
অনার্সের ছাত্রীর মৃত্যু
টঙ্গী হোসেন মার্কেট ঢাকা ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে সিজার করাতে গিয়ে টঙ্গী সরকারি কলেজের অনার্সের এক ছাত্রী প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। স্বজন ও প্রতিবেশীর আকষ্মিক মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় জনতা হাসপাতাল ঘেরাও এবং রাস্তা অবরোধ করে।
টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশের ওসি শাহ আলম বৃহস্পতিবার বিকাল ৫ টার দিকে জনকণ্ঠকে প্রসূতির মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন।
মৃত্যু প্রসূতি ছাত্রীর নাম লাভলী আক্তার। বাবার নাম জাহাঙ্গীর আলম। স্বামীর নাম মিজানুর রহমান টিটু। তিনি একজন ব্যবসায়ী। তাদের বাসা এরশাদ নগর ৩ নম্বর ব্লকে।
বুধবার দুপুরে সিজারের আয়োজন থেকে শুরু করে রোগীকে নিয়ে এ হাসপাতাল থেকে ওহাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করতে করতে শেষমেশ মারা যায় প্রসূতি ওই নারী। স্বজনদের অভিযোগ লাভলীকে অবশ করার ইনজেকশন না দিয়েই ডাক্তাররা সিজার করালে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
অপারেশন থিয়েটারের সামনে থাকা আত্মীয় স্বজনরা জনকণ্ঠকে জানান, ডাক্তাররা যখন প্রসূতির সিজার করা শুরু করেন তখন লাভলীর আত্মচিৎকারে সবাই ওটির ভেতরে গিয়ে দেখেন অজ্ঞান করার ইনজেকশন না দিয়েই ডাক্তাররা সিজার করছেন লাভলীকে।
এ অবস্থায় ডাক্তাররা ঘুমের ট্যাবলেট দিয়ে রোগীকে ঘুম পাড়ানো হয় বলেও অভিযোগ করা হয়। লাভলীর ব্যবসায়ী স্বামী টিটু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জনকণ্ঠকে জানান, লাভলী টঙ্গী সরকারি কলেজে বানিজ্য বিভাগের অনার্সের ছাত্রী ছিল।
গত পরশু দিনও লাভলী পেটে বাচ্চা নিয়ে জয়দেবপুর ভাওয়াল কলেজে পরীক্ষা দিতে যায়। ডাক্তারদের চরম গাফিলতিতে অকাল মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে বলে স্বজনদের অভিযোগ। এর সুষ্ঠু বিচার চান স্বামী।
টিটু আরো জানান, হাসপাতালের ডাক্তারদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ৩৭ হাজার টাকায় সিজার করার দফারফা হয়। এর পরও তারা আরো ৩০ হাজার টাকা নেয় রোগীর গুরুতর অবস্থার কথা বলে।
টিটু আরো জানান, বুধবার দুপুরে সিজার করে একটি কন্যা সন্তান হওয়ার আড়াই ঘন্টা পর তাদের জানানো হয় প্রসূতির অবস্থা গুরুতর। এ অবস্থায় হাসপাতালের ডাক্তাররাই ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে পাঠায় তার বউকে।
সেখানে বুধবার বিকাল রাত এবং বৃহস্পতিবার সকাল দুপুর রাখার পর আবার নিয়ে আসা হয় টঙ্গীর ঢাকা ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে। ঢাকার হাসপাতালে গুনতে হয় লাখ টাকার উপরে। টঙ্গীতে রোগী আনার পর রোগী বিকাল ৫ টা পর্যন্ত জীবিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রসূতির মৃত্যুর আগেই মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ায় হাসপাতালের সামনে স্থানীয় জনতা বিক্ষোভ করতে থাকে। বিকালে যখন মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত হন তখন জনতা হাসপাতালের সামনের একপাশের রাস্তা ঢাকা টঙ্গী গাজীপুর মহাসড়ক অবরোধ করে।
পুলিশ দ্রুত জনতাকে সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে। টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশের ওসি শাহ আলম জনকণ্ঠকে জানান, প্রসূতির সিজারের ঘটনা শুরু হয় বুধবার দুপুর থেকে। নিহত লাভলী আক্তার ওই হাসপাতালের ডাক্তার সালমা নাহারের তত্বাবধানে ছিলেন। ওই ডাক্তার একজন গাইনী বিশেষজ্ঞ।
টঙ্গী কলেজ ছাত্রী প্রসূতি নারীর ৪ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের আগেরও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। নবজাতক কন্যা সন্তানও সুস্থ আছে।
এমএস