
ফটো সেশনে দুই অধিনায়ক লিটন কুমার দাস ও লুক ফার্গুসন
১০ বছর পর আবার নিউজিল্যান্ডকে পরিচিত আর পয়মন্ত উইকেটে লড়াইয়ে পাচ্ছে বাংলাদেশ দল। আগের তুলনায় এবারই সবচেয়ে খর্ব শক্তি নিয়ে বাংলাদেশ সফরে ওয়ানডে সিরিজ খেলবে কিউইরা। তাই মোক্ষম সুযোগ আরেকবার নিউজিল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করার।
মিরপুরে এখন পর্যন্ত স্বাগতিকদের বিপক্ষে মাত্র ১ ওয়ানডে জিতেছে নিউজিল্যান্ড দল। সেটিও ১৫ বছর আগে। সেই মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। সেজন্য আরেকবার তাদের হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্য নিয়েই নামবে স্বাগতিকরা। আজ বেলা ২টায় প্রথম ওয়ানডে শুরু। দিবারাত্রির এই ম্যাচটিতে অবশ্য বৃষ্টির হানায় বারবার বিঘœতা সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ দল অনুশীলনও ঠিকমতো করতে পারেনি।
সেই দলে নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, অভিজ্ঞ ব্যাটিং স্তম্ভ মুশফিকুর রহিম এবং ৩ অপরিহার্য, নির্ভরযোগ্য পেসার তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ নেই। তাই জয় দিয়ে শুরু করা বেশ কঠিনই হবে। এ ছাড়া ইনজুরি কাটিয়ে আড়াই মাস পর অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল, ৪ মাস পর দলে ফেরা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদসহ বাকিদের ফর্মে ফেরার লড়াই। তাই অনেক পরীক্ষা রয়েছে এই সিরিজে।
এবার সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলে ৫ জন মাত্র বিশ^কাপ স্কোয়াডের আছেন। বাকিরা জাতীয় দলে যাওয়া-আসার মধ্যে রয়েছেন। তবে নিউজিল্যান্ডের পেস বিভাগ অত্যন্ত শক্তিধর। কারণ ট্রেন্ট বোল্ট, কাইল জেমিসন, অ্যাডাম মিলনে ও অধিনায়ক লকি ফার্গুসন আছেন।
এ ছাড়া অলরাউন্ডার রাচিন রবীন্দ্র ও স্পিনার ইশ সোধি বাংলাদেশ দলের ব্যাটারদের যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবেন। আর বাংলাদেশ দলে যেহেতু নিয়মিত ৬ ক্রিকেটার নেই। সম্প্রতি এশিয়া কাপেও ব্যাটাররা ভালো করতে পারেননি। একমাত্র তাওহিদ হৃদয় আছেন ফর্মে। এ ছাড়া লিটন কুমার দাস, তানজিদ হাসান তামিম, এনামুল হক বিজয়রা নিজেদের সঙ্গে লড়াই করছেন।
তাই কিউই বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে বড় চ্যালেঞ্জ হবে তাদের ভালো করা। এ ছাড়া দীর্ঘ ইনজুরি কাটিয়ে আড়াই মাস পর আবার অভিজ্ঞ তামিম এই ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করবেন। লম্বা সময় পর ইনজুরি কাটিয়ে ফিরে তিনি কতটা ভালো করতে পারবেন সেটি নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
একই চিন্তা অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকারদের নিয়েও। তাদের জন্য তাই বড় পরীক্ষা। বিশ^কাপের দল এখনো ঘোষণা করা হয়নি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ওয়ানডের জন্য যে স্কোয়াড দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে কয়েকজন মূল স্কোয়াডে জায়গা পাবেন। সেই লড়াইও রয়েছে ক্রিকেটারদের মধ্যে।
বিশেষ করে নজরে থাকা মাহমুদুল্লাহ, সৌম্য, ডানহাতি তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিব ও প্রথমমবার ওয়ানডে দলে টেস্ট পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ সুযোগ পেয়েছেন। লড়াইটা তাদের মধ্যেও।
দীর্ঘ সময় পর এশিয়া কাপে দুই ওয়ানডে খেলে সন্তোষজনক পারফর্ম্যান্স করলেও শেখ মেহেদি হাসান বিশ^কাপে জায়গা পেতে কিউইদের বিপক্ষে সিরিজে ভালো করতে হবে। বাংলাদেশ দলে যখন এত পরীক্ষা, তখন নিউজিল্যান্ড দলে তেমন পরীক্ষা নেই। কারণ ৫ জন বিশ^কাপ স্কোয়াডে আছেনই। বাকিদের মধ্যে অনেকেই জাতীয় দলের হয়ে বিভিন্ন ফরম্যাটে খেলেন নানা সময়ে। এর মধ্যে হেনরি নিকোলস, টম ব্লান্ডেল, ফিন অ্যালেন আছেন।
তাই বাংলাদেশের দ্বিতীয় সারির বোলিং আক্রমণের জন্য বেশ ভালো ব্যাটিং লাইনআপও আছে কিউইদের। তবে বাংলাদেশের মাটিতে ওয়ানডে পারফর্ম্যান্স মোটেও ভালো নয় তাদের। সবমিলিয়ে ৩৮ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে ২৮ জয় কিউইদের, বাংলাদেশের মাত্র ১০টি।
কিন্তু ২০০৮ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশে এসে স্বাগতিকদের বিপক্ষে জিততে পেরেছে নিউজিল্যান্ড। সবমিলিয়ে বাংলাদেশে ১৩ ওয়ানডে খেলে ৫ জয় কিউইদের, বাকি ৮টি হেরেছে তারা।
মিরপুরে আরো দুর্বিষহ স্মৃতি আছে কিউদের। এখানে ৮ ওয়ানডে খেলে মাত্র ১ জয়ের বিপরীতে ৭ বারই হেরেছে তারা। তাই ফেভারিট হিসেবেই নামবে বাংলাদেশ। এই সিরিজেও সর্বশেষ ২০১০ সালে ৪-০ ও ২০১৩ সালে ৩-০ ব্যবধানে জেতা টাইগাররা চাইবে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করতে। সেক্ষেত্রে র্যাঙ্কিংয়ে ছয়ে ওঠার সুযোগ আছে। সেই লক্ষ্যেই নামবে বাংলাদেশ।