ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুর সিটি নির্বাচন

-

প্রকাশিত: ২০:২৭, ২৭ মে ২০২৩

গাজীপুর সিটি নির্বাচন

সম্পাদকীয়

দেশের সবচেয়ে বড় সিটি করপোরেশন গাজীপুরের নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন জায়েদা খাতুন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা জায়েদা খাতুনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর সিটি করপোরেশনেরই সাবেক মেয়র। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়েই মূলত জাহাঙ্গীর তার মা জায়েদা খাতুনকে প্রার্থী করেন। ঋণখেলাপির জামিনদার হওয়ায় তার প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। পরে আওয়ামী লীগ থেকেও বহিষ্কৃত হন তিনি।
বৃহস্পতিবার ভোটারদের ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (গাসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়াটা স্বস্তিকর অবশ্যই।

বর্তমান সরকারের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে যারা ক্রমাগতভাবে অভিযোগ করে এসেছেন, তাদের মুখ বন্ধ হবে এবারÑ এমনটাই প্রত্যাশা গণতন্ত্রমনাদের। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ভোটে জনপ্রতিনিধি বেছে নেওয়ার বিষয়টি চিরাচরিত। এখানে জোরাজুরি ও অনিয়ম থাকাটাই অপ্রত্যাশিত। অনেকেই আগাম ধারণা পোষণ করেছিল যে, সরকারি দলকে জেতানোর জন্য সরকার পক্ষ নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবে। এটা যে কত বড় ভুল, সেটি আবারও প্রমাণিত হলো। মনে রাখা চাই, সরকার পরিচালনায় রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি। একইসঙ্গে তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলও আওয়ামী লীগ।

দলটির ঐতিহ্য আদর্শ ও নীতি সমুন্নত। এই দল বারবার সরকার গঠন করেছে। দেশের সবচেয়ে বড় দীর্ঘস্থায়ী টেকসই উন্নয়নও সরকারের পরিকল্পনা ও উদ্যোগে সম্পন্ন হয়েছে। সরকারই গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় রক্ষাকবচ এবং মানুষের আশা-আকাক্সক্ষায় আস্থাশীল। তাই এই সরকারের সময়ে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন হবে, এমন একটি সুদৃঢ় বিশ^াস দেশবাসীর হৃদয়ে প্রোথিত!
গাজীপুর সিটি নির্বাচনের প্রতি দৃষ্টি ছিল দেশের সব মানুষের। এতে প্রবীণ যে নারী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন, তিনি সদ্যসাবেক মেয়রের মা এবং সে পরিবারটি বহু বছর আওয়ামী লীগই করে এসেছে। অন্যদিকে, নৌকা প্রতীকে যিনি প্রার্থী হন, তিনিও এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং দলের একজন আস্থাভাজন নেতা। তাই অনেকেই এই নির্বাচনকে একই রাজনৈতিক দল করা দুটি পক্ষের নির্বাচনী যুদ্ধ হিসেবেই দেখেছে। বাস্তবে সেই লড়াইও হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি। কে জেতে কে হারে এমন একটি টানটান উত্তেজনায় পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াটি দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত ভোটগণনায় তিনিই জিতেছেন, যাকে সংখ্যাগুরু এলাকাবাসী চেয়েছে। এখানেই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। গাজীপুর এলাকাবাসী দেশের মানুষের ধন্যবাদ পাবেন এ জন্য যে, তারা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোটে অংশ নিয়েছেন। গণতান্ত্রিক ধারাকে সমুন্নত রাখায় গাজীপুরবাসীর অবদান প্রশংসাযোগ্য। 
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সব কেন্দ্রেই ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হয়। পদ্ধতিটি যে কার্যকর, সেটিও প্রমাণিত হলো। নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতাও ছিল উল্লেখ করার মতো। সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন যে মানুষের অকুণ্ঠ প্রশংসা পাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

×