ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ আটে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের অগ্নিপরীক্ষা

জাহিদুল আলম জয়

প্রকাশিত: ০০:১১, ৬ ডিসেম্বর ২০২২

শেষ আটে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের অগ্নিপরীক্ষা

সেনেগালের বিরুদ্ধে ফরোয়ার্ড জ্যাক গ্রেলিশকে পরামর্শ দিচ্ছেন ইংল্যান্ডের কোচ সাউথগেট

ফাইনালের আগেই হয়ে যাচ্ছে আরেক ফাইনাল। চলমান কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালেই দেখা হচ্ছে দারুণ ছন্দে থাকা দুই ইউরোপীয়ান টিম বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ও গত আসরের সেমিফাইনালে খেলা ইংল্যান্ডের। রবিবার রাতে শেষ ষোলোর ম্যাচে ফ্রান্স ৩-১ গোলে পোল্যান্ডকে ও ইংল্যান্ড ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে সেনেগালকে। এখন সেমিফাইনালের টিকিট পাওয়ার মিশনে এ দুদল একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে।

আগামী শনিবার রাত ১টায় দোহার আল খোরের আল বায়াত হবে ইংলিশ-ফরাসি দ্বৈরথ। এই ম্যাচটিতে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে বলে মনে করেন ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। ফুটবলের জনকদের সমীহ করছে ফরাসিরাও।
ইংল্যান্ড আর ফ্রান্সের লড়াইটাকে বাঘে-সিংহে বললে বাড়িয়ে বলা হবে না। গ্রুপ পর্ব থেকেই দল দুটি চোখ ধাঁধানো পারফরমেন্স প্রদর্শন করে চলেছে। দুটি দলই এবারের আসরে গোল করার দিক দিয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে। যে কারণে তাদের মধ্যকার দ্বৈরথ উপভোগ্য হবে বলে মনে করছেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। ১৯৮২ বিশ্বকাপের পর আর বিশ্বমঞ্চে দেখা হয়নি ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের।

৪০ বছর আগে ওই লড়াইয়ে ফ্রান্সকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। তবে সাম্প্রতিক মোকাবিলায় পিছিয়ে ইংলিশরা। শেষ ছয় ম্যাচে একে অন্যের মুখোমুখি লড়াইয়ে ইংল্যান্ড মাত্র একটি ম্যাচ জিততে পেরেছে। অন্যদিকে ফ্রান্স জিতেছে চারটিতে। সবমিলিয়ে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স এখন পর্যন্ত মুখোমুখি হয়েছে ৩১ ম্যাচে। এখানে অবশ্য এগিয়ে আছে ইংল্যান্ড। ইংলিশরা জিতেছে ১৭ ম্যাচ, হেরেছে ৯ ম্যাচ এবং ৫ ম্যাচ ড্র হয়েছে।
বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে ব্লকবাস্টার কোয়ার্টার ফাইনালে নিজ দলকে ‘সবচেয়ে বড় পরীক্ষা’ দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। কিছুটা খোলসবন্দি থেকে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করা সাউথগেটের শিষ্যরা এই মুহূর্তে দারুণ ছন্দে আছে। অন্যদিকে বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ফ্রান্স দল থেকে ছিটকে যান একঝাঁক তারকা ফুটবলার।

অনেকেই মনে করেছিলেন, গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ে ফ্রান্সও হয়তো ‘অভিশপ্ত চ্যাম্পিয়নদের’ তালিকায় নাম লেখাবে! তবে এই ধারণা ভুল প্রমাণ করে ফরাসিরা চলে এসেছে কোয়ার্টার ফাইনালে। শুধু এসেছে বলছে কম বলা হবে। রীতিমতো দাপটের সঙ্গে। দলটির তরুণ তারকা কিলিয়ান এমবাপে তো প্রতি ম্যাচেই ঝড় তুলছেন। এখন পর্যন্ত ৫ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার গোল্ডেন বুট জয়ের দৌড়ে এগিয়ে আছেন।
পিএসজিতে খেলা এই সুপারস্টার জানিয়ে দিয়েছেন, ব্যক্তিগত অর্জন নয় বিশ্বকাপ জিততেই কাতার এসেছেন তিনি। পোলিশদের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করার রাতে রেকর্ডবুক ওলটপালট করেছেন এমবাপে। পেলে, ম্যারাডোনা, জিদান, রোনাল্ডো, মেসির রেকর্ডে নাড়াচড়া দিয়েছেন। এখন তার লক্ষ্য ১৮ ডিসেম্বরের ফাইনাল।

ওই ফাইনাল জিতে ১৯ ডিসেম্বর ২৪তম জন্মদিন রাঙাতে চান এমবাপে। এই আকাক্সক্ষার কথা বিশ্বকাপের আগেই জানিয়েছেন গতি তারকা। এমবাপের মতো পুরো ফরাসি দলই আছে দারণ ফর্মে। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে লড়াইটা কঠিন হবে বলে মনে করছেন ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেট ও অধিনায়ক হ্যারি কেন। এবারের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করে ফ্রান্স। এরপর ডেনমার্ককে ২-১ গোলে উড়িয়ে সবার আগে শেষ ষোলো নিশ্চিত করে। তিউনিসিয়ার বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ ১-০ গোলে হারলেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় ফরাসিরা।
এরপর শেষ ষোলোতে পোল্যান্ডকে উড়িয়ে শেষ আট নিশ্চিত করেছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ইংলিশ কোচের মতে, এমন প্রতিভাবান ফ্রান্স দলকে কোয়ার্টারে মোকাবিলা করাটাই হবে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা। সাউথগেট বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হবে এটা। ফ্রান্স বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। তাদের অনেক প্রতিভাবান এবং দুর্দান্ত খেলোয়াড় আছে। তাদের বিরুদ্ধে গোল করা অনেক কঠিন। এটি চ্যালেঞ্জিং একটা ম্যাচ।

অতীতের সেরা ম্যাচগুলোর সঙ্গে ঐতিহাসিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এটি হবে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই এবং নিজেদের পরখ করার ম্যাচ। প্রতিপক্ষের তারকাদের প্রশংসা করে ইংল্যান্ড বস বলেন, এমবাপে অবশ্যই বিশ^মানের খেলোয়াড়। আগের টুর্নামেন্টগুলোতে আগেই তিনি নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। গ্রিজম্যানও তাদের কিংবদন্তিতুল্য তারকা। জিরুড সম্পর্কেও আমরা বেশ ভালোভাবে অবগত আছি। সেই সঙ্গে লেস ব্লুজদের আছে দুর্দান্ত একটি মিডফিল্ড। এটি হবে দুর্দান্ত একটি পরীক্ষা। আমরা এই লড়াইয়ের অপেক্ষায় আছি।

ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেন বলেন, শনিবারের সময়টা হবে সত্যিকার অর্থে কঠিন। ফ্রান্স অসাধারণ একটি দল। তারা বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। আপনি যদি বিশ^কাপ জয় করতে চান তাহলে বিশে^র সেরা দলের বিরুদ্ধেই খেলতে হবে। ফ্রান্স অবশ্যই সেসব দলের একটি।

সম্পর্কিত বিষয়:

×