ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৮ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গুগলের নতুন পদক্ষেপে কি ধ্বংসের মুখে ওয়েবসাইটগুলো?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৪৪, ২৭ মে ২০২৫

গুগলের নতুন পদক্ষেপে কি ধ্বংসের মুখে ওয়েবসাইটগুলো?

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে ইন্টারনেটে কিছু খোঁজ করলেই যেটা আমরা প্রথমে দেখতে পাই, সেটা হলো গুগলের তৈরি স্বয়ংক্রিয় তথ্য উপস্থাপনা। এটি এমনভাবে সাজানো থাকে যেন ব্যবহারকারী যেন আর নিচে স্ক্রল না করে, অন্য কোথাও না গিয়ে, গুগলেই প্রয়োজনীয় সব তথ্য পেয়ে যান। এই পদ্ধতির মাধ্যমে গুগল ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তর সরাসরি উপস্থাপন করে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের তথ্য নিয়েকিন্তু ব্যবহারকারীকে সেই সাইটে পাঠায় না। এই ধরনের উপস্থাপনাকে গুগল নিজেদের ভাষায়সবচেয়ে সফল প্রকল্পগুলোর একটিবললেও, প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা একে ওয়েবের অস্তিত্ব সংকট বলে আখ্যা দিচ্ছেন।

গুগলের নতুন প্রযুক্তি এখন শুধু খোঁজার প্ল্যাটফর্ম নয়, বরং হয়ে উঠছে নিজস্ব এক তথ্যভাণ্ডার। এটি ব্যবহারকারীর প্রশ্ন ভাগ করে নানা দিক থেকে উত্তর তৈরি করে, যেটি অনেকটা ব্যক্তিগত সহকারীর মতো কাজ করে। আগে ব্যবহারকারীরা প্রশ্ন লিখে ওয়েবসাইটে গিয়ে বিস্তারিত জানত, এখন গুগলই যেন সেসব সাইটের সারাংশ নিজেই তৈরি করে হাজির করছে। এতে ওয়েবসাইটগুলোতে প্রবেশ কমে যাচ্ছে, যার ফলে তাদের আয়ের পথও সংকুচিত হচ্ছে।

বলা যায়, গুগলের এই নতুন ব্যবস্থায় মূল ওয়েবসাইটগুলোর গুরুত্ব ক্রমেই কমছে। অনেক সময় গুগল যেসব তথ্য দেখায় তাউৎস হিসেবেওয়েবসাইটের লিংক রাখলেও, সেগুলোর ওপর ক্লিক করার তেমন প্রয়োজন হয় না। গুগল চাইছে, ব্যবহারকারীরা যেন তাদের প্ল্যাটফর্মেই থাকেন, বাইরের কোন কিছুর প্রয়োজন যেন না হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে যেসব ওয়েবসাইট থেকে গুগল তথ্য নেয়, তারাই একসময় ধ্বংস হয়ে যাবে।

গুগলের এই স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা যখন বাইরের ওয়েবসাইটে পাঠানো কমিয়ে দিচ্ছে, তখন প্রশ্ন উঠছেতারা ভবিষ্যতে তথ্য সংগ্রহ করবে কোথা থেকে? কারণ তারা যেসব তথ্য ব্যবহার করছে, সেগুলোর উৎস মূলত ইন্টারনেটের নানা ওয়েবসাইট। যদি সেসব সাইট টিকে না থাকে, গুগলের নিজস্ব তথ্যভাণ্ডারও একসময় অকেজো হয়ে পড়তে পারে।

গুগলের এআই-ভিত্তিক তথ্য উপস্থাপনার ক্ষেত্রেও বিজ্ঞাপন ঢুকিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থাৎ, গুগল শুধু ব্যবহারকারীকে তথ্য দেবে না, সেই তথ্যের ভেতরেও বিজ্ঞাপন দেখাবে। এতে আরও স্পষ্ট হয় যে, গুগল এখন ওয়েবসাইটের সঙ্গে যে পারস্পরিক সম্পর্ক ছিল—‘তোমরা তথ্য দাও, আমরা দর্শক পাঠাই’—তা থেকে সরে এসেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, গুগল এখন মূলত প্রতিযোগিতার ভয়েই দ্রুত নতুন প্রযুক্তি চালু করছে। এর ফলে ওয়েবসাইট-নির্ভর অর্থনৈতিক কাঠামো এক ধরনের ধসে পড়তে পারে।

মুমু

×