ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০১ জুন ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’-র প্রভাবে মতলবে ব্যাপক ফসলহানি ও জলাবদ্ধতা

সুমন আহমেদ, মতলব, চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:১৫, ৩০ মে ২০২৫; আপডেট: ১৯:১৮, ৩০ মে ২০২৫

ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’-র প্রভাবে মতলবে ব্যাপক ফসলহানি ও জলাবদ্ধতা

ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’-র প্রভাবে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় টানা দুইদিনের ভারী বর্ষণে ব্যাপক জলাবদ্ধতা ও কৃষিখাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে জমিতে পানি জমে থাকায় শাকসবজি ও আউশ ধানের বীজতলা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। 

সরেজমিনে উপজেলার আদুরভিটি, হানিরপাড়, জোরখালী, দেওয়ানজীকান্দি, নেকরাজার বিল, মাথাভাঙা, নেদামদী, টরকী এবং রায়েরকান্দি বিলে ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ এলাকায় জমির পানি বের হওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় ফসল ডুবে গেছে এবং গবাদিপশুর খড় পানির নিচে থাকায় গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিতে পারে।

অতিরিক্ত বৃষ্টির পানিতে অনেক জলাশয় উপচে মাছ চলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানান, যা মৎস্য খাতেও প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উপজেলার কৃষকরা দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পুনর্বাসন সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়,
ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে মতলব উত্তরে এ পর্যন্ত ৮ হেক্টর আউশ ধানের বীজতলা ও ৭০ হেক্টর জমির বিভিন্ন শাকসবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ঢালী কান্দি গ্রামের কৃষক আলী রেজা, হোসেন ও জয়নাল হাজারী জানান, আমাদের লাউ, ধুন্দুল, ঢেঁড়স ক্ষেতে পানি জমে আছে। গাছগুলো পুরোপুরি পানির নিচে। পাতার রঙ হলুদ হয়ে গিয়েছে। এরকম থাকলে গাছগুলো নষ্ট হয়ে যাবে।

জোরখালী গ্রামের কৃষক মোস্তফা বেপারী বলেন, কয়েকদিন আগে আউশ ধানের বীজতলা তৈরি করেছিলাম। এখন দুইদিনের বৃষ্টিতে পুরো বীজতলা পানির নিচে। নতুন করে বীজতলা করতে হলে সময় ও খরচ—দুইটাই লাগবে।

দেওয়ানকান্দি গ্রামের খোকন সরকার ও জসীমউদ্দিন জানান, বোরো ধান কেটে ঘরে তুলেছি, কিন্তু ধানের খড় শুকানোর জন্য জমিতে রেখেছিলাম। সব খড় এখন পানির নিচে। যদি জলাবদ্ধতা না কমে, তাহলে এগুলো পচে যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করছি। এখন পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, জলাবদ্ধতায় আউশ বীজতলা ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট প্রস্তুত হবে। কৃষকদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি।

মুমু

×