
ছবি: সংগৃহীত
চীনা মালিকানাধীন জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চীনে স্থানান্তরের অভিযোগে ৫৩০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার) জরিমানার মুখে পড়েছে।
ইউরোপীয় তথ্য সুরক্ষা নীতিমালা (GDPR) লঙ্ঘনের দায়ে আয়ারল্যান্ডের ডেটা প্রোটেকশন কমিশন (DPC) এই জরিমানা আরোপ করে।
ডাবলিনভিত্তিক DPC’র এক তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে, টিকটক ইউরোপীয় ব্যবহারকারীদের কিছু তথ্য চীনে হোস্ট করেছে এবং সেসব তথ্য চীনে অবস্থানরত কর্মীদের দূরবর্তী প্রবেশাধিকার ছিল।
প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করলেও, তদন্ত চলাকালে টিকটক পরে স্বীকার করে নেয় তথ্য হোস্টিংয়ের বিষয়টি।
ডিপিসির উপকমিশনার গ্রাহাম ডয়েল বলেন—“টিকটক প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে যে ইউরোপীয়দের তথ্য চীনে পাঠানোর পর তা EU-এর সমমানের নিরাপত্তা পাচ্ছে। এটি একটি গুরুতর ব্যর্থতা।”
DPC আরও জানিয়েছে, টিকটক এমন আইন মানছে যা ইইউ মানদণ্ডের সঙ্গে সাংঘর্ষিক—যেমন, চীনের সন্ত্রাসবিরোধী ও গোয়েন্দাবিরোধী আইন। এই আইনের আওতায় চীনা কর্তৃপক্ষ চাইলে বিদেশি ব্যবহারকারীর তথ্য আইনগতভাবে দাবি করতে পারে, এবং টিকটক এমন সম্ভাবনাকেও আমলে নেয়নি।
টিকটকের ইউরোপীয় ইউনিটের মুখপাত্র ক্রিস্টিন গ্রাহন বলেন—“চীনা কর্তৃপক্ষ কখনো ইউরোপীয়দের তথ্য চায়নি এবং আমরাও কোনো তথ্য দেইনি। এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমরা একমত নই এবং আপিল করব।”
২০২৩ সালেই টিকটককে ৩৪৫ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করা হয়েছিল শিশুদের তথ্য সুরক্ষা লঙ্ঘনের অভিযোগে। ইউরোপে টিকটকের সদর দপ্তর আয়ারল্যান্ডে হওয়ায় ডিপিসি প্রতিষ্ঠানটির মূল নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে।
ডিপিসি’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,“টিকটককে আগামী ছয় মাসের মধ্যে তাদের তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা সংশোধন করতে হবে। তা না হলে, চীনে তথ্য স্থানান্তর স্থগিত করে দেওয়া হবে।” এছাড়া, ব্যবহারকারীদের কাছে স্পষ্টভাবে না জানানোয় অতিরিক্ত ৪৫ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা আরোপ করা হয়েছে, যা স্বচ্ছতার অভাবের জন্য বরাদ্দ।
এই জরিমানা শুধু টিকটকের জন্য নয়, বরং বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি জোরালো সতর্কবার্তা—ব্যবহারকারীর তথ্য কোন দেশে যাচ্ছে, কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, এবং কতটা নিরাপদ তা নিশ্চিত করতে না পারলে আর্থিক ও আইনি খেসারত দিতে হবে।
ফারুক