
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে অস্থিরতার মধ্যে শান্তির খোঁজে লন্ডনের কবুতরের কাছে আশ্রয় খুঁজে পেয়েছেন জেনি ব্রেনান এবং জেকব পিটার। তারা নিয়মিত শহরের বিপদগ্রস্ত কবুতর উদ্ধার ও চিকিৎসার কাজ করেন- নিঃশব্দে, নিবেদিতভাবে।
শহরের কবুতরদের একটি সাধারণ কিন্তু গুরুতর সমস্যা হলো “স্ট্রিংফুট”। রাস্তাঘাটের আবর্জনার-যেমন সুতা, ফিশিং লাইনের টুকরো বা মানুষের চুল- জালে পায়ে জড়িয়ে গিয়ে কবুতরের পা কেটে যেতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে এটি কবুতরের একটি আঙুল, এমনকি পুরো পা হারানোর কারণও হতে পারে।
জেনি ব্রেনান বলেন, “আমার নিজের জীবনে, প্রিয়জনদের জীবনে এবং পুরো দুনিয়াতেই অনেক সমস্যা আছে, যেগুলো আমি বদলাতে পারি না। কিন্তু আমি চাইলে একটা কবুতরের জীবন বাঁচাতে পারি, তার পা রক্ষা করতে পারি, কিংবা তাকে আবার স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে সাহায্য করতে পারি। হয়তো এটা ছোট কাজ, কিন্তু সেই কবুতরের জন্য এটি বিশাল এক পার্থক্য।”
উদ্ধার অভিযানে জেনি ও পিটার কবুতরকে বীজ ছড়িয়ে কাছে টানেন, তারপর একটি কিচেন তোয়ালে দিয়ে আলতোভাবে ঢেকে ফেলেন। এরপর কাঁচি বা প্লায়ার্স ব্যবহার করে পা থেকে আটকে থাকা কিছু সরিয়ে দেন।
ব্রেনান বলেন, “এটা পুরোপুরি মানুষের তৈরি সমস্যা। তাই আমার মনে হয়, এই সমস্যার সমাধানে আমাদের দায়িত্ব নেওয়া উচিত।”
জেনির কবুতরদের সঙ্গে পরিচয় হয় কোভিড-১৯ লকডাউনের সময়, যখন তিনি একটি রিপোর্টে পড়েন- কবুতররা খাবার না পেয়ে না খেয়ে থাকছে। এরপর তিনি কবুতরদের খাওয়াতে শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে তাদের শারীরিক সমস্যাও চোখে পড়ে। তখন তিনি ফেসবুকের মাধ্যমে পিটারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, যিনি তখন থেকেই কবুতর উদ্ধার করতেন।
এখন তারা প্রতি সপ্তাহে তিন থেকে চারবার কবুতরদের সাহায্যে বের হন। অনেক সময় সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তারা উদ্ধারে যান।
জেনি বলেন, “কবুতরদের যত ভালোবাসি, ততই মনে হয় শহরের প্রতিটি জায়গায় আমার ছোট ছোট বন্ধু আছে। কোনো ব্যস্ত দিনে, যদি অনেক চাপের মধ্যে থাকি, আর হঠাৎ দেখি কয়েকটা কবুতর রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে- সেই মুহূর্তেই আমার মন ভালো হয়ে যায়।”
ছোট পাখির বড় আশ্রয় হয়ে উঠেছেন এই দুই তরুণ। তারা দেখিয়ে দিচ্ছেন- সহানুভূতির পরিসর কতটা বিস্তৃত হতে পারে।
সূত্র: https://shorturl.at/SfZHe
মিরাজ খান