
ছবি:সংগৃহীত
বিশ্ব ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খবর! জাপান শিগগিরই চালু করতে যাচ্ছে নতুন একটি ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন সিস্টেম—জেস্টা (JESTA)। এটি ৭১টি ভিসা-মুক্ত দেশের নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য হবে। এখন থেকে শুধু পাসপোর্ট থাকলেই চলবে না, জাপানে যাওয়ার আগে আপনাকে ডিজিটাল অনুমোদন নিতে হবে।
জেস্টা (JESTA) কী?
Japan Electronic System for Travel Authorization বা সংক্ষেপে জেস্টা, হলো জাপানের নতুন অনলাইন প্রাক-অনুমোদন পদ্ধতি। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ESTA-এর মতো একটি সিস্টেম, যেখানে জাপানে প্রবেশের আগেই ভ্রমণকারীকে অনলাইনে অনুমোদন নিতে হবে।
এই নতুন নিয়মটি ২০২৫ সালের ২৩ মে জাপানের বিচার মন্ত্রী কেসুকে সুজুকি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৮ অর্থবছরের শেষের দিকে এটি চালু হবে।
কেন চালু হচ্ছে জেস্টা?
২০২৪ সালে জাপান রেকর্ডসংখ্যক ৩৬.৯ মিলিয়ন বিদেশি পর্যটক গ্রহণ করেছে। দুর্বল ইয়েন এবং কোভিড-পরবর্তী খোলা সীমান্ত এর মূল কারণ। তবে এতো বিপুল পরিমাণ ভ্রমণকারীর আগমন সীমান্ত নিরাপত্তায় চাপ সৃষ্টি করছে।
বিচারমন্ত্রী কেসুকে সুজুকি জানান,“জেস্টা শুধু নিরাপত্তা নয়, দ্রুত এবং কার্যকর অভিবাসন ব্যবস্থাও নিশ্চিত করবে।”
অবৈধ অভিবাসন এবং দীর্ঘমেয়াদে থাকা পর্যটকদের ঠেকাতে এই ব্যবস্থা একটি বড় পদক্ষেপ।
কীভাবে কাজ করবে জেস্টা?
জেস্টা চালু হলে, ভিসা-মুক্ত দেশের নাগরিকদের জাপানে প্রবেশের আগে অনলাইনে একটি অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে হবে। এই প্রক্রিয়ায়—
- আগেভাগেই পর্যটকদের স্ক্রিনিং করা হবে।
- ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রীদের শনাক্ত করা যাবে।
- কম ঝুঁকির পর্যটকদের প্রাক-অনুমোদনের মাধ্যমে দ্রুত ইমিগ্রেশন নিশ্চিত হবে।
এই সিস্টেম বাধ্যতামূলক হবে, একদম যেমনভাবে আমেরিকায় ESTA প্রয়োজন হয়।
কোন কোন দেশের নাগরিকদের জেস্টা লাগবে?
নিচের ৭১টি দেশের নাগরিকদের জাপানে যাওয়ার আগে জেস্টা অনুমোদন নিতে হবে:
ইউরোপ: অ্যান্ডোরা, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ইতালি, স্পেনসহ প্রায় সব ইউরোপীয় দেশ।
আমেরিকা: যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রাজিল, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, চিলি ইত্যাদি।
এশিয়া: বাংলাদেশ নয়, তবে সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, কাতার, ইউএই ইত্যাদি দেশ।
ওশেনিয়া ও আফ্রিকা: অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মরিশাস, লেসোথো, তিউনিশিয়া ইত্যাদি।
সর্বশেষ ও হালনাগাদ তালিকার জন্য জাপানের ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস এজেন্সির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট দেখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কবে থেকে চালু হবে জেস্টা?
মূল লক্ষ্য ছিল ২০৩০ সালের মধ্যে চালু করা। তবে এখন সরকার ২০২৮ অর্থবছরের মধ্যেই এটি চালুর পরিকল্পনা করছে। অর্থাৎ আগামী তিন বছরের মধ্যেই এটি বাস্তবায়নের পথে।
ভ্রমণকারীদের করণীয় কী?
যদিও এখনই এটি বাধ্যতামূলক নয়, তবে জেস্টা চালু হলে যা যা লাগবে:
- ভ্রমণের আগে জাপানের ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে।
- আবেদন করতে পাসপোর্ট, ভ্রমণ সম্পর্কিত তথ্য, ও একটি ছোট ফি লাগতে পারে।
- সময়মতো আবেদন করে রাখলে, বিমানবন্দরে সময় বাঁচবে এবং অনায়াসে প্রবেশ করা যাবে।
বিশ্বব্যাপী ট্রাভেল অথরাইজেশন সিস্টেম এখন একটি সাধারণ বাস্তবতা। জাপানও সেই পথে হাঁটছে।
জেস্টা—নিরাপত্তা, আধুনিকতা ও ভ্রমণকারীদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা হতে চলেছে।
মারিয়া