
ছবি- দৈনিক জনকণ্ঠ
ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শুরু হয়েছে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। শুধু পাঠ্যপুস্তক কিংবা খাতা কলম নয়, শিক্ষার্থীদের হাতে এবার তুলে দেওয়া হয়েছে গাছের চারা। অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে দেওয়া হয়েছে বৃক্ষরোপণ, অংশ নিলেই মিলবে পাঁচ নম্বর। শিক্ষার সঙ্গে প্রকৃতির সংযোগ তৈরির এই অনন্য উদ্যোগটি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীদের এই অভিনব অ্যাসাইনমেন্ট বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক মো. তারিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, “আমরা চেয়েছি শিক্ষার্থীরা যাতে প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ তৈরি করে। গাছ লাগানো শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়ে ওঠে একটা অভিজ্ঞতা, একটা দায়িত্ব। রক্ষণাবেক্ষণেও তারা যাতে মনোযোগ দেয়, সে দিকেই জোর দিয়েছি।”
এই অ্যাসাইনমেন্টের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা গাছ রোপণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত কলা, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল ভবনের খোলা প্রাঙ্গণে। স্থান নির্বাচনের পেছনেও ছিল সচেতন চিন্তা। বৃক্ষহীন ওই এলাকার সবুজায়নের দায়িত্ব নিয়েছে দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরাই।
তবে শুধু গাছ লাগানোই নয়, অ্যাসাইনমেন্টে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে গাছের ধরন নির্বাচনেও। শিক্ষার্থীদের রোপণ করতে বলা হয়েছে পরিবেশবান্ধব, পুষ্টিগুণসম্পন্ন এবং ঔষধিগুণে সমৃদ্ধ গাছ। ফলে ফলদ গাছের পাশাপাশি রোপণ করা হচ্ছে তুলসী, নিম, অশ্বগন্ধাসহ নানা ঔষধি ও সৌন্দর্যবর্ধক গাছ।
মাঠ পর্যায়ে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা শুধু গাছ লাগিয়েই থেমে নেই, তারা নিজেরাই গড়ে তুলেছে গাছের দেখভালের পরিকল্পনা। কখন পানি দিতে হবে, কীভাবে আগাছা পরিষ্কার করা যাবে, কীভাবে গাছ রক্ষা করা সম্ভব, এসব নিয়ে তারা ভাবছে সম্মিলিতভাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টরাও মনে করেন, এই ধরণের অ্যাসাইনমেন্ট শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাড়ায় দায়িত্ববোধ, গড়ে তোলে পরিবেশ সচেতনতা এবং উৎসাহিত করে সক্রিয় সামাজিক অংশগ্রহণে।
দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার প্রথাগত কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে এমন উদ্যোগ পরিবেশকে বাঁচিয়ে রাখতে সহায়ক হবে। যেখানে পাঠ্যবইয়ের পাতার বাইরেও থাকে শেখার সুযোগ, আর শ্রেণিকক্ষ ছাড়াও গড়ে ওঠে শিক্ষার উন্মুক্ত পরিসর।
নোভা