ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন রিজিয়া এগ্রো নামে গরু ও মহিষের খামার
আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে গত বছরের মতো এবারও মীরসরাইয়ে কোরবানি পশুর চাহিদা স্থানীয়ভাবে মিটবে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের তথ্যমতে মীরসরাইয়ে কোরবানী করা হবে গরু, ছাগল, দুম্বা, ভেড়াসহ প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার পশু। কিন্তু এখানে ছোট-বড় খামার ও প্রান্তিক কৃষকের কাছে কোরবানিযোগ্য পশু মজুদ রয়েছে প্রায় ৫৫ হাজার। ফলে চাহিদার তুলনায় ১৫ হাজার বেশি কোরবানির পশু মজুদ রয়েছে মীরসরাইয়ে। তবে পশু খাদ্যের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় বেড়েছে খরচ। এছাড়াও ভারতীয় গরু আসার সম্ভাবনার কারণে পশুর প্রত্যাশিত দাম পাওয়া নিয়ে খামারিরা রয়েছেন সংশয়ে । মীরসরাইয়ে এবার স্থায়ী এবং অস্থায়ীভাবে ৩১টি কোরবানীর পশুর হাট বসবে বলে জানান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোছাম্মৎ তাহমিনা আরজু । এছাড়াও প্রস্তুতকৃত কোরবানীর পশু হাটে ও অনলাইনে বিকিকিনি করছেন সাড়ে ৩ শ’ খামারী ও উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাপাহাড় গ্রামে প্রাকৃতিক পরিবেশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে রিজিয়া এগ্রো নামে একটি গরু ও মহিষের খামার গড়ে তুলেছেন জোরারগঞ্জ বাজারের সোলতানা ক্লথ এন্ড গার্মেন্টেসের সত্ত্বাধিকারী আবু ইউছুফ চৌধুরী খান সাব। তার খামারে রয়েছে অর্ধশতাধিক মহিষ এবং কিছু সংখ্যাক গরু। অনেকটা শখ ও বাণিজ্যিক উদ্দ্যেশ্যে গত এক বছর ধরে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে তিনি এই খামার গড়ে তুলেছেন। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাদ্যের মাধ্যমে মহিষগুলো মোটা তাজা করেছেন। অনলাইনের মাধ্যম এবং নিজের খামারে রেখে বিক্রি করছেন পশুগুলো।
দিদার এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারি নাসির উদ্দিন দিদার বলেন, কোরবানির জন্য আমার খামারে ছোট-বড় ১৫শ গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতমধ্যে বিক্রিও শুরু হয়েছে। অনেকে গরু পছন্দ করে বুকিং দিচ্ছে। তিনি আরাে বলেন, আমার খামারে স্ব-পরিবারে এসে গরু পছন্দ করে গরু করার সুযােগ রয়েছে। এখন গরু ক্রয় করলেও ক্রেতা ঈদের আগের দিন, ঈদের দিন গরু নিয়ে যেতে পারবে।
নাহার এগ্রো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রকিবুর রহমান টুটুল বলেন, আমাদের কাছে কোরবানীর জন্য প্রায় ৫শ গরু প্রস্তুত রয়েছে। আমরা নিজস্ব ফার্মে জন্ম নেয়া হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরুলোকে নিয়মমাফিক নেফিয়ার ঘাস ছাড়াও পুষ্টিকর কাঁচামাল দিয়ে তৈরি ক্যাটেল ফিড খাওয়নো হয়। আমাদের গরুগুলোকে প্রাণঘাতী স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ খাওয়ানো হয় না। গরুগুলো হয় রোগমুক্ত, স্বাস্থ্যবান ও প্রাণবন্ত ।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোছাম্মৎ তাহমিনা আরজু বলেন, আসন্ন কোরবানকে ঘিরে মীরসরাইয়ে বাণিজ্যিক ভাবে গড়ে উঠা খামারি আছে ৩৫০ জন। এছাড়াও প্রান্তিক কৃষকসহ ছোট বড় খামারীর আছে প্রায় ৫ হাজার। এখানে শাহীওয়াল, রেড় চিটাগাং, হলস্টাইন ফ্রিজিয়ান, হরিয়ানা জাতের গরু রয়েছে। কোরবানী পশুর চাহিদার চেয়ে ১৫ হাজার পশু মজুদ রয়েছে এখানে। এসব কোরবানির পশু উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা ও চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন হাটে বিক্রি হবে। তবে ভারত বা অন্য জেলা থেকে গরু না আসলে খামারিরা লাভবান হবেন। পশুর হাট পরিদর্শন ও পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২জন কর্মকর্তাসহ ৬জন করে ৩ টি গ্রুপ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।