ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ইতিহাস গড়ে ফাইনালে লেভারকুসেন

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:১৬, ১০ মে ২০২৪

ইতিহাস গড়ে ফাইনালে লেভারকুসেন

.

অবিশ্বাস্য একটা মৌসুম অতিবাহিত করা বেয়ার লেভারকুসেন আরও একটি স্বর্ণসাফল্যের দ্বারপ্রান্তে। নিজেদের ক্লাব প্রতিষ্ঠার ১২০ বছরের ইতিহাসে গত এপ্রিল মাসে জার্মান বুন্দেসলিগার শিরোপা জিতেছে দলটি। সাফল্যের এ ধারাবাহিকতা উয়েফা ইউরোপা লিগেও ধরে রেখেছে কোচ জাবি অ্যালানসোর দল। এবার ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা আসরের ফাইনালে নাম লিখিয়েছে লেভারকুসেন। 
বৃহস্পতিবার রাতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে ইতালিয়ান ক্লাব এ এস রোমার সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে এ কৃতিত্ব দেখিয়েছে জার্মান ক্লাবটি। ঘরের মাঠ লেভারকুসেনের বে অ্যারানায় হারতে হারতে ম্যাচটি ড্র করেছে স্বাগতিকরা। যে কারণে ইতিহাস গড়ে ফাইনালে উঠেছে তারা। নিজ মাঠে ড্র করলেও গত ২ মে রোমে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে রোমাকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল লেভারকুসেন। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-২ গোলের জয়ে ফাইনালের টিকিট কেটেছে বিস্ময় জাগানো দলটি। শিরোপা লড়াইয়ে লেভারকুসেনের প্রতিপক্ষ আরেক ইতালিয়ান ক্লাব আটালান্টা। সেমির ফিরতি লেগে ফরাসি ক্লাব অলিম্পিক মার্শেইকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে তারা। এর আগে দুদলের প্রথম লেগের দ্বৈরথ ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। যে কারণে দুই লেগ মিলিয়ে আটালান্টার জয় ৪-১ গোলে। ফাইনাল হবে আগামী ২২ মে আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে। 
অবিশ্বাস্য ছুটে চলায় আরও একবার শেষ সময়ে গোল করে অপ্রতিরোধ্য অপরাজেয় পথচলা অব্যাহত রেখে রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি ইউরোপা লিগের ফাইনালে উঠেছে লেভারকুসেন। কয়েকবার এরকম হলে বিস্মিত হতে হয়। কিন্তু ম্যাচের পর ম্যাচ, দিনের পর দিন বারবার যখন হতে থাকে তখন কি বলবেন! লেভারকুসেন যা করে চলেছে, বিস্ময়ের নতুন ঠিকানা তাতে মিলছে আর খুঁজতে হচ্ছে নতুন সব বিশেষণ। এ ম্যাচেও আরেকবার সেটা দেখিয়েছে জার্মান ক্লাবটি। নাটকীয় ড্রয়ের পর ৫৯ বছর পুরনো রেকর্ড নতুন করে লিখেছে তারা। অবিশ্বাস্য মৌসুমের শেষ প্রান্তে চলে আসা লেভারকুসেন অপরাজিত আছে টানা ৪৯ ম্যাচ। তারা টপকে গেছে ১৯৬৩-১৯৬৫ সময়ে পর্তুগালের ক্লাব বেনফিকার ৪৮ ম্যাচ অপরাজিত থাকার ইউরোপিয়ান রেকর্ড।
লেভারকুসেনের অপরাজেয় পথচলা শেষ হওয়ার বাকি ছিল মাত্র কয়েক সেকেন্ড। আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার লিয়েন্দ্রে প্যারাডেসের  দুটি পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর প্রথম লেগের ব্যবধান ঘুচিয়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখছিল রোমা। ৮১ মিনিট পর্যন্ত ইতালিয়ান দলটি এগিয়ে ছিল ২-০ গোলে। এরপরই রোমার ডিফেন্ডার জানলুকা ম্যানচিনির আত্মঘাতী গোলে লেভারকুসেনকে সুযোগ করে দেয় ম্যাচে ফেরার। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষেও অবশ্য ব্যবধান ছিল ২-১। যোগ করা হয় আরও সাত মিনিট। সেটির সপ্তম মিনিটে ইয়োসিপ স্টানিসিচ গোল করে উল্লাসে ভাসান ঘরের মাঠের দর্শকদের। বায়ার্ন মিউনিখ থেকে ধারে আসা ডিফেন্ডারের গোলে অপরাজেয় পথচলা ধরে রাখে লেভারকুসেন। চলতি মৌসুমে কতবার এভাবে পিছিয়ে পড়েও ঘুরে দাঁড়িয়েছে দলটি, কতবার শেষ সময়ের গোলে জিতেছে বা পরাজয় এড়িয়েছে সেই হিসাব রাখাও কঠিন।
লেভারকুসেন এখন এটাকে যেন নিয়ম বানিয়ে ফেলেছে। তার পরও ম্যাচ শেষে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছিলেন না দলটির অধিনায়ক গ্রানিট জাকা। তিনি বলেন, এ ধরনের আবহের স্বপ্ন দেখে থাকে সবাই। এ ধরনের ম্যাচের স্বপ্ন দেখে থাকে। ছেলেবেলায়, স্বপ্ন দেখার দিনগুলোতে এসব ম্যাচের কথাই সবাই ভাবে। খেলা শেষের সামান্য আগে সমতা ফেরানো এবং এরপর ফাইনালে যাওয়া এটা অবিশ্বাস্য। 

×