ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ
পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নিকট “তিন পার্বত্য জেলা নিয়ে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের প্রস্তাব” করার দাবি করেছে। এই প্রস্তাবের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার একটি গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্রের তীব্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ। তারা অভিলম্বে ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন।
সোমবার (১২ মে) পিসিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে রাঙ্গামাটি শহরে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলটি রাঙ্গামাটি পৌরসভার প্রঙ্গল থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বনরূপায় এসে হাজারো মানুষ সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে পিসিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি মো: আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও সহ-সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন এর সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেছেন পিসিএনপি'র কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান, প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি'র রাঙ্গামাটি সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, পিসিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে, তা আর কোনও অবস্থাতেই অস্বীকার করা সম্ভব নয়। বিশেষত, আলী রিয়াজের নেতৃত্বে গঠিত ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’-এর সঙ্গে শনিবার ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর আলোচনার পর, পুরো পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। কমিশন কি সত্যিই জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে, না সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিক বৈধতা দিয়ে তাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ করে দেশের নিরাপত্তা ও শান্তির প্রতি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে?
ইউপিডিএফ, একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল। পার্বত্য চট্টগ্রামে যার শেকড় রয়েছে অত্যাচার, হত্যাকাণ্ড, অপহরণ এবং চাঁদাবাজির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড, সেই দলটিকে এখন রাজনৈতিক দল হিসেবে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। দলটির অন্যতম নেতা মাইকেল চাকমা, যার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যাকাণ্ড, মানুষকে অপহরণ করা, চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
দেশের অখণ্ডতা পার্বত্য চট্টগ্রামকে রক্ষায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করার জোর দাবি জানান। পিসিসিপি'র মহা সমাবেশ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানান। গুলোর মধ্যে রয়েছে ইউপিডিএফ, জেএসএস ও কেএনএফ সহ পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সকল সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
দেশদ্রোহী মাইকেল চাকমা, সন্ত লারমা, প্রসীত খীসা, প্রকৃত রঞ্জন চাকমা, দেবাশীষ রায়, ইয়েন ইয়েন সহ পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সকল গডফাদারদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
ঐকমত্য কমিশন থেকে ড. ইফতেখারসহ পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহযোগীদেরকে অপসারণ করতে হবে। সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান বন্ধে নতুন করে বিজিবি'র বিওপি স্থাপন করতে হবে। পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রীতি বজায় রাখতে ১৯০০ সালের শাষনবিধি বাতিল করে বৈষম্যহীন পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়ার উদ্যোগ নিতে হবে।
মিরাজ খান
