ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মেয়ে আদরীর জিম্মায় বাড়ি ফিরলেন রহিমা বেগম

প্রকাশিত: ২১:৩২, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

মেয়ে আদরীর জিম্মায় বাড়ি ফিরলেন রহিমা বেগম

মেয়ে আদরী ও রহিমা বেগম

২৯ দিন নিখোঁজ থাকার পর উদ্ধার হওয়া রহিমা বেগমকে (৫২) তার ছোট মেয়ে আদরী খাতুনের জিম্মায় হস্তান্তর করেছেন আদালত। পরে খুলনা মহানগরীর বয়রা এলাকায় আদরীর বাসায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয়।

রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে আদালত থেকে বেরিয়ে ইজিবাইকযোগে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তারা। এর আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে খুলনা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক আল আমিনের কাছে জবানবন্দি দেন রহিমা বেগম। 

বাদীপক্ষের আইনজীবি আফরুজ্জামান টুটুল বলেন, ভিকটিম আদালতে তার অপহরণের বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন- জমিজমা নিয়ে যাদের সঙ্গে বিরোধ ছিল, মূলত তারাই তাকে অপহরণ করে চট্টগ্রামে নিয়ে যায়। সেখানে থেকে তিনি ফরিদপুরে আসেন। 

মামলায় যাদের নাম রয়েছে, তাদের মধ্যে ৪-৫ জন অপহরণের সঙ্গে জড়িত। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে চিফ মেট্রোপলিটন আদালত-৪ এর বিচারক সারোয়ার আহমেদ তাকে তার মেয়ে ও এজাহার দায়েরকারী আদরী খাতুনের জিম্মায় হস্তান্তর করেন। 

আফরুজ্জামান টুটুল বলেন, রহিমাকে অপহরণ করা হয়েছিল। তাকে চারজন লোক উঠিয়ে নিয়ে যান। সেখানে তার কাছ থেকে জোর করে সাদা স্টাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়। এরপর এক হাজার টাকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

আদালত থেকে বেরিয়ে রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান বলেন, আমার মাকে জীবিত ফিরে পেয়েছি। এই মুহূর্তে আমার চেয়ে সুখী আর কেউ নেই। ইনশাআল্লাহ আমার মায়ের হাত এক মুহূর্তের জন্যও আমি ছাড়ব না।

এর আগে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুসের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। রহিমা বেগমকে নিয়ে পুলিশের একটি টিম শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে দৌলতপুর থানায় পৌঁছায়। পরে রবিবার বেলা ১১টার দিকে পুলিশ রহিমা বেগমকে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করে।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশার উত্তর বণিকপাড়ার নিজ বাসা থেকে টিউবওয়েলে পানি আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। এরপর আর ঘরে ফেরেননি তিনি। স্বামী ও ভাড়াটিয়ারা নলকূপের পাশে ঝোপঝাড়ে তার ব্যবহৃত ওড়না, স্যান্ডেল ও বালতি দেখতে পান। সেই রাতে মাকে খুঁজতে আত্মীয়-স্বজন, আশপাশসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেন সন্তানরা।

রহিমার ছয় সন্তান কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কখনো মাইকিং, কখনো আত্মীয়-স্বজনদের দ্বারস্থ হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনের পর মাকে খুঁজে পেতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানায় মামলাও করেন। মামলার বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে পিবিআই তদন্তের ভার পায়। ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা থেকে মামলাটি পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়।

পুলিশ জানায়, গত ২৭ আগস্ট নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকার বাড়ির সামনে থেকে রহিমা বেগম নিখোঁজ হয়- এ অভিযোগ তুলে তার মেয়ে আদরী খাতুন বাদী হয়ে পর দিন দৌলতপুর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এ পর্যন্ত ছয়জন আটক হয়েছেন।

তারা হলেন- খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, নিখোঁজ গৃহবধূর দ্বিতীয় স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ, জুয়েল ও হেলাল শরীফ।  

 

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×