ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচেও কানাডার জয়, এ যেন স্বপ্নের মতোই সমাপ্তি টানলেন আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতা

বিদায়বেলায় আবেগাপ্লুত ও গর্বিত সিনক্লেয়ার

জিএম মোস্তফা

প্রকাশিত: ০১:০২, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩

বিদায়বেলায় আবেগাপ্লুত ও গর্বিত সিনক্লেয়ার

স্ট্রাইকার ক্রিস্টিন সিনক্লেয়ার

অবশেষে আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টানলেন কানাডা জাতীয় নারী ফুটবল দলের তারকা স্ট্রাইকার ক্রিস্টিন সিনক্লেয়ার। বুধবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই সুদীর্ঘ ২৩ বছরের বর্ণাঢ্য এবং রেকর্ডময় ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ ১৯০ গোলের মালিক। শেষের গল্পটাও পারফেক্ট! অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এদিন ১-০ গোলের জয় পায় সিনক্লেয়ারের কানাডা। তবে বিদায় বেলায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ৪০ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার।  
পশ্চিম কানাডার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শহর ভ্যাঙ্কুবার। এই শহরের বিসি প্লেস স্টেডিয়ামে প্রীতি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে এদিন আতিথ্য দেয় কানাডা।

সিনক্লেয়ারের অবসর নেওয়া উপলক্ষেই এক রাতের জন্য এই স্টেডিয়ামের নাম পাল্টে রাখা হয় ক্রিস্টিয়ান সিনক্লেয়ার প্লেস। এদিন ৪৮,১১২ জন দর্শক স্যালুট দেন কানাডার ফুটবলের এই সুপারস্টারকে। ম্যাচের বয়স যখন ১২ মিনিট ঠিক তখন দর্শকরা উঠে দাঁড়িয়ে তাকে সম্মান জানান। কেননা, সিনক্লেয়ারের জার্সি নম্বর যে ১২। ম্যাচের একমাত্র গোলটি ছিল ৪০ মিনিটে। কানাডার হয়ে কুইনের করা সেই গোলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন সিনক্লেয়ার। অর্থাৎ ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটাতেও আলো ছড়াতে কোনোরকম ভুল করেননি ৫ ফিট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার এই তারকা ফরোয়ার্ড।

বিরতির পরপরই অবশ্য তাকে মাঠ থেকে তুলে নেওয়া হয়। দ্বিতীয়ার্ধের ১২ মিনিটে তাকে তুলে নিয়ে মিডফিল্ডার সোফি স্মিটকে মাঠে নামান কোচ। মাঠ ছাড়ার আগে স্মিট এবং অন্য সতীর্থদের জড়িয়ে ধরেন সিনক্লেয়ার। গ্যালারিতে উপস্থিত রেকর্ডসংখ্যক দর্শকেরাও এসময় করতালিতে মুখর ছিলেন। এসময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন পোর্টল্যান্ড থর্নসের জার্সিতে খেলা এই কানাডিয়ান ফরোয়ার্ড। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটা ছিল সিনক্লেয়ারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ৩৩১তম ম্যাচ। জীবনের শেষ ম্যাচটাও উপভোগ করতে চেয়েছিলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে আগামী জুনেই ৪১ বছরে পা রাখতে যাওয়া এই কানাডিয়ান সুপারস্টার বলেন, ‘নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে এটা উপভোগ করব।

সত্যিই অভিভূত হয়েছি। অবিশ্বাস্য লাগছে এবং সমাপ্তিটাও নিখুঁত।’ দলের জয় দিয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানতে পারায় তার গর্বটা আরও যেন বেড়ে গেছে বহুগুণে। জয়ের পর সিনক্লেয়ার বলেন, ‘আমি সব সময়ই একজন প্রতিদ্বন্দ্বী। তাই দারুণ লাগছে। আমরা ম্যাচটা জিতেছি। এই দলটাকে নিয়েও আমি অনেক বেশি গর্বিত।’ 
২০০০ সালে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের যাত্রা শুরু করেছিলেন ক্রিস্টিন সিনক্লেয়ার। এই যাত্রাটা সহজ ছিল না মোটেও। কিন্তু সব ধরনের বাধা অতিক্রম করেই সিনক্লেয়ার এগিয়ে নিয়ে গেছেন নিজেকে। প্রায় দুই যুগ মাঠে লড়াই করে গেছেন বীরের মতো করে। এই সময়ে অসংখ্য কীর্তি গড়েছেন তিনি। কানাডার সমর্থকদের কাছে ‘ক্যাপ্টেন এভরিথিং’ নামে পরিচিত সিনক্লেয়ার ছয়বার বিশ্বকাপে খেলার পাশাপাশি চারবার প্রতিনিধিত্ব করেছেন অলিম্পিকে। ২০২১ টোকিও অলিম্পিকে জিতেছেন স্বর্ণপদক। তবে তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নজির আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড! কানাডার হয়ে ৩৩১ ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করে প্রতিপক্ষের জালে ১৯০ বার বল জড়িয়েছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নারী ও পুরুষ ফুটবল মিলিয়ে তার চেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ড নেই আর কারও। তার পরে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড এবি ওয়ামবাখের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই স্ট্রাইকারের গোল সংখ্যা ১৮৪। অর্থাৎ সিনক্লেয়ারের চেয়ে ৬টি কম। ছেলেদের আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলদাতা ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো পর্তুগালের হয়ে করেছেন ১২৮ গোল।  তাই তাকে বিশ্বের সর্বকালের সেরা গোলদাতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এ প্রসঙ্গে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘বিশ্বের সর্বকালের সেরা গোলদাতা। আমাদের সবাইকে প্রেরণা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। এই খেলায় এবং কানাডার খেলাধুলায় আপনার প্রভাব আমরা অনেক দিন ধরেই উদ্?

×