
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ
জেলার হাওড় অধ্যুষিত নিকলীর দামপাড়া চাকিডুয়ার বিলটি বিগত সরকারের আমলে ৬ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয় স্থানীয় নোয়াগাঁও চাকিডুয়ার মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে। ৪ বছর শেষ হয়েছে ইজারার মেয়াদ। এরই মধ্যে গত বছরের আগস্টে পতন হয় আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট সরকারের।
এরপরই প্রভাবশালী স্বার্থান্বেষী মহলের শ্যেনদৃষ্টি পড়ে বিলটির ওপর। বিলটি দখলে নিতে ওই প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় একটি রাজনৈতিক মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয় বিলটির সম্পাদক মতিউর রহমানসহ সমবায় সমিতির বেশ কয়েকজনকে। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। একপর্যায়ে আসামির তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার টোপ দিয়ে মতিউর রহমানকে ডেকে নেওয়া হয় ঢাকায়। সেখানে জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে বিলটি নিয়ে যায় বলে অভিযোগ মতিউরের।
এদিকে মামলার আসামি হিসেবে কেউ যখন কারাগারে এবং অন্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন, তখনই সুযোগ বুঝে চক্রটি হামলা চালায় বিলে। দুই দফা দেশীয় অস্ত্রে হামলা চালিয়ে বিলের ৭২ লক্ষ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছেন মৎস্যজীবী সমিতির জেলেরা। এ বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আদালতে মামলা করা হয়। মামলায় নিকলী উপজেলার দামপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি জাকির হোসেনসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়।
সরেজমিনে গেলে মামলার বাদী মতিউর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বিলের মাছ লুট করতেই তাকেসহ সমিতির অন্যদের রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। এ সময় তিনি জাকিরের সহযোগিতায় বিলের মাছ লুটের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে চাকিডুয়ার মৎস্যজীবী সমিতির বেশ কয়েকজন সদস্য বলেন, গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলায় মতিউর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। এ মামলায় শুধু সমিতির সম্পাদক মতিউরকেই আসমি করা হয়নি, সমিতির বিএনপি ঘরানার বেশ কয়েকজনকেও আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপি নেতা জাকির হোসেন। তিনি দাবি করেন, মতিউর রহমান স্বেচ্ছায় টাকার বিনিময়ে বিলটি একটি পক্ষকে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে নিকলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরুল মোমেন মিঠু বলেন, ‘এসব ঘটনা বা রাজনৈতিক মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রে দলের কারো কোনো সম্পৃক্ততা পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
নিকলী থানার ওসি কাজী আরিফ উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফারুক