ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যানজট থেকে মুক্তির উপায়

ওবায়দুল কবির

প্রকাশিত: ২১:২২, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

যানজট থেকে মুক্তির উপায়

.

রাজধানীর যানজট ক্রমশ অসহনীয় হয়ে উঠছে। কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি মানুষের ভোগান্তির চিত্র সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে প্রতিদিন। অতীতে সিটি করপোরেশন কিংবা ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তাগণ যানজটের নানা কারণ ব্যাখ্যা করতেন। এসব ব্যাখ্যার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন আর কোনো ব্যাখ্যাও দৃষ্টিগোচর হয় না। রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ ব্যস্ততার মধ্যেই সময় কাটাচ্ছেন। অনেক স্থানে তাদের গলদঘর্ম হতে দেখা যায়। স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যালের পরিবর্তে এই দায়িত্ব তারা নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। ট্রাফিক বিভাগ থেকে একাধিকবার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ‘ঢাকা মহানগরীর রাস্তায় গাড়ির ঘনত্ব অনেক বেশি। সময় ভেদে গাড়ির চাপ কম বা বেশি থাকে। এসব কারণে নাকি ট্রাফিক সিগন্যাল চালু করা সম্ভব হয় না।’ বিশেষজ্ঞরা এই যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, বিশে^র সকল নগরীতেই সময়ভেদে গাড়ির চাপ কমবেশি থাকে। ঢাকার চেয়ে গাড়ির সংখ্যা সকল উন্নত শহরেই বেশি। গাড়ির চাপ সামলাতেই প্রয়োজন হয় আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা। উন্নত শহরগুলোতে রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ দেখাই যায় না। কন্ট্রোল রুমে বসে তারা ট্রাফিক সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করেন। আমাদের ট্রাফিক পুলিশকে কেন রাস্তায় গলদঘর্ম হতে হবে? বর্তমান সরকারের আমলে রাজধানীতে ট্রাফিক সিগন্যাল চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল চালু হলে অতীতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের দেওয়া বক্তব্যগুলোর অসারতা প্রমাণ হবে। 
যানজটের একটি একাডেমিক সংজ্ঞা রয়েছে। এতে বলা হয়, যানজট হচ্ছে যানবাহনের ধীর গতি। যানবাহনের সারি বৃদ্ধি দিয়ে এটি চিহ্নিত করা হয়। আমাদের দেশে যানজট এখন আর ধীরগতিতে সীমাবদ্ধ নেই। অনির্দিষ্ট সময় রাস্তায় আটকে থাকাকেই যানজট হিসাবে মনে করা হয়। ১৯৫০-এর দশক থেকে বিশ^জুড়ে শহুরে সড়ক নেটওয়ার্কগুলোতে যানজট বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটন ছিল আমেরিকার ‘কনজেস্টেড অ্যাভিনিউ’। পরে বিশে^র অনেক শহর এই তালিকায় যুক্ত হয়। বর্তমানে বিশে^র সবচেয়ে যানজটপূর্ণ শহরের মধ্যে রয়েছে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরো, সাও পাওলো, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, ফিলিপিন্সের ম্যানিলা ইত্যাদির নাম বলা হয়। খাতা কলমে উল্লেখ না থাকলেও বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা যানজটের দিক থেকে কোনো অংশেই কম নয়। ঢাকার যানজটের কারণ অবশ্য বিশে^র অন্যান্য শহরের মতো নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিকল্পনার অভাবেই ঢাকার যানজট তীব্র হচ্ছে। সঠিক পরিকল্পনায় এটি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা যায়। কয়েক বছর আগে সিটি করপোরেশন থেকে বলা হয়েছিল, ‘অবকাঠামো নির্মাণ করে দেওয়া সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব। করপোরেশন তা করে দিচ্ছে। ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ডিভাইডার, রাস্তার ট্রাফিক সিগন্যাল ইত্যাদি সিটি কর্পোরেশন থেকে করা হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এগুলো এখন পড়ে আছে অব্যবহৃত। লাল-সবুজ-হলুদ লাইটগুলো জ্বলছে আর নিভছে। খরচ করছে সরকারের বিদ্যুৎ। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে প্রাণান্ত খেটে যাচ্ছেন ট্রাফিক সার্জন কিংবা পুলিশ। কাজের কাজ হচ্ছে না কিছুই।’ ট্রাফিক বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, ‘শুধু অবকাঠামো নির্মাণ করে দিলেই যানজট দূর করা সম্ভব নয়। নগরীর গোটা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা একাধিক কর্তৃপক্ষের হাতে রয়েছে। সিগন্যাল স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা রয়েছে সিটি করপোরেশনের হাতে। দায়িত্ব পালন করতে হয় পুলিশকে। দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় করতেই অনেক সময় সমস্যা হয়। উাদাহরণ হিসাবে বলা যায়, ট্রাফিক সিগন্যালের একটি লাইন নষ্ট হয়ে গেলে সিটি করপোরেশনকে লিখিত ভাবে জানাতে হয়। দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় অনেক সময় লাগিয়ে মেরামত করা হয় সিগন্যালের বাতি। এমন আরও অনেক জটিলতা রয়েছে। অটোমেটিক সিগন্যাল চালাতে হলে একটি কর্তৃপক্ষের কাছে সকল দায়িত্ব হস্তান্তরের বিকল্প নাই।’ 
সনাতন পদ্ধতিতে ট্রাফিক সিগন্যাল চলে কর্তব্যরত কর্মকতার ইচ্ছে অনুযায়ী। কোনো কোনো সময় ভিআইপির কারণে আবার কখনো পরিশ্রম কমানোর কারণে দীর্ঘ সময় যানবাহন আটকে রাখা হয়। দীর্ঘ সময় কি কারণে যানবাহন আটকে রাখা হলো, প্রশ্ন করলে কর্তব্যরত ট্রাফিক কর্মকর্তা কখনো সঠিক জবাব দেন না। বরং ভীষণ বিরক্ত হয়ে বলেন ‘ওপরে জিজ্ঞেস করুন।’ ওপরে কাকে, প্রশ্নের কোনো জবাব পাওয়া যায় না। অধকাংশ সময় জবাব দেওয়ার প্রয়োজনও বোধ করেন না। রাস্তাটি আটকে রাখার পেছনে ট্রাফিক কর্মকর্তার কোনো যুক্তি থাকতেই পারে। আটকে থাকা মানুষগুলো কি অপরাধ করেছে? এর মধ্যে কারও জরুরি কাজ থাকতে পারে। কেউ অসুস্থ থাকতে পারেন। এসব ভাবার সময় কিংবা মানসিকতা ওই কর্মকর্তার কি থাকা উচিত নয়? ব্যক্তির ইচ্ছায় আইন পরিচালিত হলে এমন চিত্র দেখা যাবে বারবার। অটোসিগন্যাল কন্ট্রোলিং ব্যবস্থা থাকলে নিশ্চয়ই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। বিশে^র অনেক শহরে একটি মাত্র কক্ষ থেকে গোটা শহরের যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আমাদেরও বিষয়টি ভাবার সময় হয়েছে।
ব্যক্তির সিদ্ধান্তে ট্রাফিক পরিচালনার পাশাপাশি রাজধানীর যানজটের আরও একটি অন্যতম কারণ সড়কের নৈরাজ্য। এই নৈরাজ্যে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে যাত্রীবাহী বাস। রাস্তার যেখানে সেখানে বাসগুলো থেমে যাত্রী ওঠাচ্ছে। যাত্রী ওঠানোর প্রতিযোগিতায় বাস থামিয়ে রাখা হচ্ছে রাস্তার মাঝখানে। এরপর শুরু হয় আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতা। রাস্তায় বাসের এমন চলাচলে মনে হয় না বাস চালকরা আইন-কানুনের কোনো তোয়াক্কা করে। এতে শুধু যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এমন নয়, প্রতিদিনই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে যাত্রী কিংবা পথচারী। ২০/২৫ মিনিট অন্যায়ভাবে আটকে থাকার পর একটি গাড়ি আর কোনো আইনেরই তোয়াক্কা করে না। অনেক ড্রাইভারকে বলতে শুনেছি, ট্রাফিক কর্মকর্তা নিজেই যখন আইন ভেঙে এতক্ষণ গাড়ি আটকে রাখেন, তখন আইন মানতে আমাদের আর দায় কি? যাত্রীবাহী বাসের এই প্রতিযোগিতা থামানো এবং যাত্রীসেবার মান বাড়াতে রাজধানীর দুই সিটি নানা উদ্যোগ নিয়েছিল। উত্তর সিটির প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের একটি পরিকল্পনা ছিল, এক রুটে এক কোম্পানির বাস চালানো। তার এই পকিল্পনার পরীক্ষামূলক আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছিল কিছুদিন আগে। শেষ পর্যন্ত বাস মালিকদের অনীহায় পদ্ধতিটি ভেস্তে গেছে। 
