ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামের সাগরিকায় বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড ৩ ম্যাচের সিরিজ শুরু সোমবার

আইরিশদের বিরুদ্ধে টি২০ সিরিজ জয়ের পালা

মো. মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ০০:০৪, ২৬ মার্চ ২০২৩

আইরিশদের বিরুদ্ধে টি২০ সিরিজ জয়ের পালা

টি২০ সিরিজ সামনে রেখে চট্টগ্রামে অনুশীলনে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা

আবারও পরীক্ষা-নিরীক্ষার দারুণ সুযোগ। কিছুদিন আগেই সাগরিকায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে টানা ব্যর্থতার পর সংক্ষুব্ধ টাইগাররা পরাস্ত করেছে প্রায় অর্ধেক বদলে যাওয়া টি২০ স্কোয়াড নিয়ে। সেই দলটিকে নিয়েই পরীক্ষার শেষ হয়নি, কিন্তু এবার সফরকারী আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আবারও দল নিয়ে কাঁটাছেড়া করবেন প্রধান কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে। সেই সুযোগ নির্বাচকরাই করে দিয়েছেন।

মাত্র ১৪ সদস্যের ঘোষিত দলে আছে বেশ কিছু পরিবর্তন এবং আনকোরা নতুন মুখ হিসেবে এসেছেন ২০ বছর বয়সী তরুণ লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন ও ২৫ বছর বয়সী উইকেরক্ষক ব্যাটার জাকের আলী অনিক। বন্দর নগরী চট্টগ্রামে সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ইংলিশদের বিপক্ষে জয়ের শুরু আর মিরপুরে গিয়ে তার ধারাবাহিকতা রেখে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে টাইগাররা। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হোয়াইটওয়াশ করার স্মৃতি টাটকা থাকতেই এবার বিপর্যস্ত আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের টি২০ সিরিজ। সোমবার প্রথম ম্যাচ এবং ২৯ ও ৩১ মার্চ বাকি দুটি। সাগরিকাতেই সব ম্যাচ দুপুর ২টায় শুরু।
সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে স্বাগতিক বাংলাদেশ দুর্দান্ত খেলেছে। ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে দাঁড়াতেই পারেনি আইরিশরা। দ্বিতীয় ওয়ানডে বৃষ্টির আশীর্বাদে পরিত্যক্ত হওয়ায় অবশ্য নিশ্চিত হোয়াইটওয়াশ থেকে বেঁচে গেছে সফরকারীরা। বাকি দুই ম্যাচেই বাংলাদেশ নিজেদের রেকর্ড গড়া জয় তুলে নিয়েছে। আর এতেই শক্তি ও সামর্থ্যে দুই দলের পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে গেছে।

এবার সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে মুখোমুখি হবে তারা। এই ফরম্যাটের আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ৯ আর আয়ারল্যান্ড ১২ নম্বরে। তবে দুই দলের মধ্যে টি২০ ফরম্যাটে সাক্ষাৎ হয়েছে অনেক কম। সর্বশেষ ২০১২ সালে পরস্পরের মধ্যে টি২০ লড়াই হয়েছে। অর্থাৎ গত ১১ বছরে আর টি২০তে দু’দলের সাক্ষাৎ হয়নি এই ফরম্যাটে। অবশ্য ২০১৬ টি২০ বিশ্বকাপে ধর্মশালায় প্রাথমিক রাউন্ডে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড। কিন্তু সেই ম্যাচে বাংলাদেশ ৮ ওভারে ২ উইকেটে ৯৪ রান তোলার পর বৃষ্টিতে প- হয়ে যায় ম্যাচটি।

বৈশ্বিক আসর কিংবা কোনো টুর্নামেন্টে লড়াইয়ে নামার পরিসংখ্যান এটি। আর দ্বিপক্ষীয় সিরিজেও দুই দলের মধ্যে সর্বশেষ ২০১২ সালে সাক্ষাত। সে বছর আয়ারল্যান্ড সফরে গিয়ে ৩-০ ব্যবধানে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করে দেশে ফিরে আসে বাংলাদেশ। সবমিলিয়ে দুই দলের মধ্যে মাত্র ৫ টি২০ ম্যাচে ১টি পরিত্যক্ত হয়েছে এবং ৩টি জিতেছে বাংলাদেশ ও ১টি হেরেছে। ২০০৯ সালের টি২০ বিশ্বকাপে প্রথম দেখাতেই বাংলাদেশকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে আইরিশরা নটিংহ্যামে। এরপর টানা ৩ ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। এই পরিসংখ্যান থেকে সুস্পষ্টভাবেই এগিয়ে টাইগাররা। 
বাংলাদেশের মাটিতে ২০১৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপ খেলে গেছে আয়ারল্যান্ড দল। সেবার সিলেটে তারা প্রাথমিক রাউন্ড খেলে বিদায় নেয়। তাই দেশের মাটিতে এখন পর্যন্ত দেখা হয়নি বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের মধ্যে। ১১ বছর পর আবার দ্বিপক্ষীয় সিরিজে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে তারা। এই সিরিজে নিশ্চিতভাবেই ফেবারিট স্বাগতিকরা। কারণ ওয়ানডে সিরিজে আইরিশদের সিলেটে রীতিমতো নাস্তানাবুদ করেছে বাংলাদেশ দল।

একই স্কোয়াড নিয়ে এবার টি২০ সিরিজে নামবে তারা। চট্টগ্রামে এর আগে আইরিশরা কোনো ফরম্যাটেই আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি। তাই একেবারে নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হবে এবার তাদের। এই ভেন্যুতে আগের সিরিজেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে মাটিতে নামিয়ে আনে টাইগাররা। ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে এই মাঠে বাংলাদেশের কাছে হেরেছে তারা। পরে প্রথম টি২০ ম্যাচেও হার দেখে তারা।

সেখানে আইরিশদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জই হবে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভালো করা। তবে টি২০ ফরম্যাটে বেশ শক্তিধর দল আয়ারল্যান্ড। গত বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ৫ রানে হারিয়েছে তারা। জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও। তাই বাংলাদেশ দলকেও সতর্ক হয়েই খেলতে হবে। এই সিরিজে লেগস্পিনার রিশাদ ও উইকেটরক্ষক ব্যাটার জাকের সুযোগ পেতে যাচ্ছেন। এছাড়া ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক হওয়া তাওহিদ হৃদয় ও দীর্ঘদিন পর ফেরা রনি তালুকদারদের দিকে বিশেষ নজর  থাকবে সবার। এই সিরিজেই দুর্দান্ত কিছু করে দলে নিজেদের জায়গা পাকাপোক্ত করার সুযোগ তাদের।

×