ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চুক্তি সই

দক্ষ তথ্যপ্রযুক্তি তৈরিতে কাজী আইটি বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দেবে

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২৭ জানুয়ারি ২০১৮

দক্ষ তথ্যপ্রযুক্তি তৈরিতে কাজী আইটি বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দেবে

ফিরোজ মান্না ॥ তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের উন্নয়নে কাজী আইটি সেন্টার লিমিটেড ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এক যোগে কাজ শুরু করছে। সম্প্রতি কাজী আইটির সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের মধ্যে এমন একটি চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে দেশে দক্ষ তথ্যপ্রযুক্তি তৈরি করতে কাজী আইটি বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দেবে। আমেরিকা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি দেশে ২০০৯ সাল থেকে কাজ শুরু করেছে। আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশে এটিই অন্যতম। প্রতিষ্ঠানটি গত বছর ৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে আউটসোসিংয়ের মাধ্যমে। এ বছর তারা একশ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করার টার্গেট নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে দেশের এক হাজারের বেশি তরুণ-তরুণী উচ্চ বেতনে কাজ করছেন। ২০২১ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ঘোষিত টার্গেটের ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের টার্গেট পূরণে প্রতিষ্ঠানটির ভূমিকা হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের নেয়া টার্গেটের চেয়ে আরও অনেক বেশি আয় করা সম্ভব বলে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলেছেন। তবে এজন্য প্রয়োজন হবে দক্ষতা বৃদ্ধি। দক্ষ জনবল সৃষ্টি হলে বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারবে। কাজী আইটি সেন্টার লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মাইক কাজীর সঙ্গে সম্প্রতি দীর্ঘ আলোচনায় উঠে এসেছে, বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। দেশে তরুণ-তরুণীরা মেধাবী। তারা আইটিতে দক্ষতা অর্জন করছে এটা ঠিক। কিন্তু একটি জায়গায় সবচেয়ে বড় সমস্যা রয়েছে। তা হচ্ছে ভাষা। ইংরেজী ভাষাটা ভালভাবে জানলেই বাংলাদেশ এত দিনে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারত। আইটি জানা বহু তরুণ তরুণী পাওয়া গেলেও তারা আমেরিকানদের সঙ্গে ঠিকভাবে যোগাযোগ করতে পারে না। যারা পারছেন, তারা কিন্তু খুব ভাল করছেন। শুরুতেই তাদের বেতন ধরা হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তৈরি করতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে। কিন্তু সেখান থেকে আশানুরূপ তথ্যপ্রযুক্তি বের হচ্ছে না। কাজী আইটিতে এখন পর্যন্ত ওখান থেকে কাউকে পায়নি। মাইক কাজী বলেন, আইটি শেখানোর আগে ভাষার ওপর গুরুত্ব দেয়া হলে সেক্টরটি এত দিনে অন্য উচ্চতায় চলে যেত। বিষয়টি নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছি। বিষয়টি নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ভাববে বলে জানিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি। এ বছর এক হাজার তরুণ-তরুণীকে চাকরি দেয়ার জন্য আমি বসে আছি। আমি লোক পাচ্ছি না। বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠানে এক হাজার তরুণ-তরুণী কাজ করছেন। আগামী ২০ বছরে এক লাখ লোকের কর্মসংস্থান করার পরিকল্পনা রয়েছে। দক্ষ জনবল না পেলে এই পরিকল্পনা বাদ দিতে হতে পারে। তবে আমার ইচ্ছে আছে, একটি ইংরেজী ভাষা ও তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার। এজন্য বনানীতে ১০ হাজার স্কয়ার ফুটের একটি ভবন ভাড়া নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এটা একটা বড় আকারের প্রতিষ্ঠান হিসাবে চলবে বলে আশা করছি। মাইক কাজী বলেন, আইটি সেক্টরের ওপরে সরকার যে গুরুত্ব দিয়েছে তা অন্য কোন দেশের সরকার এমন গুরুত্ব দেয় না। সরকারের তরফ থেকে এ রকম সুযোগ তরুণদের লুফে নেয়া উচিত। এমন দিন আসবে আইটি সেক্টর হবে বিশ্বের এক নম্বর সেক্টর। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত আমেরিকার নাগরিক হয়েও নিজের দেশকে সেই উচ্চতা নিয়ে যেতে আউটসোর্সিংসহ তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরের বিভিন্ন বিষয়ে তার প্রতিষ্ঠান ২০০৯ সাল থেকেই সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, কাজী আইটি একটি সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে আমরা সবাইকে সমান সুযোগ করে দিতে চাই। আগামীতে দেশে কেমন আইটি ফার্ম গড়ে উঠবে তা কাজী আইটি দেখলেই আঁচ করা যায়। কারণ তারা গতানুগতিক কোন ধারা অনুসরণ করছে না। তারা কাজ দিয়েই সরকারের ২০২১ সালের মধ্যে যে পাঁচ বিলিয়ন ডলার আইসিটিতে রফতানি আয় করার টার্গেট নেয়া হয়েছে তা পূরণ হবেই।
×