ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য উদ্বেগজনক খবর এসেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন স্টুডেন্ট ভিসার জন্য নতুন ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলার বিভাগগুলিকে পাঠানো হয়েছে। সূত্রের খবর, আমেরিকায় পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক বিদেশি শিক্ষার্থীদের সোশ্যাল মিডিয়া যাচাইয়ের কথা বিবেচনা করেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক পলিটিকোর একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, "ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার জন্য আবেদনকারী সকল বিদেশি শিক্ষার্থীর সোশ্যাল মিডিয়া যাচাইয়ের কথা বিবেচনা করছে।"
পলিটিকোর রিপোর্টে ২৭ মে-র একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও'র সই রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, 'প্রয়োজনীয় যাচাইয়ের প্রস্তুতির জন্য, প্রশাসন মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলার বিভাগগুলিকে ছাত্র ভিসা আবেদনকারীদের নতুন করে সাক্ষাৎকার স্থগিত করার নির্দেশ দিচ্ছে।'
দিল্লির মার্কিন দূতাবাস স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে, মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও এপ্রিলের শুরুতে মার্কিন ভিসার জন্য আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের, বিশেষ করে যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইজরায়েলের মতো মিত্রদের সমালোচনা করেছিল, তাদের সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রিনিংয়ের আহ্বান জানিয়ে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়েছিলেন।
জানা গেছে, বিশ্বের সমস্ত দেশের ক্ষেত্রেই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। হোয়াইট হাউসের তরফে মার্কিন দূতাবাসগুলিকে ভিসার ইন্টারভিউ পর্ব আপাতত স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, সিদ্ধান্তটি সাময়িক। তবে, ঠিক কতদিন তা কার্যকর থাকবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের এহেন সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন মার্কিনমুলুকে পড়তে যেতে ইচ্ছুক ভারতসহ অন্যান্য দেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থী।
এছাড়া, গত মঙ্গলবার (২৭ মে, ২০২৫), ভারতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস নতুন সতর্কতা জারি করেছে যে- বিদেশি শিক্ষার্থীরা যদি "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাস কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ক্লাস এড়িয়ে যান বা তাদের প্রোগ্রাম ছেড়ে যান, তাহলে তাদের ছাত্র ভিসা বাতিল হতে পারে।" এই সতর্কীকরণে সকল শিক্ষার্থীকে নথিপত্রের শর্তাবলী মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদে দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেই মার্কিন সরকার অভিবাসন নিয়ম কঠোর করছে, যা সাম্প্রতিক মাসগুলিতে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের। গত মার্চ মাসে, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষণারত স্কলার রঞ্জিনী শ্রীনিবাসন প্যালেস্তাইন-পন্থী আন্দোলনে অংশগ্রহণের অভিযোগে কানাডায় "স্ব-নির্বাসন" গ্রহণ করেন। পরে অবশ্য সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকারে তিনি অস্বীকার করেছিলেন। ক্ষমতায় আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন নিয়ম কঠোর করার জন্য বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই মাসের শুরুতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারত-ভিত্তিক ট্রাভেল এজেন্সিগুলির উপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করে, যাদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসনকে সহজতর করার অভিযোগ রয়েছে। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসন-সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেছে এবং সম্প্রতি, ভাইস প্রেসিডেন্ট জে.ডি. ভ্যান্সের এপ্রিল সফরের সময় এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি পড়ুয়াদের মধ্যে ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
শিহাব
