ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে বাজেটে কর বৃদ্ধির দাবি

প্রকাশিত: ১৭:০৮, ২১ মে ২০২৫

তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে বাজেটে কর বৃদ্ধির দাবি

ছবি: সংগৃহীত

তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে তামাকপণ্যের কর ও মূল্য বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন তামাকবিরোধী আন্দোলনকারীরা, গণমাধ্যমকর্মী ও নীতিনির্ধারকরা। বুধবার (২১ মে) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে তামাকপণ্যের মূল্য ও কর বৃদ্ধি এবং তামাক করনীতি সংস্কার’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে এ দাবি জানানো হয়।

ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুওর (ডর্‌প)-এর উদ্যোগে আয়োজিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও এইচএম নোমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ আখতারুজ্জামান, যুগ্মসচিব ও মহাপরিচালক, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এবং হোসেইন আলী খন্দকার, সাবেক অতিরিক্ত সচিব, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব মুন্সী আলাউদ্দীন আল আজাদ। উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, বর্তমানে সিগারেটের নিম্ন ও মধ্যম স্তরের দামের মধ্যে পার্থক্য কম হওয়ায় ধূমপায়ীরা সহজেই স্তর পরিবর্তন করে ধূমপান চালিয়ে যেতে পারে। এই প্রবণতা রোধে নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেট একীভূত করে প্রতি ১০ শলাকার খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণের দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে উচ্চ স্তরের জন্য ১৪০ টাকা এবং প্রিমিয়াম স্তরের জন্য ১৯০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ডর্‌প-এর উপ নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান বলেন, সিগারেটের খুচরা মূল্যের উপর ৬৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখা উচিত। বিড়ির ক্ষেত্রেও ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকার দাম ২৫ টাকা এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকার দাম ২০ টাকা করে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের দাবি জানানো হয়। এছাড়া জর্দা ও গুলের ওপর যথাক্রমে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়।

জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সিগারেটের চারটি মূল্যস্তরের কারণে তামাক করনীতি কার্যকরভাবে কাজ করছে না। বিশেষত নিম্ন ও মধ্যম স্তরের দামের ব্যবধান কম থাকায় ভোক্তারা সহজেই বিকল্প সিগারেটে চলে যেতে পারেন। বাজেটে এই দুই স্তর একীভূত করে দাম বাড়ানো হলে তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী ধূমপান থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত হবে।

বিডিআর তদন্ত কমিশনের সদস্য মুন্সী আলাউদ্দীন আল আজাদ বলেন, প্রস্তাবিত করনীতি বাস্তবায়িত হলে দেশের সিগারেট ব্যবহার ১৫.১ শতাংশ থেকে কমে ১৩.০৩ শতাংশে নেমে আসবে। এতে প্রায় ২৪ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপান ত্যাগে উৎসাহিত হবেন এবং ১৭ লক্ষ তরুণ ধূমপান শুরু করা থেকে বিরত থাকবে। পাশাপাশি প্রায় ৮.৬ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক ও ৮.৭ লক্ষ তরুণের অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে। আর সরকারের অতিরিক্ত ২০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় হবে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেশি।

এছাড়া অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ২০২৫ সালের বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পুরস্কার অর্জন করায় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়। এনবিআরের প্রতিনিধি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মো. তারেক হাসান, প্রথম সচিব (করনীতি)।

ফারুক

×