
ছবি: সংগৃহীত
রান্নাঘর—প্রতিটি মানুষের জীবনের অপরিহার্য অংশ। তবে এখান থেকেই নিঃশব্দে ছড়িয়ে পড়ছে এক ভয়ংকর ঘাতক—বেনজিন, যা দীর্ঘ মেয়াদে শরীরে জমে গিয়ে ডেকে আনতে পারে ক্যানসারের মতো প্রাণঘাতী রোগ। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জার্নাল অব হ্যাজারডাস ম্যাটেরিয়ালস-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে এই গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা।
গবেষণায় বলা হয়, প্রাকৃতিক গ্যাস ও প্রোপেন চুলা ব্যবহারের সময় রান্নাঘর থেকে বেনজিন, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (NO₂), ও ফরমালডিহাইডের মতো বিষাক্ত রাসায়নিক নির্গত হয়। এই গ্যাসগুলো কেবল রান্নাঘরেই সীমাবদ্ধ থাকে না, ছড়িয়ে পড়ে ঘরের অন্যান্য অংশেও—যার ফলে বাসিন্দারা অবচেতনে দীর্ঘ সময় ধরে এই গ্যাসগুলোর সংস্পর্শে থাকেন।
বেনজিন একটি প্রমাণিত ক্যানসারসৃষ্টিকারী রাসায়নিক। এটি দেহে জমে গিয়ে বিশেষ করে লিউকেমিয়ার মতো রক্তের ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে। পাশাপাশি ফুসফুস, লিভার ও কিডনিতেও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
গবেষকেরা ‘কনটাম’ নামক একটি উন্নত কম্পিউটার মডেল ব্যবহার করে ঘরের বিভিন্ন স্থানে বিষাক্ত গ্যাসগুলোর ঘনত্ব পরিমাপ করেছেন। এতে দেখা যায়, চুলা চালু করার সময় বেনজিনের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পায়, বিশেষত যদি ঘরে যথাযথ বায়ুচলাচল বা ভেন্টিলেশন না থাকে।
করণীয়
রান্নার সময় অবশ্যই এক্সজস্ট ফ্যান চালু রাখা উচিত।
যাদের ঘরে প্রাকৃতিক গ্যাস বা প্রোপেন চুলা রয়েছে, তাদের পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল নিশ্চিত করা জরুরি।
বিদ্যুৎচালিত ইনডাকশন চুলা বা ইলেকট্রিক কুকার বিকল্প হিসেবে বিবেচনায় আনা যেতে পারে।
এই গবেষণার ফলাফল আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ও রান্নাঘরের নিরাপত্তা নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করছে। শুধু খাবার নয়, নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করাও রান্নাঘরের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
ফারুক