
ছবি: সংগৃহীত
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের (১৬ ব্যাচ) শিক্ষার্থী এ আর ধ্রুব ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তার বাড়ি রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলায়।
শুক্রবার (২৩ মে) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণের বিষয়টি জানান। ধর্মান্তরিত হওয়ার পর তার নাম পরিবর্তন করে আব্দুর রহমান ধ্রুব রাখা হয়েছে। ঢাকা দায়রা জজ আদালতে হলফনামার মাধ্যমে তিনি তার নাম পরিবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছেন।
হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন, “আমি জন্মসূত্রে বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক এবং আমি আইনত যেকোনো হলফ করার উপযুক্ত। আমি একজন প্রাপ্তবয়স্ক। আমি আমার বর্তমান ও ভবিষ্যত জীবনের যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম ও ক্ষমতাবান। আমি জাতিতে হিন্দু ধর্মালম্বী ছিলাম। যদিও হিন্দু গোত্রে আমার জন্ম হয়েছে, তবে আমি স্কুলে অধ্যয়নকাল থেকেই হিন্দু ধর্মের প্রতি অনীহা অনুভব করি এবং ইসলাম ধর্মের প্রতি আনুগত্য ও বিশ্বাস সৃষ্টি হয়। আমি হিন্দু পরিবারের সন্তান হয়েও আমার অনেক মুসলমান বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে অধিক ওঠাবসা ও চলাফেরা করেছি, ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অব্যাহত যাতায়াত করেছি, ফলে হিন্দু ধর্মের সঙ্গে আমার কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়। হিন্দু ধর্মের নিয়ম-কানুন আমার নিকট ভালো লাগে না। আমি ইসলামি ও হিন্দু ধর্মের বই-পুস্তক পড়ে অনেক ভেবে চিন্তে দেখেছি যে, ইসলাম ধর্ম হলো একটি পূর্ণাঙ্গ ইহকাল ও পরকালের ধর্ম, ইসলাম ধর্মের মধ্যে পার্থিব শান্তি ও কল্যাণ রয়েছে।”
ধ্রুব তার দীর্ঘ আত্মঅনুসন্ধান ও মানসিক সংগ্রামের কথা শেয়ার করে জানান, তিনি ঢাকা দায়রা জজ আদালত থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৩ তারিখে ইসলাম গ্রহণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। তার এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সংবিধানসম্মত অধিকার বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “যারা সত্য খুঁজছেন, আমি শুধু বলব—একবার কুরআন পড়ুন খোলা মন নিয়ে। সত্য চাইলে, নিশ্চয়ই আল্লাহ পথ দেখাবেন। আমি সেই পথেই শান্তি পেয়েছি।”
ধ্রুব আরও জানান, বহুদিন ধরে তিনি মানসিক বিষণ্নতায় ভুগছিলেন এবং জীবনের নানা সংকটে পড়েছিলেন। সেই সময়গুলোতে তিনি একাধিকবার জীবনের আশা হারিয়ে ফেললেও, প্রতিবারই এক অদৃশ্য শক্তি তাকে রক্ষা করেছে বলে জানান। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি ধর্ম ও সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করতে শুরু করেন, যার উত্তর তিনি ইসলাম ধর্মে খুঁজে পান।
তিনি আরও বলেন, “আমি একসময় বহু দেব-দেবীতে বিশ্বাস করতাম, কিন্তু গভীরভাবে শান্তি খুঁজে পাইনি। কুরআন পড়েই আমি প্রথম সেই প্রশ্নগুলোর জবাব পেয়েছি—কেন জন্মেছি, জীবনের উদ্দেশ্য কী?”
নিজের পরিবার ও পরিচিতজনদের উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম করা পোস্টটিতে ধ্রুব বলেন, “আমি জানি, সবাই এই সিদ্ধান্ত সহজভাবে নেবে না। তবে আমি চাই, আপনারা অন্তত একবার কুরআন পড়ুন—তর্কের জন্য নয়, সত্য জানার জন্য।”
এসইউ