
ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু কাল
আগামীকাল সোমবার থেকে দ্বিতীয় পর্বে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রথম দিন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে আলোচনার জন্য আবারও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। দ্বিতীয় দফার আলোচনার পর এই জুন মাসেই জাতীয় সনদ তৈরির ব্যাপারে আশাবাদ প্রকাশ করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
শনিবার রাজধানীতে কৃষক দলের এক অনুষ্ঠানে আগামীকাল সোমবার আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, সরকার একের পর এক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার আনুষ্ঠানিকতা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তাতে বাস্তব কোনো অগ্রগতি নেই। আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। জনগণের আস্থার সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন, কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়। সংবিধান সংস্কার কমিশন যদি নিজেদের মতো করে সংবিধান পরিবর্তন করতে চায়, তবে সে বিষয়ে জাতিকে একমত হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জোর করে চাপিয়ে দিলে সেটা গণতন্ত্র নয়, তা হবে আরেকটি বাকশাল।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা আরও বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিশ্বাস করি, মতের ভিন্নতা থাকবেই। আর ডিসেম্বরের পর নির্বাচন দেওয়ার পক্ষে একটি যুক্তিও নেই। দেশের মানুষ চায় অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন।’
এর আগে গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার মাধ্যমে জুলাই মাসের মধ্যেই একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু করতে চায় কমিশন এবং এই আলোচনা হবে বিষয়ভিত্তিক। সকল বিষয়ে ঐকমত্য হবে না, কিন্তু যেসব মৌলিক বিষয়ে এখনও মতভিন্নতা রয়েছে সেসব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্যই দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা করবে কমিশন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে কোনো দ্বিমত নেই। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠনের ব্যাপারে বেশিরভাগ দল নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। কিছু দল অবশ্য এক কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর ক্ষেত্রে অনেক বিষয়ে নীতিগত ঐকমত্য হলেও অনেক বিষয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে। দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় সেগুলো চূড়ান্ত করা হবে।’
তিনি বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা প্রথম পর্যায়ের আলোচনা থেকে কাঠামোগতভাবে ভিন্ন হবে। প্রথম পর্যায়ে আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ১৬৬টি সুপারিশ এবং প্রতিবেদনগুলোর বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যেকের আলাদা আলাদা অবস্থান বোঝা। তো সেটা তারা তাদের মতামত দিয়েছে, সেটি নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমাদের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা হবে বিষয়ভিত্তিক। বিশেষত প্রধান প্রধান বিষয়ে যেসব ভিন্নমত আছে, সেগুলো নিয়ে আমরা আলাদা আলাদা দল নয়, একত্রিতভাবে দল ও জোটগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বসার পরিকল্পনা করছি।