সিভি পাঠাচ্ছেন কিন্তু কোনো ডাক পাচ্ছেন না? জেনে নিন চাকরি পাওয়ার জন্য সিভি তৈরির ৯টি সেরা টিপস!

২০২৫ সালে একটি প্রভাবশালী সিভি তৈরির জন্য কৌশল জানাটা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।বর্তমানে সিভি বাছাইয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে নানা জটিল অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং কমে আসছে মানবিক যোগাযোগ।ফলে যেকোনো চাকরির জন্য আবেদন করাই এখন হয়ে উঠেছে বিভ্রান্তিকর ও হতাশাজনক এক প্রক্রিয়া। প্রতিদিনই শোনা যায় এমন অভিযোগ।

তবে এই প্রতিকূলতার মধ্যেও একটি সুচিন্তিত, আকর্ষণীয় ও সঠিকভাবে গঠিত সিভিই পারে আপনাকে এগিয়ে দিতে। আর তাই, ২০২৫সালে একটি আদর্শ সিভি তৈরির জন্য নিচের ৯টি কার্যকরী পরামর্শ আপনাকে দারুণভাবে সাহায্য করতে পারে।

১. পুরোনো নয়, নতুন করে শুরু করুন
প্রতিবার চাকরির খোঁজে নামার আগে নতুনভাবে সিভি তৈরি করুন। পুরোনো সিভিতে তথ্য যোগ করলে অনেক সময় সেটি বিক্ষিপ্ত ও অসংগতিপূর্ণ মনে হতে পারে। এতে আপনার দক্ষতা ও নতুন ভূমিকায় আগ্রহ সম্পর্কে বিভ্রান্ত হতে পারেন নিয়োগদাতা।

২. পাঠকের জুতায় নিজেকে রাখুন
যিনি আপনার সিভি পড়বেন, তার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভাবুন। যদি আপনার সিভি ৫০টি সিভির ভিড়ে থাকে, তাহলে কি সেটিই বাছাই করবেন? বিজ্ঞপ্তিতে চাওয়া দক্ষতাগুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন তো? মনে রাখবেন, সিভি পাঠানোর সুযোগ একবারই আসে। হুট করে পাঠিয়ে সময় নষ্ট করবেন না।

৩. ফাঁকা জায়গা ও পরিবর্তন ব্যাখ্যা করুন
সিভির ফাঁকা সময়গুলো বা দ্রুত চাকরি পরিবর্তনের কারণ নিয়োগদাতাকে অনুমান করতে দেবেন না। বরং ইতিবাচক ভাষায় ব্যাখ্যা করুন কেন বিরতি নিয়েছেন, কেন পেশা পরিবর্তন করেছেন। এতে আপনাকে বুঝতে সুবিধা হবে।

৪. প্রোফাইল হেডার যেন হয় নিখুঁত
আপনার প্রোফাইল হেডারই নিয়োগদাতার প্রথম নজরে পড়বে। এখানে লিখুন আপনি কী পারেন, কী অর্জন করেছেন, কিভাবে অর্জন করেছেন এবং তা নতুন প্রতিষ্ঠানের কী উপকারে আসবে। আত্মবিশ্বাসের সাথে লিখুন, এই অংশেই আকর্ষণ তৈরি করুন।

৫. অপ্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা এড়িয়ে চলুন
যদি আপনার সিভিতে কয়েকটি স্বল্পমেয়াদি, অপ্রাসঙ্গিক চাকরির অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে তা বাদ দিতে পারেন অথবা সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরতে পারেন। বরং ওই অভিজ্ঞতার মধ্যে প্রাসঙ্গিক দিকগুলোকে গুরুত্ব দিন, যা নতুন চাকরিতে কাজে লাগতে পারে।

৬. চাকরির বিবরণীর সাথে মিল করুন
আপনার সিভি যেন নির্ধারিত চাকরির বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে মিলে যায় তা যেন স্পষ্ট থাকে পদবী, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, ব্যবহৃত সফটওয়্যার বা টুলসের নাম ও কার্যক্রমে। সংশ্লিষ্ট কীওয়ার্ডগুলো ব্যবহার করুন। কারণ এখন অনেক সময় AI-র মাধ্যমেই প্রাথমিক বাছাই হয়।

৭. কীগুলো খুঁজে বের করুন
চাকরির নিয়োগকর্তা বা AI সিস্টেম সিভির নির্দিষ্ট কীওয়ার্ড খোঁজে। তাই আপনার সিভি যেন সেগুলো ধরে রাখতে পারে। বিজ্ঞপ্তির সাথে নিজের সিভিকে মিলিয়ে নিন, যত বেশি ‘ম্যাচ’ করবেন, ততই বাড়বে আপনার সম্ভাবনা।

৮. উপস্থাপনায় রাখুন পেশাদারিত্ব
সিভির ফরম্যাট, ফন্ট, বানান, লেআউট সবই গুরুত্বপূর্ণ। ছোট ছোট পয়েন্ট আকারে তথ্য দিলে পাঠক সহজে পড়তে পারবেন। বানান ভুল বা ফন্ট পরিবর্তনের মতো ছোট খুঁটিনাটিও অনেক সময় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

৯. নিজেকে বিক্রি করতে শিখুন
অনেক সময় আমরা নিজেদের অর্জন বা গুণাবলি তুলে ধরতে দ্বিধা করি। ভাবি নিয়োগকর্তা নিজেই বুঝে নেবেন। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। নিজের কাজের সাফল্য, প্রশংসা পাওয়া মুহূর্ত, বা যেসব জায়গায় নিজেকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছেন, সেগুলো গর্বের সাথে তুলে ধরুন।

বোনাস টিপস: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও জানান
যদি কোনো চাকরিতে নির্দিষ্ট সার্টিফিকেট বা কোর্সের প্রয়োজন হয় যা এখনো আপনি সম্পন্ন করেননি, তবে সেটি উল্লেখ করতে পারেন। যেমন, ‘‘আমার পরবর্তী কর্মজীবনে CIPD সার্টিফিকেট অর্জনই একটি লক্ষ্য, যা অর্জন করতে আগ্রহী আমি।’’ AI এই ধরণের কীওয়ার্ড ধরতে পারে এবং আপনার আগ্রহকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে পারে।

একটি ভালো সিভিই আপনার সম্ভাবনাকে সত্যিতে রূপ দিতে পারে। তাই একবারই যদি সুযোগ আসে, সেটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন। নিজের প্রোফাইলকে নিয়মিত আপডেট করুন, প্রতিটি আবেদন অনুযায়ী সিভিকে আলাদা করে তৈরি করুন, আর খুঁটিনাটি সবকিছু সতর্কভাবে যাচাই করুন।

সূত্র:https://tinyurl.com/22bu9yz2