
প্রতিবেশী দেশ ভারত হঠাৎ করে ট্রানজিট সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ায় কিছুটা বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ। এমতাবস্থায় পণ্য পরিবহনে সাময়িক অসুবিধা দেখা দেয়। চট্টগ্রাম ও মোংলা নৌবন্দরের মাধ্যমে স্বাভাবিক নিয়মে পণ্যবাহী জাহাজ অর্থাৎ কার্গো ভ্যাসেলে ব্যবসাবাণিজ্য চলমান। তবে তাতে সময় বেশি লাগে। পরিবহন ব্যয়েও খুব একটা সাশ্রয় হয় না। ফলে, বর্তমান বিশ্বে সমুদ্র বন্দরের পাশাপাশি আকাশপথে বিমানবন্দরের মাধ্যমে পণ্য আমদানি-রপ্তানি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপাতদৃষ্টিতে পণ্য পরিবহন ভাড়া কিছু বেশি হলেও খুব দ্রুত পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা যায় বিধায় জনপ্রিয় হচ্ছে কার্গো ফ্লাইট।
প্রথম দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাধ্যমে কার্গো ফ্লাইট পরিচালনায় সুযোগ-সুবিধা পর্যাপ্ত ও আধুনিক ছিল না। ফলে, পণ্য পরিবহনে আমদানি-রপ্তানির অভিযোগেরও অন্ত ছিল না ব্যবসায়ীদের। এ অবস্থার দ্রুত জরুরি সমাধানে বিমানবন্দরে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে কার্গো সুবিধা সম্প্রসারণ. দক্ষতার সঙ্গে পণ্য খালাস এবং নিয়মিত কার্গো ফ্লাইট পরিচালনায় সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য যুক্তরাজ্যের দুটি কোম্পানি এগিয়ে আসে। এর জন্য বিমানবন্দরে আমদানি-রপ্তানির সুবিধার্থে শাহজালাল বিমানবন্দরে ল্যান্ডিং, পার্কিং, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং এবং সর্বাধুনিক স্ক্যানার মেশিন বসানো হয়। ফলে, বিমানবন্দরে সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় বহুগুণ।
বর্তমানে সময় ও চাহিদার প্রেক্ষিতে শাহজালাল বিমানবন্দরের পাশাপাশি সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দর এবং শাহ আমানত বিমানবন্দরের কর্গো ফ্লাইট দক্ষতার সঙ্গে সামলানোর জন্য আধুনিক ও সম্প্রসারিত করার কাজ শুরু হয়েছে। এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে শাহজালাল বিমানবন্দরকে আরও গতিশীল করা হয়েছে। সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের সুবিধা ইতোমধ্যে বাড়ানো হয়েছে। চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরও আগামী দুই মাসের মধ্যে কার্গো ফ্লাইট পরিচালনাসহ পণ্য পরিবহনের জন্য সক্ষম করে তোলার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এসবের ফলে সার্বিকভাবে আকাশপথে ব্যবসাবাণিজ্য আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে বলেই প্রত্যাশা।
ইতোমধ্যে বেড়েছে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সার্বিক সেবার মান। অথচ কিছুদিন আগেও এই বিমানবন্দর ব্যবহারকারীদের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রীদের অভিযোগের অন্ত ছিল না। বাস্তবে দেশব্যাপী সংঘটিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অন্যতম দাবি সর্বত্র সংস্কার কর্মসূচির ছোঁয়া লেগেছে শাহজালাল বিমানবন্দরেও। বহির্গমন ও অভ্যন্তরীণ যাত্রীরা এখন বিমান থেকে অবতরণ করে খুব সহজেই পাচ্ছেন কাক্সিক্ষত সেবা- তা সে হোক না কেন বিমানবন্দরের কর্মী অথবা প্রযুক্তিগত সুবিধা। যেমন- এখন হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় যাত্রীদের লাগেজ বহনের ট্রলি, একই সঙ্গে লোডার বা পোর্টারের আন্তরিক সেবা। ফলে, একজন যাত্রী খুব সহজে বিপুল পরিমাণের লাগেজ নিয়ে টার্মিনাল থেকে একেবারে চলে যেতে পারেন রাস্তা পর্যন্ত কার পার্কিং এলাকায়। সময়মতো লাগেজ পেতেও সমস্যা হয় না। ফলে, আকাশপথে জনপ্রিয় হচ্ছে পণ্য পরিবহন। এর পাশাপাশি সার্বিকভাবে হ্যান্ডলিং চার্জও কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
প্যানেল