
ছবি: সংগৃহীত
যশোর-৪ আসন (বাঘারপাড়া-অভয়নগর ও বসুন্দিয়া) থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভা করেছেন। আজ শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ বলেন, ‘ঋণখেলাপি, দুর্নীতির অভিযোগ আছে এমন কাউকে দল মনোনয়ন দেবে না বলে জানিয়েছে। সেক্ষেত্রে ক্লিন ইমেজের তরুণ ও ত্যাগী নেতারা মনোনয়ন পাবেন। আমি ১৭ বছর আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে ছিলাম। জেল, জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এলাকার মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি। আমি মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যশোর-৪ (অভয়নগর-বাঘারপাড়া ও বসুন্দিয়া ইউনিয়ন) আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। দেশ স্বাধীনের পর ১২টি নির্বাচনের ৮টিতেই বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর পাল্টে গেছে এই আসনের ভোটের সমীকরণ। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ ছাড়াও রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক প্রকৌশলী টিএস আইয়ুব, অভয়নগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফারাজী মতিয়ার রহমান, বাঘারপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র আবদুল হাই মনা। জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন যশোর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসূল।
এবার আসনটিতে বিএনপির অন্যতম প্রার্থী কেন্দ্রীয় নেতা প্রকৌশলী টিএস আইয়ুব। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে তিনি মাত্র ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে নৌকার কাছে হেরে যান। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি ধানের শীষের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তবে সেই নির্বাচনেও পরাজিত হন। এবারও তিনি সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে জোরেশোরে প্রচারণায় রয়েছেন। তার বিকল্প হিসাবে ভোটের মাঠে সরব আছেন অভয়নগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফারাজি মতিয়ার রহমান, বাঘারপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই মনা এবং জাতীয়তাবাদী যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ।
নেতাকর্মীরা জানান, আসনটির অন্যতম নেতা টিএস আইয়ুব ঋণ খেলাপি দায়ে সাজাপ্রাপ্ত। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। ফলে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ধারণা করছে ঋণ খেলাপির দায়ে তিনি মনোনয়ন পাবেন না। ফলে নতুন করে এই আসনটিতে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।
আসনটির মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘দলের অনেকে ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করছে। অনেকে ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করে প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হলে এক টাকাও অনৈতিক বাণিজ্য হবে না। বাঘারপাড়ায় আওয়ামী লীগের চারবারের সংসদ সদস্য রণজিৎ রায় যা করে গেছে; আর কোনো পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। মানুষ নির্বিঘ্নে সমস্ত রকমের কাজকর্ম সম্পন্ন করতে পারবে। কাউকে অহেতুক কোনো হয়রানির শিকার হতে হবে না।’
তিনি যশোরের দুঃখ ভবদহ সমস্যার স্থায়ী সমাধান ও দেশের অন্যতম নওয়াপাড়া নৌবন্দর বিদেশি বিনিয়োগবান্ধব, ব্যবসায়ীবান্ধব করে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সভায় তিনি দলীয় মনোনয়ন লাভের জন্য তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাংবাদিকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।
সাজেদ রহমান/রাকিব