
পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ শুরুর আগে স্বাগতিক অধিনায়ক এবং দুই আম্পয়ারের সঙ্গে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত
রাত পোহালেই পর্দা উঠছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসরের। বুধবার করাচিতে উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। ১৯৯৬ বিশ্বকাপের পর দীর্ঘ ২৯ বছরে দেশটিতে আইসিসির বৈষয়িক কোনো টুর্নামেন্ট এটি। ওয়ানডেতে সেরা আট দলের শ্রেষ্ঠত্বের আয়োজন ঘিরে শুধু করাচি, লাহোর আর পিন্ডিতেই নয়; পাকিস্তানজুড়ে সাজ সাজ রব।
অনেক প্রতিকূলতার পর পাওয়া মেগা ইভেন্ট স্মরণীয় করে রাখতে প্রস্তুত পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে দেশটির প্রশাসন। নিয়মিতই হচ্ছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মহড়া। আর মোহাম্মদ রিজওয়ান, সালমান আগাদের কণ্ঠে শিরোপা ধরে রাখার দৃপ্ত প্রত্যয়। এত কিছুর মাঝেও আয়োজকদের একমাত্র কষ্ট ‘ভারতের আচরণ’! হাইব্রিড মডেলে শত্রু দেশের ম্যাচগুলো হবে দুবাইয়ে।
অধিনায়কদের ফটোশূটে অংশ নিতে পাকিস্তানে যাননি রোহিত শর্মা, গাদ্দাফি স্টেডিয়ামেও ওড়েনি ভারতের পতাকা! ১৯৯৬ বিশ্বকাপে আমাদের স্টেডিয়ামগুলো শেষবার সংস্কার হয়েছিল। এরপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের গতি অনেক বেড়েছে। আমরা জানি, এই পরিস্থিতিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন পাকিস্তানের জন্য সেরা সক্ষমতা দেখানোর সুযোগ।
খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, ভক্ত সবার চাহিদা পূরণে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আমাদের কর্মীরা লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়াম এবং করাচি স্টেডিয়ামকে বিশ্বমানের আয়োজনের কেন্দ্রস্থল হিসেবে গড়ে তুলেছেন। আমরা প্রস্তুত, বলছিলেন পিসিবির প্রেসিডেন্ট মহসিন রেজা নাকভি। ২০০৯ সালে সফরকারী শ্রীলঙ্কা দলের ওপর জঙ্গি হামলার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাকিস্তানের গতি থমকে গিয়েছিল।
তবে, ২০১৭ সাল থেকে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) আয়োজন থেকে শুরু করে ভারত ছাড়া সব টেস্ট দলের বিরুদ্ধে সফলভাবে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ আয়োজন করে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড তাদের দেশকে ক্রিকেটের মানচিত্রে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। যা পাকিস্তানকে আয়োজক হিসেবে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। নাকভি জোরের সঙ্গেই সেটি বলেছেন। তবে চিরশত্রু ভারতের আচরণ রয়ে গেছে আগের মতোই।
পাকিস্তান সর্বশেষ ভারত সফরে ওয়ানডে খেলেছে ২০১২-২০১৩ মৌসুমে। এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপের মতো আইসিসির বৈষয়িক আসরেই এখন কেবল মুখোমুখি হচ্ছে দুই দেশ। এমনকি আইসিসি টুর্নামেন্টের আগে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর অধিনায়কেরা আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনে অংশ নিলেও ভারতের রোহিত শর্মা সেখানে যাচ্ছেন না। এমন প্রেক্ষাপটে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে দেখা গেল অন্য চিত্র।
আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও পাকিস্তানের পতাকা আছে। কিন্তু ভারতের তেরঙা পতাকা নেই। এ নিয়ে ভক্ত-সমর্থকদের মাঝে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সরকারের অনুমতি না থাকায় বিসিসিআই ভারত ক্রিকেট দলকে পাকিস্তানে পাঠাবে না জানানোর পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ঘিরে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে সূচিও ঘোষণা করা যায়নি।
শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিসহ পাকিস্তান ও ভারতে আয়োজিত সামনের চারটি আসর ‘হাইব্রিড মডেলে’ আয়োজনের সমঝোতায় নির্ধারিত সময়ে টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ভারত ক্রিকেট দল পাকিস্তানে যাবে না বলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির একটি সেমিফাইনালও ফাইনাল কোথায় হবে, এখনো নিশ্চিত হয়নি।
এবারের আসরে ভারত খেলছে ‘গ্রুপ-এ’তে। যেখানে ২০ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। এই গ্রুপের অপর দুই দল পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তানের সহঅধিনায়ক সালমান আগা বলেছেন, শুধু ভারত ম্যাচ নয়, তাদের চোখ ট্রফিতে। শিরোপা ধরে রাখতে প্রত্যয়ী মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল।
‘গ্রুপ-বি’ তে আছে আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চ ফাইনাল পর্যন্ত ১৯ দিনে মোট ম্যাচ ১৫টি।