যানজটের আরও একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে শহরে পার্কিং স্বল্পতা। প্রতিদিন বাড়ছে গাড়ি। সেভাবে তৈরি হচ্ছে না অবকাঠামো। পার্কিংব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকে সিটি করপোরেশন কিংবা অন্য কোনো সংস্থার কোনো উদ্যোগ নেই। রাস্তায় গাড়ি বের হলে কোথাও না কোথাও থামতেই হবে। পার্কিং না পেলে গাড়িটিকে রাস্তার ওপরই দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। এ জন্য কখনও মামলা বা জরিমানা গুনতে হলেও করার কিছু নেই। নগরীতে পার্কিং নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। পার্কিং নির্মাণের জন্য এত খালি জায়গা পাওয়া কঠিন। এজন্য বিশেষজ্ঞরা বহুতল পাকিং নির্মাণের কথা বলে আসছেন। বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলে দু’একটি নির্মিতও হয়েছে। চাহিদার তুলনায় তা খুবই কম। নগরীর সকল এলাকায় সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে এমন অনেক বহুতল পার্কিং নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। 
পার্কিং সমস্যার অনেকটা সমাধান এবং সড়কে প্রাইভেট গাড়ির চাপ কমাতে পারে সুষ্ঠু গণপরিবহন ব্যবস্থা। রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছে প্রায় দুই কোটি মানুষ। বিশ্বের সকল বড় শহরে গণপরিবহনের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয়। আমাদের দেশে এটি গুরুত্বহীন একটি খাত। বিআরটিসির কিছু বাস রাস্তায় দিয়েই  সরকারের দায়িত্ব শেষ। বড় শহরগুলোতে যাত্রীদের জন্য থাকে অনেক বিকল্প ব্যবস্থা। প্রধান গণপরিবহন পাতাল রেলের পাশাপাশি রাস্তায় থাকে বাস। এগুলো পরিচালনা করে সরকার কিংবা প্রাইভেট কোম্পানি। প্রি-পেইড টিকিট কিংবা বাসে উঠে ড্রাইভারের কাছে ভাড়া মিটিয়ে এসব বাসে চলাচল করা যায়। এর বাইরে বিকল্প হিসেবে থাকে ট্যাক্সি সার্ভিস। ঢাকায় বাস সার্ভিসের দুরবস্থায়ও ট্যাক্সির কৃষ্টি গড়ে ওঠেনি। ২০০৩ সালে একবার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিছু হলুদ (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) এবং কিছু কালো ট্যাক্সি রাস্তায় নামানো হয়। ভারতে তৈরি নি¤œমানের গাড়ি দিয়ে শুরু করা এসব ট্যাক্সি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অকেজো হয়ে যায়। নতুন করে আর কোনো ট্যাক্সির অনুমোদন দেওয়া হয়নি। আরও পরে সরকার দুটি প্রতিষ্ঠানকে খুবই অল্প কয়েকটি ট্যাক্সির অনুমোদন দিয়েছিল। সেসব কিছুদিন রাস্তায় চলেছে। গাড়ি স্বল্পতা এবং অত্যধিক ভাড়ার কারণে যাত্রীরা আর ট্যাক্সি সার্ভিসে অভ্যস্ত হওয়ার সুযোগ পায়নি। পরে আর সরকার ট্যাক্সির বিষয়টি নিয়ে কখনও মাথা ঘামায়নি। বিশ্বের কোনো রাজধানী শহরে ট্যাক্সি সার্ভিস নেই এটি কল্পনাই করা যায় না। অজ্ঞাত কারণে আমাদের রয়েছে ট্যাক্সিবিরোধ নীতি। রাস্তায় প্রয়োজন মতো ট্যাক্সি পাওয়া গেলে পার্কিং সমস্যা এড়াতে অনেকেই ট্যাক্সির ওপর নির্ভরশীল হতো। হ্রাস পেত রাস্তায় পরিবহনের সংখ্যা। 
