ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পরকীয়ার বলি ২২ দিনের নবজাতক, মায়ের স্বীকারোক্তিতে উদ্ধার লাশ

নিজস্ব সংবাদদাতা মিরপুর, কুষ্টিয়া। 

প্রকাশিত: ২১:৪০, ২৯ মে ২০২৫

পরকীয়ার বলি ২২ দিনের নবজাতক, মায়ের স্বীকারোক্তিতে উদ্ধার লাশ

কুষ্টিয়ার মিরপুরে পরকীয়ার জেরে ২২ দিনের এক নবজাতক কন্যাশিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে শিশুটির মা ও তার পরকীয়া প্রেমিকের বিরুদ্ধে। হত্যার পর শিশুটির মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে পাশের জিকে খালে ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় মিরপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের চিথলিয়া এলাকা থেকে অভিযুক্তদের আটক করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—শিশুটির মা মিতা খাতুন (২৫), তার পরকীয়া প্রেমিক ও চাচাতো ভাই শেরেবুল ইসলাম (২৮), শেরেবুলের পিতা সাইদুল ইসলাম (৫০), এবং ভাবি চাঁদনী খাতুন (৩৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় আট মাস আগে জেলার খলিষাকুন্ডি এলাকার রাজু নামের এক যুবকের সঙ্গে মিতা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের ছয় মাসের মাথায় তাদের ঘরে কন্যাসন্তান জান্নাতি জন্ম নেয়ায় সৃষ্টি হওয়া দাম্পত্য কলহের কারণে সন্তানসহ মিতা চলে আসে পিত্রালয়ে। এসময় মিতার পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে, যার জেরে রাজু ও শেরেবুলের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

পরবর্তীতে মিতা ও শেরেবুল মিলে শিশুটিকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং ২৫ মে সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত করে। শিশুটিকে হত্যার কাজে সহায়তা করে শেরেবুলের পিতা ও ভাবি। হত্যার পর তারা গুজব ছড়ায় যে, মিতার স্বামী রাজু খলিষাকুন্ডি থেকে শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে গেছেন।

পরে ২৫ মে রাতেই মিরপুর থানায় মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন শিশুটির মা মিতা খাতুন। তদন্তে গিয়ে মিরপুর থানা পুলিশ একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদের পর মিতার কাছ থেকে ঘটনার মূল তথ্য বের করে আনে। ২৯ মে সকালে মিতা স্বীকার করেন যে, তিনিই শিশুটিকে হত্যা করেছেন।

পরে মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমিনুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আজিজ ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করে এবং জিকে খাল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মিরপুর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম বলেন, "শিশুটির মা মিতা খাতুনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে চারজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জিকে খাল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আসামিদের শুক্রবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের জন্য নেওয়া হবে।"

রিফাত

×