ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পরিচ্ছন্নতা জরুরি

এ আর সালাউদ্দিন ফেরদৌস

প্রকাশিত: ১৮:১৯, ৪ জুন ২০২৫

পরিচ্ছন্নতা জরুরি

ঈদুল আজহার প্রাক্কালে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে কোরবানির পশু কেনার ধুম। হাটবাজারে গরু, ছাগল, ভেড়া ও উটের সমারোহ দেখে বোঝাই যাচ্ছে, মুসলিম উম্মাহ প্রিয় নবী ইব্রাহিম (আ.)-এর সুন্নত পালনে প্রস্তুত। কিন্তু পশু কেনার পর থেকে জবাই পর্যন্ত তার যত্ন সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই অজানা।
হাট থেকে পশু কেনার পর অনেকেই দৌড়ে বাড়ি নিয়ে যান, যা একেবারেই অনুচিত। পশুর দৌড়ানোর অভ্যাস না থাকলে এটি তার জন্য মারাত্মক কষ্টকর হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, বাড়ি কাছাকাছি হলে ধীরে হেঁটে আনা উচিত, আর দূরে হলে পিকআপ বা ট্রাকে করে আনা উত্তম। হাটে পশু সাধারণত পর্যাপ্ত খাবার পায় না, তাই বাড়ি আনার পরই তাকে পানি ও খাবার দিতে হবে। পশু রাখার স্থান হতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, স্যাঁতসেঁতে নয়। নিয়মিত গোবর ও ময়লা পরিষ্কার করতে হবে, যাতে পরিবেশ দূষিত না হয়। সম্ভব হলে প্রতিদিন গোসল করানো উচিত, বিশেষ করে কোরবানির দিন সকালে পশুর গায়ের ময়লা পরিষ্কার করে নিতে হবে। শহুরে পরিবেশে মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে মশারি বা কয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে পশুর নাগালের বাইরে রাখতে হবে। পশুর খাদ্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। প্রাপ্ত বয়স্ক গরুর জন্য দৈনিক ৮-১০ কেজি কাঁচা ঘাস, ১০-১৪ কেজি খড় ও ৩-৫ কেজি দানাদার খাবার প্রয়োজন। ছাগলের জন্য ১.৫ থেকে ৩ কেজি দানাদার বা ৪-৫ কেজি পাতা জাতীয় খাবার যথেষ্ট। গরমে পানির সঙ্গে স্যালাইন মিশিয়ে দিলে পশুর ক্লান্তি দূর হবে। তবে কোরবানির আগের রাতে অতিরিক্ত খাবার না দেওয়াই ভালো। জবাইয়ের সময় পশুর প্রতি বিশেষ যত্নবান হতে হবে। ধারালো ছুরি ব্যবহার করতে হবে এবং জবাইয়ের আগেই ছুরি ধার দিয়ে নিতে হবে। একটি পশুর সামনে অন্য পশু জবাই করা নিষিদ্ধ, কারণ এতে জীবিত পশু আতঙ্কিত হয়। জবাইয়ের পর পশু পুরোপুরি নিস্তেজ হওয়ার আগে চামড়া ছাড়ানো উচিত নয়। মনে রাখতে হবে, কোরবানি শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের একটি মাধ্যম। পশুর প্রতি দয়া দেখানোও এই ইবাদতেরই অংশ।

ময়মনসিংহ থেকে

প্যানেল

×