত হয়েছে, সে তথ্যও কারো অজানা নেই। এভাবে দীর্ঘ সময় পার হয়েছে। কিন্তু দায়িত্বশীলদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। সময়ের পরিক্রমায় ব্যাটারি চালিত রিক্সা বেড়েছে। এতে ছোট শহরের মূল কেন্দ্রে দেখা দিচ্ছে বড় যানজট। নাগরিকদের ভাষ্য, শহরের এই রিক্সাজটের জটিলতা সৃষ্টি করেছে পৌরসভা।

প্যাডেল রিক্সায় ব্যাটারি যুক্ত করে চালানোর পরও সেগুলোর বারবার নবায়ন দিয়েছেন পৌর কর্তৃপক্ষ। সেগুলো শহরে অবাধে চলাচল করায় শহরে নতুন ব্যাটারি চালিত রিক্সা আমদানি শুরু হয়। যশোর শহর ও শহরতলীতেই গড়ে ওঠে ব্যাটারি চালিত রিক্সার কারখানা। দরিদ্রশ্রেণীর মানুষ ধারদেনা হয়ে রিক্সা কিনে শহর ও শহরতলীতে চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
যশোর পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী বিএম কামাল আহম্মেদের দেয়া তথ্য মতে, প্যাডেল চালিত ২ হাজার ৯৮৩টি রিক্সার অনুমোদন দিয়েছিল পৌরসভা। এরমধ্যে নবায়ন করা হয়েছে এক হাজার ৮৮৮টি। সেই অনুমোদনকে পুঁজি করে প্যাডেলচলিত রিক্সাতে ব্যাটারি ও মোটর সংযুক্ত করে যানজট ও বিশৃঙ্খলা  তৈরি করছে অসাধু রিক্সার মালিকগণ। প্রায় আট হাজারের বেশি রিক্সা শহরে চলাচল করছে। শহরে যানজট কমাতে ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে অনুমোদনহীন ব্যাটারিচালিত রিক্সা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে বৈধ-অবৈধভাবে ৮ হাজারের মতো রিক্সা চলাচল করছে পৌরসভা এমন দাবি করলেও নাগরিকদের ধারণা, এ সংখ্যা ২০ হাজারের কাছাকাছি। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাটারি চালিত রিক্সা চালানো হচ্ছে।
শহরের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ইঞ্জিন চালিত রিক্সা বন্ধে অভিযান চলায় চালকরা প্রধান সড়কের মুখে না এলেও কিছুটা ভেতরে দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রী তুলছিলেন। চালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিভিন্ন অভিযানে এই ব্যাটারিচালিত রিক্সাগুলো আটক করা হলেও নির্দিষ্ট টাকায় তা ছাড়িয়ে এনে আবার সড়কে নামাচ্ছেন মালিকরা।
ব্যাটারিচালিত রিক্সা চালকরা বলছেন, এ বাহনের ওপর নির্ভর করে চলে একেকটি পরিবার। আমরা অটোরিক্সা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছি। কোন চুরি তো করছি না। এখন যদি সরকার এই রিক্সা বন্ধ করে দেয় তাহলে লাখ লাখ মানুষ বেকার হয়ে যাবে। লাখ লাখ পরিবার অসহায় হয়ে পড়বে। তখন আমরা কোথায় যাব, কি করে খাব, কারা আমাদের কাজ দেবে?
এ বিষয়ে যশোর পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী কামাল আহম্মেদ জানান, আগে প্যাডেলচালিত রিক্সার লাইসেন্সের জন্য পৌরসভায় মালিকরা আবেদন করতেন। ব্যাটারিচালিত রিক্সা অবাধে কিনে এই রিক্সাগুলো রাস্তায় নামিয়ে দিচ্ছেন তারা। অটোরিক্সা শহরে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি।
যশোর ট্রাফিক পুলিশের টিআই প্রশাসন মোঃ মাফুজুর রহমান বলেন, ব্যাটারিচালিত রিক্সা খুব দ্রুত চলে। তাই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে যশোর পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গনি খান পলাশ বলেন, যশোর শহর যানজটের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। শহরকে যানজটমুক্ত করতে এ অভিযান। রিক্সা জব্দ করলেও আমরা চালকদের প্রতি সহানুভূতিশীল।

×