ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

৫১ বছর পর বোলোনিয়ার বাজিমাত

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:১১, ১৬ মে ২০২৫

৫১ বছর পর বোলোনিয়ার বাজিমাত

পাঁচ দশক পর ইতালিয়ান কাপের শিরোপা জিতে বোলোনিয়ার ফুটবলার-কর্মকর্তাদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস

রূপকথা বললেও কম বলা হবে। তেমনই এক রাত গেছে ইতালিয়ান ক্লাব বোলোনিয়ার। বুধবার রাতে ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে এসি মিলানকে ১-০ গোলে হারিয়ে দীর্ঘ পাঁচ দশক পর শিরোপার স্বাদ পেয়েছে উত্তর ইতালির বিখ্যাত শহরের ক্লাবটি।

রোমের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ৬৮,৫০০ দর্শকের সামনে বোলোনিয়ার হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন সুইজারল্যান্ডের ২৪ বছর বয়সী উইঙ্গার ডান এনডোয়ে। ফাইনালের এই হারে আগামী মৌসুমে ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্টে এসি মিলানের খেলা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। 
সেমিফাইনালে শক্তিশালী ও নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্টার মিলানকে উড়িয়ে আসা এসি মিলান শিরোপার মঞ্চে ছিল হট ফেভারিট। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে আত্মবিশ্বাসী বোলোনিয়াকে তেমন চ্যালেঞ্জ দিতে পারেনি তারা। ফলে ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে তাদেরকে হারিয়ে দীর্ঘ পাঁচ দশকের শিরোপা খরা কাটিয়েছে বোলোনিয়া।  সেই সঙ্গে জন্ম দিয়েছে নতুন ইতিহাসের।

ইতালির শীর্ষ লিগ সিরি এ তে সাতবারের চ্যাম্পিয়ন বোলোনিয়া। তবে প্রতিযোগিতাটিতে তারা সবশেষ সাফল্য পেয়েছে ছয় দশকের বেশি সময় আগে সেই ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে। শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে এর আগে সবশেষ তারা শিরোপা স্বাদ পেয়েছিল এই ইতালিয়ান কাপেই, ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে।
সেই থেকে ৫১ বছর পর প্রতিযোগিতাটির ফাইনালে উঠেই বাজিমাত করেছে বোলোনিয়া। এটি ইতালিয়ান কাপে দলটির তৃতীয় শিরোপা। প্রথমবার তারা ট্রফি জয় করে ১৯৭০ সালে। বোলোনা হচ্ছে উত্তর ইতালির বিখ্যাত শহর। এখান থেকেই পৃথিবী পেয়েছে বোলোনিজ পিজ্জা কিংবা বোলোনিজ পাস্তার মতো অসামান্য কিছু। ইতিহাস আর ঐতিহ্যে ঠাসা সেই শহরটায় বরাবরই পর্যটকের আনাগোনা অবিরাম।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ইতালিয়ান ফুটবলের দাপুটে এক দল ছিল বোলোনিয়া। কিন্তু এসি মিলান, ইন্টার মিলান, জুভেন্টাস, ফিওরেন্তিনা, নাপোলিদের উত্থানের পর বোলোনিয়া কেবলই হয়েছে ইতিহাসের অংশ। সবশেষ শিরোপাটাও এসেছিল ১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে। এরপর থেকে ফুটবলের জন্য বোলোনিয়ার নাম উচ্চারণ হয়েছে কমই। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান হয়েছে দারুণ শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে। 
এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন বোলোনিয়ার কোচ ভিনসেঞ্জো ইতালিয়ানো। অথচ ফাইনালে হারটাই নিয়তি ছিল এই কোচের! ফিওরেন্টিনার কোচ থাকার সময় হেরেছিলেন টানা দুটি ইউরোপা কনফারেন্স লিগের ফাইনাল। একবার হেরেছেন ইতালিয়ান কাপের ফাইনালও। শিরোপার আক্ষেপটা অবশেষে দূর হয়েছে এই কোচের।

রেফারির শেষ বাঁশি বাজার পর কোচ ভিনসেঞ্জো ইতালিয়ানোকে কাঁধে চড়িয়ে উল্লাস করতে থাকেন বোলোনিয়ার ফুটবলাররা। শিরোপা জিতে উচ্ছ্বসিত ইতালিয়ানো বলেন, ‘তিন ফাইনালে হার ছিল তিনটি দুঃস্বপ্ন। সেটা পেছনে ফেলে বুক থেকে পাথর নামল যেন। এখন আমি উদ্যাপন করতে চাই।  এই দিনটার অপেক্ষায় ছিলাম অনেক দিন।’

×