
প্যারিসে পিএসজির ফুটবলারদের আনন্দ আর বেদনায় ভারাক্রান্ত আর্সেনাল তারকারা
আর্সেনালের শুরুটা ছিল দাপুটে। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি দ্য গানার্সরা। এরপরই পাল্টা আঘাত পিএসজির। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ে আরও। শেষদিকে একটি গোল ফিরিয়ে দিলেও লড়াইয়ে ফিরতে পারেনি মিকেল আর্তেতার দল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম শিরোপার স্বপ্নে ফাইনালে পিএসজি। বুধবার রাতে প্যারিসের পার্ক দ্য প্রিন্সেস স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে ২-১ ব্যবধানে জিতে, দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ গোলের অগ্রগামিতায় শিরোপার মঞ্চে লুইস এনরিকের দল।
গত সপ্তাহে তারা আর্সেনালের মাঠে জিতেছিল ১-০ গোলে। প্রথম লেগের মতো এদিনও পিএসজি গোল পেয়ে যায় প্রথমার্ধে, ২৭ মিনিটে এগিয়ে নেন ফাবিয়ান রুইজ। ৭২ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আশরাফ হাকিমি। অনেক সুযোগ নষ্টের আগে-পরে ৭৬ মিনিটে আর্সেনালের একমাত্র গোলটি করেন বুকায়ো সাকা।
পুরো ম্যাচে বল দখলে একটু এগিয়ে থাকা আর্সেনাল গোলের জন্য মোট শট নেয় ১৯টি, যার মধ্যে চারটি ছিল লক্ষ্যে। আর পিএসজি ১১টি শটের ছয়টি লক্ষ্যে রাখতে পারে। ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠল পিএসজি। প্রথমবার ফাইনালে উঠেছিল ২০২০ সালে, সেবার বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে স্বপ্ন ভেঙেছিল তাদের।
অধরা সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে আগামী ৩১ মে মিউনিখে মাঠে নামবে পিএসজি। পিএসজির ঘরের মাঠ পার্ক ডি প্রিন্সেসে ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজতেই আক্রমণ শাণায় আর্সেনাল। তৃতীয় মিনিটে ডেকলান রাইসের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার পরের মিনিটে ডি-বক্সে জটলার মধ্যে গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির শট হাঁটু দিয়ে রুখে দেন গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা। চার মিনিট পর দোন্নারুম্মার আরেকটি দুর্দান্ত সেভ।
মার্টিন ওদেগোরের নিচু শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে আটকান ইতালিয়ান গোলরক্ষক। চাপের মুখে সপ্তদশ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল পিএসজি; কিন্তু ভাগ্য তাদের সহায় হয়নি। দিজিরে দুয়ের পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে জোরাল কোনাকুনি শট নেন জর্জিয়ার ফরোয়ার্ড খাভিচা কাভারাৎস্খেলিয়া, গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলেও বল দূরের পোস্টে বাধা পায়।
২৩তম মিনিটে আরেকটি পাল্টা আক্রমণে সামনে গোলরক্ষককে একা পেয়েও দুর্বল শটে হতাশ করেন দুয়ো। চার মিনিট পরই তারা দুর্দান্ত এক গোলে সফরকারীদের স্তব্ধ করে দেয়। বাঁদিক থেকে ফ্রি কিকে উড়ে আসা বল বক্সে ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি আর্সেনালের টমাস পার্টি। বুক দিয়ে বল নামিয়ে ডি-বক্সের মুখ থেকে বুলেট গতির শট নেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রুইস, ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি ডেভিড রায়া। দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন হয় ২-০, গ্যালারিতে স্বাগতিক সমর্থকদের গর্জন বেড়ে যায় কয়েকগুণ। পিএসজিও হয়ে ওঠে আরও আত্মবিশ্বাসী।
বিরতির পর চলা আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ৬৩তম মিনিটে আরও একবার দোন্নারুম্মার প্রাচীরে আটকে যায় আর্সেনালের প্রচেষ্টা। সাকার দূরের পোস্টে নেওয়া জোরাল শট অসাধারণ নৈপুণ্যে এক হাত দিয়ে আটকে দেন গোলরক্ষক। কিছুক্ষণের মধ্যে ফাইনালের টিকিট একরকম নিশ্চিত করার সুযোগ পেয়ে যায় পিএসজি। আর্সেনালের ডি-বক্সে তাদের তরুণ মিডফিল্ডার লুইস-স্কেলির হাতে বল লাগায় ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু ভিতিনিয়া দুর্বল শটে হতাশ করেন, ঝাঁপিয়ে আটকে দেন রায়া।