
ছবিঃ সংগৃহীত
আত্রাই নদীর ওপর ভারতের নির্মিত বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাটের কাছে অবস্থিত এই বাঁধটি ভেঙে পড়ে ২০ মে সকালে, যখন নদীতে পানির প্রবল চাপ সৃষ্টি হয়। স্থানীয় সূত্র জানায়, বাঁধের মেরামতকৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ধসে পড়েছে, যা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে চরম উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
মাত্র চার মাস আগে ভারতের পক্ষ থেকে আত্রাই নদীর উপর এই বাঁধ নির্মাণ করা হয়, যার ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৩০ কোটি টাকা। উদ্দেশ্য ছিল, বন্যার পানি নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু বর্ষার শুরুতেই টানা বৃষ্টিপাতে নদীর জলস্তর বেড়ে গেলে বাঁধটি চাপ সহ্য করতে না পেরে ধসে পড়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধের মেরামতের কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়নি, ফলে দুর্বল অংশ থেকেই ফাটল ধরতে শুরু করে এবং শেষ পর্যন্ত তা ভেঙে পড়ে।
পশ্চিমবঙ্গের একাধিক গ্রামে ইতোমধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, যদি দ্রুত কোনও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে পুরো বাঁধটি ধসে পড়ে পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে পড়তে পারে।
এই আত্রাই নদী ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ফলে ভারতের অংশে হঠাৎ পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সরাসরি প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ইতোমধ্যে নেত্রকোনা, শেরপুর, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলায় নদ-নদীর পানি বাড়ছে। শেরপুরের চেল্লাখালি নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে বলে জানা গেছে। টানা বর্ষণ ও ভারতের মেঘালয়, আসাম রাজ্যে ভারী বৃষ্টির ফলে উজান থেকে নেমে আসা পানি এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তুলতে পারে।
বিগত বছর ভয়াবহ বন্যার ক্ষত এখনো শুকায়নি বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে। বিশেষ করে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, ও শেরপুরে নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতে আবারও নতুন করে বন্যার পূর্বাভাসে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করেছেন।
বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর ও স্থানীয় প্রশাসনকে জরুরি ভিত্তিতে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পানির প্রবাহ ও বন্যা পরিস্থিতির ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
ইমরান