
ছবি: জনকণ্ঠ
পার্বত্য বান্দরবানের সাত উপজেলাসহ জেলা সদরে প্রায় দুই হাজার পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ পাহাড়ধসের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। ইতিমধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কিছু কিছু এলাকা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া ভারী বৃষ্টিপাতে ঝুঁকিপূর্ণ বসতঘর পাহাড়ধসে চাপা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জেলার সাতটি উপজেলার ১০ হাজার মানুষ অতিমাত্রায় ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাতটি উপজেলায় ২২০টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং বান্দরবান জেলার পুলিশ সুপার এর পক্ষ থেকে যেকোনো পরিস্থিতিতে জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর বা জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুম নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, পার্বত্য বান্দরবানের সাত উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশে অপরিকল্পিতভাবে বসতি গড়ে তুলেছে কয়েক হাজার পরিবার। সদর উপজেলার বালাঘাটা, কালাঘাটা, বনরুপা, নতুন পাড়া, বীর বাহাদুর নগর, ইসলাম পুর'সহ কয়েকটি এলাকায় উঁচু নীচু পাহাড়ের ঢালুতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন হাজারও মানুষ। জেলা সদর ছাড়াও লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলাতেও পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে কয়েক হাজার মানুষ। পাশাপাশি প্রত্যেক বছর পাহাড়ের পাদদেশে নতুন নতুন বসতি গড়ে ওঠায় বিগত বছরের তুলনায় এবছর ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের সংখ্যা আরো বেড়ে গেছে। এলাকাগুলোর উঁচু পাহাড়ের উপর মাটি কেটে বসতঘর নির্মাণের ফলে বর্ষায় মৌসুমে বৃষ্টি শুরু হলে পাহাড় ধসের কবলে পড়ে প্রাণহানি ঘটে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে স্থানীয় প্রশাসনের একাধিকবার মাইকিং করা হলেও ঝুঁকি নিয়ে তারা বাড়িতেই অবস্থান করে থাকেন।
এদিকে, জেলায় অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নির্মলাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলার সঙ্গে সংযোগ সড়কগুলোতে পাহাড়ের মাটি সরে এসে যাতায়াতের বিঘ্ন ঘটছে। সাতটি উপজেলার অনেক এলাকায় বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে জানা গেছে।
বান্দরবান জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন মণ্ডল জানান, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শুক্রবার ৯টা পর্যন্ত ১'শ ৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ৪৮ঘন্টা টানা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পাহাড়ে যারা ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন সেখানে পাহাড় ধসে আশঙ্কা রয়েছে। টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণের নিরাপদ স্থানে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বান্দরবানের বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে জেলায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো ছেড়ে লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে প্রশাসনের। স্থানীয়দের সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সাব্বির