অনেক ক্ষেত্রে রাস্তা বা ফুটপাতে অবৈধ দোকানপাট যানজটের সৃষ্টি করছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, গুলিস্তান এলাকায় এতবার অভিযান চালানোর পরও অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ সম্ভব হয়নি। সিটি করপোরেশনের মেয়র, সড়কমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় পরিচালিত এসব উচ্ছেদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আবার দোকানপাট বসে গেছে। গুলিস্তানের হকারদের কারণে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের সুফল অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে। যাত্রাবাড়ী থেকে একটি গাড়ি ফ্লাইওভারে উঠে কয়েক মিনিটে গুলিস্তান এলাকায় পৌঁছেও হকার সৃষ্ট যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়। হকারদের নেটওয়ার্ক এতটাই শক্তিশালী যে, সম্ভবত প্রশাসন এখন হাল ছেড়ে দিয়েছে।
রাজধানীর যানজটের অন্যতম প্রধান কারণ দুর্বল পরিকল্পনা। ঢাকার দুই সিটি, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন এবং সাভার ও কেরানীগঞ্জ নিয়ে তৈরি হয়েছে মেগা সিটি ঢাকা। বিশাল এই সিটির যানবাহন চলাচল ব্যবস্থায় তেমন কোনো পরিকল্পনাই দৃষ্টিগোচর হয় না। রাজধানীর যানজট নিরসনে সরাসরি জড়িত অন্তত এক ডজন সংস্থা। এসব সংস্থার মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। যে যার মতো করে চালাচ্ছে উন্নয়ন কর্মকা-। একটি সংস্থা কাজ শেষ করার ছয় মাসের মাথায় আরেকটি সংস্থা কাজ শুরু করছে। এভাবে রাস্তা কাটা হচ্ছে বারবার। নাগরিকদের ভোগান্তি আর শেষ হচ্ছে না। বড় প্রকল্পগুলোতেও রয়েছে পরিকল্পনার অভাব। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত আট লেনের রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। সাইনবোর্ড নামক স্থানে তিন রাস্তার মোড়ে সারাক্ষণ যানজট লেগেই থাকে। এই স্থানে একটি ইউটার্ন নির্মাণ করা হলেও চালকদের অসহযোগিতায় তা কার্যকর হয়নি। 
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার রাজধানীতে হাতের বদলে রিমোটে ট্রাফিক সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এবং ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন যৌথভাবে এই পদ্ধতি পরিচালনা করে। ‘নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ উন্নয়ন (কেইস)’ প্রকল্পের আওতায় এই পদ্ধতি বাস্তবায়িত হচ্ছে। কয়েকটি স্থানে এই পদ্ধতি চালু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ৭৭টি ট্রাফিক সিগন্যাল এই পদ্ধতির আওতায় আসবে। ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩৪টি রিমোট কেনা হয়েছে বলে জানানো হয়। প্রযুক্তি ব্যবহারে পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এটা শুধু করা হবে পিক আওয়ারে। অফ পিক আওয়ারে অটোমেশন সিস্টেমে ট্রাফিক সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এই পদ্ধতিতে লাল বা সবুজ বাতির প্রতি যানবাহন চালকদের শ্রদ্ধা তৈরি হবে। ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ অটোমেটিক পদ্ধতিতে সিগন্যাল চালু করা সম্ভব হবে। এছাড়া সরকার রাজধানীতে সকল বাস সার্ভিস একটি কোম্পানির আাওতায় আনার একটি বড় ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এক সময় বাস মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে এটি প্রায় অসম্ভব ছিল। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ আন্তরিক হলে নিশ্চয়ই এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব। অটো সিগন্যাল এবং একটি মাত্র কোম্পানির অধীনে সকল বাস সার্ভিস পরিচালিত হলে বদলে যাবে রাজধানীর পরিবহন চিত্র।  
লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, জনকণ্ঠ

×