
পুতিন ও জেলেনস্কি
রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ থামার কোনো ইঙ্গিত নেই। তুরস্কের ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সরাসরি আলোচনায়ও শান্তির পথে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন স্পষ্ট করে দিয়েছে, আপোসের কোনো জায়গা নেই। ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের হাতে দেওয়া একটি স্মারকলিপিতে দেশটি যে শর্তগুলো দিয়েছে, তা ইউক্রেনের কাছে আত্মসমর্পণের শামিল।
এই স্মারকলিপিতে চারটি দখলকৃত অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকার করতে বলা হয়েছে ইউক্রেনকে যা কিয়েভ আগেও বহুবার প্রত্যাখ্যান করেছে। এদিকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীতে বুধবার রদবদলের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এই রদবদল অনুযায়ী একজন কমান্ডারকে নতুন পদে নিয়োগ দেওয়া হবে যিনি রাশিয়ার এক মারাত্মক হামলার পর পদত্যাগ করেছিলেন। খবর আরটির।
রাশিয়ার দাবি এখানেই থেমে নেই। তারা ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর আকার সীমিত করতে চায়, নিষিদ্ধ করতে চায় সামরিক জোটে যোগদান, বিদেশি সেনাদের আশ্রয় দেওয়া ও পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন। এ ধরনের শর্ত ইউক্রেনের জন্য নিছক নিরস্ত্রীকরণই নয় বরং ইউরোপের নিরাপত্তার প্রতিও এক ধরনের চ্যালেঞ্জ। পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে রাশিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ হিসেবে দেখে। রাশিয়া আরও দাবি করছে, তাদের সঙ্গে পূর্ণ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে হবে এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।
পাশাপাশি কোনো পক্ষই ক্ষতিপূরণের দাবি তুলতে পারবে না। রাশিয়ার এই অনড় অবস্থানের পেছনে রয়েছে দুটি বড় কারণ। প্রথমত, সামর্থ্যরে ব্যবধান সত্ত্বেও ইউক্রেন এখন রাশিয়ার ভেতরে গভীর পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম। সম্প্রতি ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় রাশিয়ার কৌশলগত বোমারু বিমানঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যা একটি বড় বার্তা। দ্বিতীয়ত, মার্কিন রাজনীতিতে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হতাশা বাড়লেও রাশিয়া তার দাবিতে আরও কঠোর হয়ে উঠেছে। ট্রাম্প সম্প্রতি পুতিনকে পাগল বলে অভিহিত করেন।
কিন্তু এই বক্তব্যের বিপরীতে রাশিয়া যেভাবে শান্তির প্রস্তাবকে উপহাসের জায়গায় নিয়ে গেছে, তাতে ট্রাম্প নিজেই এখন রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চাপে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প চাইলে এখনো কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারেন। যেমন ইউক্রেনকে অতিরিক্ত সামরিক সহায়তা দেওয়া বা রাশিয়ার ওপর আরও কঠিন নিষেধাজ্ঞা চাপানো, যেগুলো মার্কিন সিনেটে সহজেই পাস হবে। সিনেটর রিচার্ড ব্লুমেন্থাল ইতোমধ্যেই রাশিয়ার এই মনোভাবকে শান্তি প্রচেষ্টার প্রতি তাচ্ছিল্য বলে আখ্যা দিয়েছেন।