ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

শোভনার ব্রিজ দূর করবে হাজারো মানুষের দুর্ভোগ

আরিফুর রহমান, খুলনা

প্রকাশিত: ১১:৫২, ১২ মে ২০২৫

শোভনার ব্রিজ দূর করবে হাজারো মানুষের দুর্ভোগ

ছবি :সংগৃহীত

ডুমুরিয়ার শোভনায় ভদ্রা নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলছে। ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন এলাকাবাসী। কারণ এই ব্রিজই দূর করতে পারে হাজারো মানুষের দুর্ভোগ।

ভদ্রা নদী খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা ইউনিয়নের কোলঘেঁসে বয়ে চলেছে। ব্রিজটির বদৌলতে গ্রামবাসীর যাতায়াত দুর্ভোগ অনেকটা দূর হবে।

ব্রিজ নির্মাণের কাজ দুই বছর যাবৎ চলমান। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে ব্রিজ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়া নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে সংশয়। তবে সঠিক সময়ে নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, ডুমুরিয়া উপজেলার সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে শোভনা ইউনিয়নের কদমতলা ঘাট। কদমতলা ঘাট পাড় হয়ে কাঠালতলা ঘাট। কাঠালতলা—কদমতলা দুই পাড় মিলে আঠারোটি গ্রামজুড়ে শোভনা ইউনিয়ন গঠিত। শোভনা ইউনিয়নে প্রায় আঠাশ হাজার মানুষ বসবাস করেন। কাঠালতলা ঘাট পাড় হয়ে কদমতলা হয়ে ডুমুরিয়া সদরে এলাকাবাসীর প্রতিনিয়ত নানা কাজে যেতে হয়।

স্থানীয়রা জানান, কাঠালতলা ঘাট পাড় হয়ে আসতে মানুষের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। ট্রলারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বৃষ্টির দিনে এই দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়। অসুস্থ রোগীদের যাতায়াতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। বৃষ্টির দিনে কৃষকদের ভদ্রা নদী পাড় হয়ে ফসল নিয়ে শহরে আসতে পারেন না। অনেক দাবির পর এ ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ব্রিজটি নির্মাণ হলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দূর হবে।

কদমতলা ঘাটে ট্রলারের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা মরিয়ম খাতুন বলেন, ছেলেকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে ডুমুরিয়া উপজেলায় গিয়েছিলাম। সকাল ৭টায় বের হয়ে ট্রলার ধরতে হয়েছে। নইলে ৯টার আগে আর ট্রলার পেতাম না। আর ডাক্তার দেখিয়ে এসে এখন সোয়া এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি ট্রলারের অপেক্ষায়। তবে ব্রিজ নির্মাণ হলে এ ভোগান্তি আর থাকবে না বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

পল্লীশ্রী ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বী বলেন, ভদ্রা নদী পাড়াপাড়ে আমাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রলারের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তবে ব্রিজটি আমাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। দুই বছর যাবৎ ব্রিজ নির্মাণ কাজ চললেও দৃশ্যমান কাজ খুবই নগণ্য। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, এ ব্রিজ নির্মাণ কাজ কালক্ষেপণ না করে আরো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ডুমুরিয়ার ভদ্রা নদীর ওপর এ ব্রিজ নির্মাণ কাজ চলছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ব্রিজটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী ২০২২ সালে দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পান দরদাতা কনফিডেন্স গ্রুপ। কনফিডেন্স গ্রুপ ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করে। এ প্রকল্পটি তিন বছর মেয়াদী। বর্তমানে ব্রিজ নির্মাণ কাজ দুই বছর অতিবাহিত হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আর মাত্র এক বছরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হবে।

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার আজিজুর রহমান সৈকত জানান, সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আমরা ২০২৩ সালের এপ্রিলে ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ প্রায় ৪৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ আর এক বছরের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।

ডুমুরিয়া এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, শোভনায় ৪৬১ মিটার ব্রিজ নির্মাণ কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। এই প্রকল্পটির মেয়াদ তিন বছর। কাঠামোগত কাজ চলছে। তিনি আরও বলেন, ব্রিজ নির্মাণ কাজ সঠিক সময়ে সম্পন্ন হবে। এখন পর্যন্ত নির্মাণ কাজে কোনো জটিলতা দেখা যায়নি বলে তিনি জানান।

সা/ই

×