
ঘর থেকে দু’পা ফেললেই আমাদের যানবাহনের সহায়তা নিতে হয়। গন্তব্যে দ্রুত পৌঁছানোর আশা নিয়ে আমরা গাড়িতে উঠি। কিন্তু যখন যানবাহনই আমাদের গন্তব্যে দেরির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তখন হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। ইদানীং যানজট এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, শহরের প্রতিটি নাগরিক এতে ভোগান্তির শিকার। যে পথে ৩০ মিনিটে পৌঁছানো সম্ভব ছিল, সেখানে এখন দুই ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় লেগে যায়। ফলে আমাদের মূল্যবান সময় অপচয়ের পাশাপাশি জনজীবনও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মূলত ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে অবহেলা এবং যানবাহন চালকদের অসচেতন আচরণ যানজটের প্রধান কারণ। রাস্তায় বেরোলেই দেখা যায়, কিছু ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব পালনে উদাসীন। অনেক চালক আইন লঙ্ঘন করে রং সাইডে গাড়ি চালান, যা সড়কে বিশৃঙ্খলা এবং যানজটের অন্যতম কারণ। এছাড়া রাস্তার পাশে গড়ে ওঠা দোকানপাট এবং ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করার প্রবণতা সড়ক সংকীর্ণ করে, যা যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটায়।
যানজট নিরসনে প্রয়োজন সুপরিকল্পিত ও কৌশলগত পদক্ষেপ। এর জন্য প্রথমেই প্রয়োজন দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত ট্রাফিক পুলিশ। তাদের সঠিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দায়িত্ব পালনের মান উন্নত করতে হবে। একইসঙ্গে চালকদের দক্ষতা নিশ্চিত করা এবং অদক্ষ চালকদের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা অত্যন্ত জরুরি। রাস্তার পাশে থাকা অবৈধ দোকানপাট দ্রুত সরিয়ে ফেলা উচিত। অবৈধভাবে বা ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে জরিমানা এবং মামলা করার ব্যবস্থা আরও কঠোর করতে হবে। সড়কে শৃঙ্খলা আনার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাফিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং লাইভ আপডেটের জন্য অ্যাপ্লিকেশন চালু করা যেতে পারে। যেখানে-সেখানে পার্কিং ঠেকাতে আইন প্রণয়ন ও তার যথাযথ প্রয়োগ জরুরি। রাস্তার পাশে পড়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা দ্রুত পরিষ্কার করে সড়ককে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করতে হবে।
তবে প্রশাসনের পদক্ষেপের পাশাপাশি নাগরিকদেরও সচেতন হওয়া দরকার। সড়কে শৃঙ্খলা মেনে চলার দায়িত্ব আমাদের প্রত্যেকের। প্রশাসনের দিকে শুধু তাকিয়ে থাকলে চলবে না; বরং নিজের প্রয়োজনেই নিজেকে সচেতন হতে হবে।
উম্মে জোবায়দা, ইডেন মহিলা কলেজ
প্যানেল