ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বড় জয়ে সিরিজে সমতা আনল বাংলাদেশ

মোঃ মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ০০:০২, ১০ নভেম্বর ২০২৪

বড় জয়ে সিরিজে সমতা আনল বাংলাদেশ

বড় জয়ে সিরিজে সমতা আনল বাংলাদেশ

৩ ম্যাচের সিরিজে সমতা এনেছে বাংলাদেশ। শনিবার রাতে শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আফগানিস্তানকে হারিয়েছে ৬৮ রানের বড় ব্যবধানে। আগে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৫২ রানের লড়াকু সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। জবাবে ৪৩.৩ ওভারে ১৮৪ রানে গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান। ফলে ৩ ম্যাচের সিরিজে এখন ১-১ সমতা। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তান ৯২ রানের জয় পায়।

এদিন টস জিতেই আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ২ পরিবর্তন নিয়ে নামে বাংলাদেশ, আর অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে নামে আফগানিস্তান। ওপেনার তানজিদ বেশ ভালোভাবেই শুরু করেন, সৌম্য ছিলেন কিছুটা ধীরস্থির। তবে তানজিদ ১৭ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে ২২ রান করে মোহাম্মদ গজনফরের অফস্পিনে সাজঘরে ফেরেন। 

দলীয় ২৮ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গলেও সৌম্য ও অধিনায়ক শান্ত পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভারে ৫৯ রান তুলে ফেলেন। ফলে ভালো সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় বাংলাদেশ। দু’জন দ্বিতীয় উইকেটে ৭১ রানের জুটি গড়েন। 

১৯তম ওভারে সৌম্য ৪৯ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ৩৫ রানে বিদায় নেন রশিদ খানের লেগস্পিনে এলবিডব্লিউ হয়ে। তবে তৃতীয় উইকেটে মেহেদি হাসান মিরাজ যোগ দিয়ে আরো ৫৩ রানের জুটি গড়েন শান্তর সঙ্গে। রানের গতি কম থাকলেও এতে ক্যারিয়ারের নবম অর্ধশতক পেয়ে যান শান্ত ৭৫ বলে। 

মিরাজ ৩৩ বলে ২২ রানে রশিদের স্পিনে বোল্ড হলে লড়াইটা শান্তই চালিয়েছেন। কিন্তু তিনিও ১১৯ বলে ৬ চার, ১ ছক্কায় ৭৬ রানে বিদায় নেন ৪১তম ওভারে। নানজেয়ালিয়া খরোতের বাঁহাতি স্পিনে একই ওভারে বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহও (৩)। ৬ উইকেটে ১৮৪ রান তখন বাংলাদেশের। বড় কিছু করার চ্যালেঞ্জে পড়ে বাংলাদেশ। 

কিন্তু জাকের-নাসুম ৪৬ রানের জুটি গড়েন মাত্র ৪১ বল থেকে। গজনফরের অফস্পিনে নাসুম ২৪ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় ২৫ রানে ফিরে যান। কিন্তু জাকের ২৭ বলে ১ চার, ৩ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৩৭ রানে। তাই ৭ উইকেটে ২৫২ রানের লড়াকু পুঁজি পায় বাংলাদেশ। শেষ ৫ ওভারেই বাংলাদেশ তোলে ৫২ রান। নানজেয়ালিয়া খরোত ৩টি এবং রশিদ খান, গজনফর ২টি করে উইকেট নেন।

জবাব দিতে নেমে বেশ দেখেশুনেই এগোতে থাকে আফগানিস্তান। কিন্তু চতুর্থ ওভারে রহমানউল্লাহ গুরবাজকে (২) সাজঘরে পাঠান তাসকিন আহমেদ। দলীয় ১৮ রানে প্রথম উইকেট হারালেও দ্বিতীয় উইকেটে ৫২ রানের জুটি গড়েন সেদিকউল্লাহ অটল ও রহমত শাহ। 

তবে বাংলাদেশের বোলাররা দারুন লাইন-লেংন্থে বোলিং করে রানের গতি কমিয়ে রাখতে পেরেছেন। তাই পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভারে মাত্র ৪০ রান করতে পেরেছে আফগানরা। ১৭তম ওভারে নাসুম বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই জুটি ভেঙ্গে দেন। সাজঘরে ফেরেন ৫১ বলে ৫ চারে ৩৯ রান করা সেদিকউল্লাহ। 

এরপর হাশমতউল্লাহ শহীদি ও রহমত তৃতীয় উইকেটে ৪৮ রান যোগ করে আফগানিস্তানের জয়ের আশা টিকিয়ে রাখেন। কিন্তু মুস্তাফিজুর রহমান বোলিংয়ে এসে আঘাত হানেন। শহীদি ৪০ বলে ১ চারে ১৭ রানে বিদায় নেন। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে আফগানরা। ৩০তম ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে (০) বোল্ড করে দেন নাসুম এবং রহমত ৭৬ বলে ৫ চারে ৫২ করে রানআউট হলে বিপাকে পড়ে আফগানিস্তান। 

এরপর মোহাম্মদ নবি ও গুলবাদিন নাইব জুটি বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। তবে ৪৪ রানের সেই জুটি ভেঙ্গেছেন শরিফুল ইসলাম। ৩৭তম ওভারে তাকে ১ টি করে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে ১২ রান তুলে নিলেও নাইব সাজঘরে ফিরেছেন তাওহিদ হৃদয়কে ক্যাচ দিয়ে। তিনি ২৫ বলে ৪ চার, ১ ছয়ে ২৬ রান করেন। 

৩৮তম ওভারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু এনে দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তিনি বোল্ড করে দেন আগের ম্যাচে ৮৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলা মোহাম্মদ নবিকে (২১ বলে ১৭)। এরপর ধসে গেছে আফগানিস্তানের টেলএন্ড। মাত্র ২১ রানের মধ্যেই ৫ উইকেট হারিয়ে আফগানিস্তানের ইনিংস থামে ৪৩.৩ ওভারে ১৮৪ রানে। নাসুম ঠিক ১ বছর পর ওয়ানডে খেলতে নেমে ৩ উইকেট নিয়েছেন। ২টি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজ ও মিরাজ।

×