ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

শিশুর পুষ্টিকর খাবারের স্বাস্থ্যকর গাইডলাইন

প্রকাশিত: ১০:১৯, ১২ মে ২০২৫

শিশুর পুষ্টিকর খাবারের স্বাস্থ্যকর গাইডলাইন

ছবি :সংগৃহীত

শৈশব থেকেই শিশুদের জন্য সচেতন খাদ্য পছন্দ করা তাদের মানসিক এবং শারীরিক বিকাশের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। প্রাথমিক বিকাশের পর্যায়েই বাচ্চাদের স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাবারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া অপরিহার্য, যাতে এই অভ্যাসটি ধীরে ধীরে এবং ধীরে ধীরে তাদের প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায়ও থাকে।

শিশুদের খাবারের তালিকা বড়দের খাবারের তালিকা থেকে অনেকটাই আলাদা হয়। শিশুদের শরীরের গঠন এবং মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য সঠিক পুষ্টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের খাবার প্রাকৃতিক, পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর হওয়া উচিত যাতে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে।

শিশুর খাবারের তালিকা:
শিশুর খাবারের মধ্যে এমন কিছু উপাদান থাকা উচিত যা তার দৈনন্দিন পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। উদাহরণস্বরূপ:

  • রুটি এবং সবজি
  • ডাল-ভাত
  • খিচুড়ি

এই ধরনের খাবার শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি এবং মস্তিষ্কের উন্নয়নের জন্য আদর্শ। এ ধরনের খাবারে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন এবং খনিজ থাকে, যা শিশুর স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। এসব খাবার খেলে শিশুর ঘুমও ভালো হয়।

অনেক সময় দেখা যায়, শিশুদের খাবারের মেন্যু একঘেয়ে হয়ে যায়, তাই সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে ভিন্ন ভিন্ন খাবার দেওয়া উচিত। পাশাপাশি, রান্নায় স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যেমন ঘি যোগ করতে ভুলবেন না, যা শিশুর জন্য উপকারী।

যেসব খাবার শিশুকে দেওয়া উচিত নয়:
শিশুকে প্রতিদিন একাধিক ধরনের খাবার দেওয়া উচিত নয়। বরং, একেক দিন একেক ধরনের খাবার দিয়ে তার পুষ্টির চাহিদা পূরণ করুন।

  • বাইরের খাবার

বাড়িতে তৈরি খাবারই সবচেয়ে ভালো। বাইরের খাবারে শিশুর পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা পূরণ হয় না এবং তা শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

  • নুডলস, পাস্তা এবং হিমায়িত খাবার

এসব খাবারে প্রচুর চিনি এবং সংরক্ষণকারী উপাদান থাকে, যা শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলো শিশুর দৈনন্দিন পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম নয়।

  • ফাস্টফুড

বাইরের ফাস্টফুডের জন্য শিশুকে অভ্যস্ত করা ঠিক নয়, কারণ এসব খাবারে পুষ্টির অভাব থাকে এবং এগুলো শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
বাইরের খাবারের অভ্যাস:
মাসে দু'বারের বেশি শিশুকে বাইরে হোটেলে খাবার খেতে নিয়ে যাওয়া উচিত নয়। বাইরের খাবারে শিশুর পুষ্টির প্রয়োজনীয় উপাদান থাকে না, এবং এর ফলে শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

শিশুদের ভালো খাবারে আগ্রহ তৈরি করা:
শিশুকে ছোট থেকেই ঘরের খাবারে অভ্যস্ত করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় যে শিশুরা ঘরের খাবার খেতে চায় না এবং বাহিরের খাবারের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে, সন্তানের খাবারের প্রতি ভালোবাসা এবং পছন্দ তৈরি করার জন্য চেষ্টা করুন।

শিশু বাচ্চারা খেতে না চাওয়ায় বাহিরের খাবার খেতে দেওয়া তাদের জন্যই ক্ষতিকর। এর ফলে বাচ্চারা বাইরের খাবারের জন্য জেদ করে এবং ঘরের খাবারের স্বাদ নিতে চায় না। বাচ্চাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, মস্তিষ্কের উন্নয়ন সঠিকভাবে হয় না এবং শারীরিক সক্ষমতা কমে যায়।

শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের জন্য সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করা জরুরি। তাই, শিশুর খাবারে ভারসাম্যপূর্ণ পুষ্টি এবং বৈচিত্র আনুন। ঘরের তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার শিশুর জন্য সবথেকে ভালো, এবং বাইরে খাওয়া খাবারের জন্য তাদের অভ্যস্ত করা উচিত নয়।

এতে শিশুর স্বাস্থ্য ও বিকাশ সুরক্ষিত থাকবে এবং তার ভবিষ্যত জীবনের জন্য উপকারী হবে।

সা/ই

×