
ছবি: সংগৃহীত
শিশুদের চঞ্চলতা সবসময়ই বাবা-মায়ের জন্য একটি আলোচনার বিষয়। অনেক সময় দেখা যায়, সন্তান অস্বাভাবিকভাবে বেশি দৌড়াচ্ছে, লাফাচ্ছে, বসে থাকতে পারছে না বা মনোযোগ ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। প্রশ্ন ওঠে-এটা কি শুধুই বয়সজনিত স্বাভাবিক আচরণ, নাকি এটি হাইপারএক্টিভিটি বা অন্য কোনো বিকাশগত সমস্যার লক্ষণ?
এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের মধ্যে স্বাভাবিক চঞ্চলতা একটি স্বাস্থ্যকর মানসিক বিকাশের চিহ্ন। তবে এটি যদি অতিরিক্ত মাত্রায় হয় এবং দৈনন্দিন কাজকর্ম, ঘুম, পড়াশোনা কিংবা সামাজিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধা সৃষ্টি করে, তবে তা হাইপারএক্টিভ ডিসঅর্ডার -এর লক্ষণ হতে পারে।
শিশুর বিকাশ পর্যবেক্ষণের যে লক্ষণগুলো খেয়াল রাখতে বলেন বিশেষজ্ঞরা:
মনোযোগের ঘাটতি: শিশুটি কি একটানা কোনো কাজে মনোযোগ দিতে পারে না?
অতিরিক্ত দৌড়ঝাঁপ ও উচ্ছ্বাস: এমনকি ঘরের ভেতরেও কি অকারণে লাফালাফি করে?
নিয়ম মানতে অনীহা: সহজ নিয়ম বা নির্দেশনা মানতে শিশুটি কি বারবার ব্যর্থ হয়?
বসতে বা অপেক্ষা করতে না পারা: শিশু কি কখনোই শান্তভাবে বসে থাকতে পারে না বা তার পালা আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারে না?
সহপাঠীদের সাথে সমস্যা: স্কুল বা খেলার মাঠে অন্যদের সাথে সম্পর্ক রাখতে সমস্যা হয় কি?
বিশেষজ্ঞরা জানান, “অভিভাবকদের প্রথম করণীয় হলো শিশুকে পর্যবেক্ষণ করা এবং তাদের আচরণ নোট করে রাখা। প্রয়োজনে স্কুল শিক্ষক ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথেও মতামত বিনিময় করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি একটি শিশুর আচরণ তার বয়স অনুযায়ী স্বাভাবিক না হয় এবং ৬ মাসের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন পরিবেশে (বাড়ি, স্কুল, খেলার মাঠ) একই ধরনের সমস্যা দেখা যায়, তাহলে অবশ্যই শিশুবিকাশ বিশেষজ্ঞ বা শিশু মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নেওয়া উচিত।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সব শিশুই আলাদা এবং তাদের বিকাশের গতি ভিন্ন হতে পারে। তাই চঞ্চলতা দেখেই আতঙ্কিত হওয়া উচিত নয়। সঠিক পর্যবেক্ষণ ও সময়মতো পদক্ষেপ নিলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সুস্থভাবে পরিচালনা করা সম্ভব।
মিরাজ খান