ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

এএফসি নারী এশিয়ান কাপ বাছাই

এশিয়া কাপে চোখ বাংলাদেশের

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:১৩, ২৫ জুন ২০২৫

এশিয়া কাপে চোখ বাংলাদেশের

বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল

এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাই খেলতে মঙ্গলবার রাতে মিয়ানমারের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা। ছেলেদের ফুটবল নিয়ে হতাশা থাকলেও মেয়েদের ফুটবলে টানা দু’বারের দক্ষিণ এশিয়ান (সাফ) চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। এবার লক্ষ্য এশিয়া কাপের মূল মঞ্চে জায়গা করে নেওয়া, ‘আমরা জর্ডানে দুটি ম্যাচ খেলেছি। ভালো প্রস্তুতি হয়েছে। এশিয়া কাপে খেলার আশা রাখি।’ দেশ ছাড়ার আগে বিকেলে বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন আফঈদা খন্দকার।

অধিনায়ক সরাসরি আশা ব্যক্ত করলেও পাশে বসা কোচ পিটার বাটলার অবশ্য একটু বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে মন্তব্য করেছেন, ‘মিয়ানমার স্বাগতিক ও কঠিন প্রতিপক্ষ। বাংলাদেশের জন্য কাজটা চ্যালেঞ্জিং। আমরা বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান দুই দলকে হারিয়ে এগিয়ে থাকতে চাই।’ ২৩ জুন শুরু হওয়া এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের মাঠের লড়াই শুরু ২৯ জুন থেকে। মিয়ানমারে ‘সি’ গ্রুপের খেলায় আফঈদাদের তিন প্রতিপক্ষ মিয়ানমার, বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান। 
প্রথম ম্যাচে বাহরাইনকে মোকাবিলা করবেন আফঈদারা। ২ জুলাই প্রতিপক্ষ স্বাগতিক মিয়ানমার আর ৫ জুলাই গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। আগামী বছরের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় হবে এএফসি এশিয়ান কাপের ২১তম আসর। ১২ দলের সেই লড়াইয়ে আয়োজক অস্ট্রেলিয়া ছাড়া ২০২২ সালে এই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়া চীন, রানার্সআপ দক্ষিণ কোরিয়া ও তৃতীয় হওয়া জাপানের অংশগ্রহণ নিশ্চিত। আর বাছাইয়ের আট গ্রুপের সেরা আট দল পাবে মূল পর্বে খেলার টিকিট।

মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার আগে এদিনই ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তিনটি পরিবর্তন আনা হয়েছে স্কোয়াডে। বাদ পড়েছেন দুই গোলকিপার মেঘলা রানী ও ফেরদৌসী আক্তার এবং মিডফিল্ডার শান্তি মার্ডি। ডাক পেয়েছেন গোলকিপার মিলি আক্তার, স্বর্ণা রানী এবং ডিফেন্ডার নিলুফা ইয়াসমিন। সর্বশেষ গত মে মাসে জর্দানে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট খেলতে যায় বাংলাদেশ। সেখানে স্বাগতিক জর্দান ও শক্তিশালী ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ড্র করে মেয়েরা। জর্দান সফরের মতো এই সফরেও পিটার বাটলার ডাকেননি সাবিনা খাতুন ও মাসুরা পারভীনকে।

সংবাদ সম্মেলনে টুর্নামেন্ট নিয়ে নানা প্রশ্নের একেবারে শেষদিকে সাবিনাদের প্রসঙ্গ উঠেছিল। অধিনায়ক আফঈদা খন্দকারকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘নো কমেন্টস।’ পাশ থেকে বাটলার আফঈদাকে ধন্যবাদ দিয়ে বললেন বেশ সুন্দর উত্তর। পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের এই প্রশ্নটি আমাকে করা উচিৎ ছিল, অধিনায়ককে নয়। আপনারা সব সময় পোক (অন্য কিছু ইঙ্গিত বা আঙুল তোলা) করতে পছন্দ করেন।’ 
পরবর্তীতে ইংরজেীতে বাটলারকে সেই প্রশ্ন করা হলে তিনিও শুরুতে ‘নো কমেন্টস’ বলেন। পরবর্তীতে অবশ্য সাবিনা-মাসুরাকে তার দরকার নেই সেই ব্যাখ্যাই দিয়েছেন। যদিও ফুটবলাঙ্গনের মতে এখনও সাবিনা-মাসুরা দলে খেলার মতো পরিস্থিতি রয়েছে। নারী ফুটবল দলে সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বাটলারের অসন্তোষ রয়েছে। এমনও গুঞ্জন রয়েছে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পর দায়িত্বও ছাড়তে পারেন তিনি। এ নিয়ে প্রশ্ন হলে তিনি বলেন, ‘সুযোগ-সুবিধার অপ্রতুলতা রয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতি-বাস্তবতাও আমি বুঝি।

এটা ইস্যু নয় গুঞ্জনই।’ জর্দানে ত্রিদেশীয় সিরিজে ভালো করার পর আত্মবিশ্বাস বেড়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের। র?্যাঙ্কিংয়ে ওপরের দিকে থাকা জর্দান ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ড্রয়ে নতুন স্বপ্নের জাল বুনেছে কোচ পিটার বাটলারের দল। নারী ফুটবলের ইতিহাসে প্রথমবার এশিয়া কাপে খেলার স্বপ্ন দেখছে মেয়েরা।

×