ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের আলোচনায় কাদের

জাতীয় পতাকার সঙ্গে লাঠি নিয়ে রাস্তায় নামলে জবাব

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

জাতীয় পতাকার সঙ্গে লাঠি নিয়ে রাস্তায় নামলে জবাব

ওবায়দুল কাদের

বিএনপির উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি জাতীয় পতাকার সঙ্গে লাঠি নিয়ে রাস্তায় নামলে জবাব দেয়া হবে। লাঠি নিয়ে খেলা, আগুন নিয়ে খেলা চলবে না। আওয়ামী লীগ রাজপথ কাউকে ইজারা দেয়নি। আওয়ামী লীগ রাজপথে আছে, রাজপথ কারও পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। রাজপথে আমরা নামব জনগণের জন্য আমাদের উন্নয়নের জন্য। রাজপথ দখল করবেন দেখা যাবে, অপেক্ষায় আছি।
বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোমর ভাঙ্গা বিএনপি, হাঁটুভাঙ্গা বিএনপি এখন লাঠির ওপর ভরে করেছে। এটা আমরা বলছি না, বলেছেন ডাঃ জাফরুল্লাহ। লাঠি চলে গিয়েছিল, আবার বিএনপি লাঠি ফিরিয়ে এনেছে। লাঠির মাথায় জাতীয় পতাকা বাঁধা, আবার বলে লাঠি আরও বড় হবে। কত বড় আস্ফালন! এর জবাব আমরা দেব। লাঠি নিয়ে রাস্তায় আস্ফালন করলে জবাব আছে। আমি পরিষ্কার করে বলছি,  লাঠি নিয়ে খেলা, আগুন নিয়ে খেলা চলবে না।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবারও বিজয়ী হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২২ দলীয় জোটের নামে বিএনপি জগাখিচুড়ির আন্দোলনে মাঠে নেমেছে। বিএনপি ইচ্ছে করে উস্কানি দিচ্ছে যাতে আওয়ামী লীগ সংঘাতে জড়ায়। তারা ইচ্ছে করে আওয়ামী লীগ, পুলিশকে উস্কানি দেয়। এ সময় দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আবারও বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাব ইনশা আল্লাহ। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার লক্ষ্য ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ, ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়ে গেছে। এবারের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ। এবারে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য তুলে ধরেছেন আমাদের ক্রাইসিস ম্যানেজার শেখ হাসিনা। আমরা জানি বিএনপি ভোটে শেখ হাসিনাকে হটাতে পারবে না তাই ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। খেলা হবে, মোকাবেলা হবে আন্দোলনে, নির্বাচনে প্রমাণ হয়ে যাবে এদেশের মানুষ কাকে চায়।
সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, স্বজন হারানোর বেদনা চাপা দিয়ে শেখ হাসিনা ঝড়, বৃষ্টি আঁধার রাতে ফিরে এসেছিলেন। তার সুদক্ষ পরিচালনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন করছেন। দলের নেতা-কর্মীদের জনগণের মাঝে সুকর্ম করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যদি সুকর্ম করি তাহলে একাট্টা হয়ে তার পেছনে দাঁড়াবে।
সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগে নয় ১৭ কোটি মানুষের শক্তি এবং সম্পদ। তিনি দেশকে অন্ধকার থেকে উদ্ধার করতে দেশে ফিরে এসেছিলেন। বাংলাদেশকে পৃথিবীর বুকে উন্নত, সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার ভিত্তি স্থাপন করেছেন। দেশে প্রতিটি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। যা সারা বিশ্বে নন্দিত হয়েছে। সারা পৃথিবীতে তিনি মানবতার মা হিসেবে প্রশংসিত।
সভাপতিম-লীর আরেক সদস্য এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বাংলাদেশের বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন সারথির নাম শেখ হাসিনা। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে দেশের সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য অসীম সাহসী নিজের জীবনের সবটুকু সময় দিয়েছেন। তার সুদৃঢ় নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
সভাপতিম-লীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশ আবার পাকিস্তানীদের হাতে চলে গিয়েছিল। বাংলাদেশকে পাকিস্তানের হাতে তুলে দেয়া হয়েছিল। সেই সময়ে তিমির হননের নেত্রী শেখ হাসিনা অনেক কষ্টের সাগর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। দেশে ফিরে বাঙালীকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন। বাঙালীর মুক্তির সনদ নিয়ে এখনও তিনি সামনের দিকে ছুটে যাচ্ছেন। বাংলাদেশকে অভাবনীয় উন্নয়ন উপহার দিয়েছেন।
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, শেখ হাসিনা মানবতার নাম, আন্দোলন-সংগ্রামের মূর্ত প্রতীকের নাম। অজেয় পথচলার অকুতোভয় বীর সৈনিকের নাম। তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি সকল বাধা উপেক্ষা করে দেশে ফিরে আসেন।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনীরা বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। শেখ হাসিনাকে ২১ বার হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হতে পারেনি, পারবে না। কারণ শেখ হাসিনাকে দেশের মানুষ ভালবাসে। শেখ হাসিনা গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির প্রতীক। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সততা, নিষ্ঠার বলিষ্ঠ উদাহরণ। আমাদের সম্মানের জায়গায় বসিয়েছেন। বাঙালী জাতিকে বিশ্ববাসীর কাছে মর্যাদার আসনে নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে আগমনের মধ্য দিয়ে বাঙালী উজ্জীবিত হয়েছিল।

×