
পশু হাট থেকে এনেই স্যালাইন জাতীয় পানীয় বা সামান্য লবণমিশ্রিত কুসুম গরম পানির পান করানো। কেননা, পশুটি দূর দূরান্ত থেকে আসা ও হাটে প্রচণ্ড পানির পিপাসায় থাকায় প্রথমেই দানা জাতীয় খাবার না দিলে; প্রাণীটি ধকল কাটিয়ে আরামবোধ করবে।
পশুর মালিক ও পরিবেশ ভিন্ন হওয়ায় অনেক সময় কিছুই খেতে চায় না। সেজন্য অনেকে জোরপূর্বক খাইয়ে দেন এবং মারধর করে থাকেন; যেটা অবশ্যই অনুচিত ও গর্হিত কাজ। বরং পশুকে কয়েক ধরনের খাবার দিয়ে দেখা যেতে পারে পশু কোনটা খাচ্ছে, সেটাই তার খাবারে যুক্ত করা। অবশ্য এখন বাজারে অনেক রেডি ফিড পাওয়া যায়, যা ওজন অনুসারে ভালো কোম্পানির ফিড খাওয়ানো যেতে পারে।
পশুদের প্রিয় খাদ্যের তালিকায় রয়েছে ভাতের মাড়। ভাতের মাড়ের সঙ্গে গমের ভুসি, চালের গুঁড়া বা খের বা খড়। আর ছাগলের ক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ ভাতের সঙ্গে চালের গুঁড়া বা ভাঙা গম মিশিয়ে দেওয়া যায়। এবং গাছের লতাপাতা ও ঘাস জাতীয় খাবার। তাজা শাকসবজি ও কাঁঠাল পাতা দেওয়া যেতে পারে।
করণীয় ও বর্জনীয় :
১. কোরবানির গরু, ছাগল, ভেড়া কিংবা অন্য পশুকে স্যাঁতসেঁতে, অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা জায়গায় রাখা যাবে না। হাট থেকে পশু কিনে সম্ভব হলে দ্রুত গোসল করানো উচিত।
২. প্রতিদিন পশুর মলমূত্র, উচ্ছিষ্ট খাদ্য, চেনা ইত্যাদি পরিষ্কারের ব্যবস্থা করা। রাস্তার পাশে বা ড্রেনে না ফেলে এবং পরিবেশ যেন দূষিত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৩. ঈদের নামাজে যাওয়ার আগেই পশুকে গোসল করানো উচিত। যাতে গায়ে লেগে থাকা ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়।
৪. জবাই করার জন্য শোয়ানোর সময় খুব বেশি ধস্তাধস্তি না করা। কৌশলে শুইয়ে দেরি না করে দ্রুত জবাই করা।
৫. ছুরি বা চাকু ভালো করে ধার দেওয়া। তবে কোনো পশুর সামনে ধার না দেওয়া।
৬. অন্য পশুর সামনে জবাই না করা। এতে জীবিত পশুর মধ্যে আতঙ্ক ও ভয় সৃষ্টি হয়। পশু কষ্টও পেতে পারে।
৭. যথাসম্ভব সরকার কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে পশু জবাই করা। রক্ত, মলমূত্র ও বর্জ্য যত্রতত্র না ফেলে একত্রে গর্ত করে পুঁতে ফেলা।
৮. পশু শোয়ানোর পর ছুরি ধার দেওয়া উচিত নয়। এটা পশুর প্রতি অবিচার। হাদিসে এসেছে, নবীজি (সা.)-এর যুগে এক ব্যক্তি একটি ছাগল শুইয়ে তার গর্দানে নিজ পা রেখে ছুরি ধার দিচ্ছিল। তা দেখে নবীজি (সা.) বললেন, ‘তুমি কি চাও পশুটি দুবার মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করুক?’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ : ৪/৩৩)
তাই, পশুর সামনে ছুরি ধার না দেওয়া। এতে পশুর কষ্ট হয়।
মিরপুর, ঢাকা থেকে
প্যানেল