
ছবি: সংগৃহীত
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিভিন্ন দেশে একযোগে গড়ে ওঠা আন্দোলনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের স্বীকৃতি চেয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার জোট "গ্লোবাল বাংলাদেশিজ অ্যালায়েন্স ফর হিউম্যান রাইটস (GBAHR)"।
বুধবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে প্রবাসীদের জুলাই আত্মত্যাগ নিয়ে রচিত "জুলাই ৩৬: আন্দোলন দেশে দেশে" ও "চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান সিলেট পর্ব: জুলাই-আগস্ট ২০২৪" প্রামাণ্য গ্রন্থদ্বয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ দাবি জানান জিবিএএইচআর (GBAHR)-এর নেতারা। সংগঠনের আহ্বায়ক ও মুখপাত্র, অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয় (এডাস্ট) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান, সুরমা সম্পাদক শামসুল আলম লিটন সম্পাদিত বই দুটিতে উঠে এসেছে—প্রবাসীরা কীভাবে বিভিন্ন দেশে একত্রিত হয়ে ফ্যাসিবাদ রুখতে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন, যা ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে—ছবি ও বর্ণনার মাধ্যমে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, জুলাই শহীদ মীর মুগ্ধ’র বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, "জুলাই আন্দোলন শুধু দেশেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও ছড়িয়ে পড়েছিল, যেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের স্বীকৃতি দিতে হবে—এ দাবি আমারও।" তিনি আরও বলেন, "আগামীতে যেন এমন আন্দোলন আর না করতে হয়, আবু সাঈদ এবং মুগ্ধর মতো সন্তান যেন আর হারাতে না হয়।"
স্বাগত বক্তব্যে মুখপাত্র শামসুল আলম লিটন তরুণদের আগামী বাংলাদেশের নেতৃত্বে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, "প্রবাসীরা যেখানে যেখানে আন্দোলন করেছেন, বিক্ষোভ করেছেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের শপথ নিয়েছেন—সেখান থেকেই দেশ গড়ার নতুন যুদ্ধ শুরু করবে প্রবাসী মানবাধিকার সংগঠনের জুলাই যুদ্ধজয়ী এই জোট।" সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, "আমরা অবদান রেখেছি—স্বীকৃতি দিতেই হবে। আমাদের সংগঠনগুলো বিশ্বাস করত—ফ্যাসিবাদ সরে যাবেই, মানবাধিকার, গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবেই।"
এডাস্ট স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (এসডিআই) পরিচালক ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. এহসানুল হক মিলন বলেন, "স্বীকৃতি প্রবাসীদের কেন চাইতে হলো? দ্রুত স্বীকৃতি দিন।" অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রবাসীদের বীরত্বকে আনুষ্ঠানিক শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানো হয়। শহীদ পরিবারের মর্যাদা এবং প্রবাসীদের মধ্যে যারা হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন, তাদের বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বক্তারা।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জোটের যুগ্ম আহ্বায়ক ব্যারিস্টার জাকির হাসান।
নিজ বক্তব্যে জুলাই আন্দোলনের অভিজ্ঞতা ও ফ্যাসিস্ট সরকারের চিত্র তুলে ধরেন— নির্বাসিত নির্যাতিত বিচারক মোতাহার হোসেন, এবি পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার ফুয়াদ আব্দুল্লাহ, বিলেতের আইনজীবী নাশিত রহমান, ব্যারিস্টার শিবলী সাদিক এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার আমজাদ হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন— এডাস্ট আইন বিভাগের চেয়ারম্যান আ ম মো. সাঈদ, ইইই বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আশিস কুমার ভট্টাচার্য, এগ্রিবিজনেস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোশারফ হোসেন, রোবোটিক্স অ্যান্ড অটোমেশন বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব মাজিদ ইশতিয়াক আহমেদ, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের কো-অর্ডিনেটর জোবায়ের আহমেদ, জিবিএএইচআর সিনিয়র ফেলো রুপম রাজ্জাক, যুগ্ম আহ্বায়ক শিক্ষক ও গবেষক মেজর একেএম জাকির হোসেন (অব.) প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের এক পর্বে যোগাযোগ ও সচেতনতা বৃদ্ধির বিশেষজ্ঞ সাজেদ ফাতেমী সুর ও সংগীতে অনুষ্ঠান মাতিয়ে তোলেন। নকশী কাঁথার গানের মূর্ছনায় শেষ হয় অনুষ্ঠান।
আসিফ